দেশে গত ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকে আটার দাম লাফিয়ে বাড়ছে। বাংলাদেশের গমের বড় উৎস ছিল রাশিয়া ও ইউক্রেন। ভারত থেকেও আমদানি বাড়ছিল। যদিও ভারত রপ্তানিতে বিধিনিষেধ আরোপ করে। বিশ্ববাজারে দামও বাড়তি।
দেশে গম আমদানিও কম হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, এ কারণে অক্টোবরের শেষ দিকে আটার মিলগুলো থেকে সরবরাহ কমে যায়। এখন সরবরাহ পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতির দিকে। তবে দাম বাড়ছে। গত অক্টোবর মাসেও প্রতি দুই কেজির আটার প্যাকেটের সর্বোচ্চ মূল্য ছিল ১২৬ টাকা। এখন সেটা সর্বোচ্চ ১৪৪ টাকা।
দেশের ছয়-সাতটি কোম্পানি প্যাকেটজাত করে বিভিন্ন ব্র্যান্ড নামে বাজারে আটা বিক্রি করে। গতকাল সোমবার বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তিনটি কোম্পানি নতুন দরে আটা বাজারে ছেড়েছে। এর মধ্যে একটি কোম্পানির প্যাকেটে দেখা যায় উৎপাদনের তারিখ লেখা ৮ নভেম্বর।
রাজধানীর মোহাম্মদপুর টাউন হল বাজারের রাফি স্টোরের নুর ইসলাম বলেন, বাজারে খোলা আটার সংকট এখনো কাটেনি। এর মধ্যে প্যাকেটজাত আটার দাম আবার বাড়তি।
ভোজ্যতেল বিপণনকারী কোম্পানিগুলো বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে লিটারপ্রতি সয়াবিনের দাম ১৫ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে। যদিও তা এখনো অনুমোদন পায়নি। এর মধ্যে লিটারপ্রতি খোলা সয়াবিনের দাম ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে। বাজারে খোলা সয়াবিন তেল ১৭৫ থেকে ১৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। কোম্পানিগুলো বোতলজাত সয়াবিন তেল সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে বলে দাবি করছেন খুচরা বিক্রেতারা।
বোতলজাত সয়াবিন তেলের লিটারপ্রতি নির্ধারিত দর ১৭৮ টাকা, যদিও তা ১৮৫-১৯০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
কোম্পানিগুলো বলছে, গ্যাস-বিদ্যুৎ সংকটের কারণে কারখানা পুরোদমে চালানো যাচ্ছে না। এ কারণে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের (এমজিআই) জ্যেষ্ঠ মহাব্যবস্থাপক এস এম মুজিবুর রহমান বলেন, পুরোদমে কারখানা চালাতে না পারলে উৎপাদন খরচ বেশি পড়ে।
বাজারে এখন চাল, ডাল, আটা, তেল, চিনিসহ প্রায় সব পণ্যের দামই চড়া। মিনিকেট নামের বহুল প্রচলিত যে চাল পাওয়া যায়, তার দাম ৬৫ থেকে ৭২ টাকার মধ্যে। সেই হিসেবে উচ্চমূল্যের এই সরু চালের দামের সমান হয়ে গেছে প্যাকেটজাত আটার দাম।
রাজধানীর তেজগাঁও এলাকার গৃহিণী আনোয়ারা খাতুন বলেন, তাঁর শাশুড়ি ডায়াবেটিসের রোগী। তাঁর জন্য দুবেলা রুটি বানাতে হয়। এখন সংসারের খরচ কমাতে বাধ্য হয়ে তিনি খোলা আটা কিনছেন।