আজমীর শরীফের নিচে মন্দির থাকার দাবি, খতিয়ে দেখতে বলল আদালত

0
3
ভারতের বিখ্যাত আজমীর শরীফ
ভারতের বিখ্যাত আজমীর শরীফের নিচে মন্দির আছে এমন দাবি করে আদালতে পিটিশন দায়ের করেছে হিন্দুত্ববাদী সংগঠন হিন্দু সেনা।
 
বুধবার (২৭ নভেম্বর) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত সেপ্টেম্বরে এই পিটিশন দায়ের করার পর আজমীরের একটি আদালত দাবিটি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন।
 
আজমীর শরীফ নিয়ে পিটিশন দায়ের করা উগ্রপন্থি শিব সেনার প্রধান নেতা বিষ্ণু গুপ্ত বলেন, আমাদের দাবি হলো আজমীর শরীফকে ‘সংকট মোচন মহাদেব’ মন্দির হিসেবে ঘোষণা করতে হবে। যদি দরগার কোনো ধরনের রেজিস্ট্রেশন থাকে সেটি বাতিল করতে হবে। ভূতত্ত্ব জরিপ সংস্থাকে দিয়ে জরিপ করাতে হবে এবং হিন্দুদের সেখানে পূজা করার অধিকার দিতে হবে।
 
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পিটিশন দায়ের করা ব্যক্তিরা দাবি করেছে সূফি সাধক মইনউদ্দিন চিশতির দরগা যা আজমীর শরীফ হিসেবে পরিচিত, সেখানে একটি শিব মন্দির রয়েছে। তাই আজমীর শরীফে আবারও পূজা করার অনুমতি প্রদানের দাবি জানিয়েছেন তারা।
 
পিটিশনারদের আইনজীবী যোগেশ শিরোজা জানিয়েছেন, দেওয়ানি বিচারক মনমোহন চান্দেল এ ব্যাপারে আজমীর দরগাহ কমিটি, সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় ও ভারতীয় ভূতত্ত্ব জরিপ সংস্থার নয়াদিল্লি অফিসকে নোটিশ প্রদান করেছেন। তাদের সবাইকে নিজ নিজ জবাব দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। আদালতে দায়ের করা পিটিশনে ১৯১১ সালে অবসরপ্রাপ্ত বিচারক হর্বিলাস সার্দার লেখা একটি বইয়ের উদ্ধৃতি দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, আজমীর শরীফের চারপাশে হিন্দু ধর্মের মৃৎশিল্প ও খোদাই রয়েছে।
 
তবে, ওই বইয়ে দাবি করা হয়েছিল শিব মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ দিয়ে আজমীর শরীফ তৈরি করা হয়েছে। এবং দরগাটির সবচেয়ে পবিত্রতম জায়গায় এখনও একটি জৈন মন্দির রয়েছে। তবে দরগাহ কমিটি এই দাবি অস্বীকার করেছে। তারা জানাং, এখানে আফগানিস্তান থেকে শুরু করে ইন্দোনেশিয়াসহ সব ধর্ম বর্ণের মানুষ আসেন। এখানে বহুতত্ববাদ প্রচার হয়।
 
প্রসঙ্গত, মাত্র দুইদিন আগে উত্তরপ্রদেশের সামভালে মসজিদের নিচে মন্দির থাকার দাবি নিয়ে ব্যাপক সংঘর্ষে তিন মুসলিমকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। মুঘল আমলের ওই জামে মসজিদকে ঘিরে ব্যাপক উত্তেজনা দেখা দেয়। মসজিদটি যেখানে তৈরি করা হয়েছে সেখানে আগে মন্দির ছিল এমন দাবি করে আদালতের দারস্থ হয়েছিলেন হিন্দুত্ববাদী বেশ কয়েকজন ব্যক্তি। এরপর আদালত তাদের পিটিশনের ভিত্তিতে সেখানে জরিপ চালানোর নির্দেশ দিয়েছিল।
 
রোববার (২৪ নভেম্বর) সকালে জরিপ চালাতে গিয়েছিল একটি দল। কিন্তু তাদের জরিপ চালাতে বাধা দেন সেখানকার মুসল্লিরা। তারা পুলিশ ও জরিপকারী দলের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। এরপর তাদের ওপর গুলি চালিয়ে নাঈম, বিলাল এবং নোমান নামের তিন মুসলিমকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে পুলিশ।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.