পানের ওপর বাহারি মসলা। তাতে আগুন ধরিয়ে গ্রাহকের মুখে পুরে দিচ্ছেন পানবিক্রেতা। এই পানের নামই আগুন পান। ওই পান মুখে পুরে দিব্যি চিবিয়ে চলেন ওই ব্যক্তি। রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় এমন দৃশ্য দেখা যায়। সেখানে হরেক রকম পানের সঙ্গে আগুন পানও পাওয়া যায়। মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, আগুন থাকা সত্ত্বেও কেন আগুন পানে মুখ পোড়ে না? উত্তর মিলল এই এলাকায় পানের পসরা সাজিয়ে বসে থাকা বিক্রেতাদের কাছেই।
যে কৌশলে পানপাতাটি ভাঁজ করে মুখে পুরে দেন তাঁরা, তাতে ত্বক বা মুখের ভেতরের অংশ আগুনের সংস্পর্শে আসে না। তা ছাড়া আগুন প্রজ্বলিত থাকতে প্রয়োজন অক্সিজেন। কিন্তু মুখ থেকে নিশ্বাসের মাধ্যমে যে বাতাস বের হয়, তাতে থাকে কার্বন ডাই অক্সাইড। তাই আগুন প্রজ্বলিত থাকার কোনো সুযোগই নেই।
বাহারি উপকরণ
সিমরান মহেশখালী সাঁচি মিষ্টি পানের স্বত্বাধিকারী বিপ্লব হোসেন বলছিলেন, আগুন পানের জন্য ‘ফায়ার সেন্ট’ ব্যবহার করেন তিনি। সাধারণ মসলা, ভারতীয় মসলা এবং পাকিস্তানি মসলায় আলাদা স্বাদের আগুন পান তৈরি করেন। তিনি জানান, ভারতীয় ও পাকিস্তানি মসলায় তৈরি আগুন পান বেশি জনপ্রিয়।
ছোটন মামা আগুন পানের স্বত্বাধিকারী ছোটন জানালেন, আগুন পান তৈরির সময় পানের ওপর মসলাজাতীয় উপকরণ ছাড়াও বিশেষ তরল ব্যবহার করা হয়। আগুন দেওয়ায় পানের স্বাদ বাড়ে। আগুন পানে মুখ না পোড়ার কারণ হিসেবে পানবিক্রেতার হাতের কৌশলের কথাই জানালেন তিনি।
সাবধানতা
আগুন পান মুখে দেওয়ার সময় মুখ সরিয়ে নিলে, এগিয়ে বা পিছিয়ে গেলে ঠোঁট বা নাক পুড়ে যেতে পারে। তাই পান মুখে দেওয়ার সময় হঠাৎ ভয় পেয়ে এমন আচরণ করা থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিলেন সাঈদ মামা আগুন পানের স্বত্বাধিকারী মো. সাঈদ। বরং ভালোভাবে বড় করে মুখ হাঁ করতে হবে বলে জানালেন তিনি। তা ছাড়া ভিডিওতে বা সামনাসামনি পান বিক্রেতাকে দেখে আগুন পান বানানো এবং তা মুখে দেওয়ার কৌশল দেখে নিজে নিজে চেষ্টা করতে যাওয়াও উচিত না। নিরাপদে কাজটি করার কৌশলগত দিকগুলো আপনার জানা না থাকলে মুহূর্তেই ঘটে যেতে পারে দুর্ঘটনা।
আগুন পানের স্বাদ নিতে চাইলে
আগুন পান খেতে চাইলে যেতে পারেন রাজধানীর মোহাম্মদপুরের শাহজাহান রোড এলাকায়। মুস্তাকিম ভ্যারাইটিজ কাবাব অ্যান্ড স্যুপের দোকানগুলোর সামনেই পেয়ে যাবেন পানের ছোট্ট দোকানের সারি। চাইলে এখান থেকে যেকোনো অনুষ্ঠানে আগুন পান বানিয়ে দেওয়ার ফরমাশও দিতে পারেন।