কীভাবে কাটছে বিশেষ দিনটি?
দিনটি নিয়ে বিশেষ কোনো আয়োজন নেই। কারণ, আমি আজকের দিনটিতেও মহড়ায় আছি। সামনের মাসে সাত-আট পর্বের একটি ওয়েব সিরিজের শুটিং শুরু হবে। সিরিজের নাম, পরিচালকের নাম এখনই বলতে চাচ্ছি না। কাজটির প্রস্তুতি নিতে এখন মহড়া করছি। দুপুর ১২টায় শুরু হয়েছে, সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত চলবে। এরপর হয়তো সহকর্মীরা মিলে কেক কাটা হতে পারে, এতটুকুই।
বিশেষ দিনটিতেও কাজ হাতে রেখেছেন?
শুধু এবারই নয়, পাঁচ বছর ধরেই আমার জন্মদিনটি আলাদা করে উদ্যাপন করা হয় না। হয় শুটিং, না হয় অন্য কোনো কাজের মধ্যে থাকতে হয়েছে আমাকে। মাঝে এক বছর জন্মদিনে হাসপাতালে ছিলাম। ওই বছর আমার ডেঙ্গু হয়েছিল। তার মানে গত চার বছরই জন্মদিন কাজ ছাড়া কাটানো হয়নি।
‘হাওয়া’ মুক্তির প্রায় দেড় বছর পর শুটিংয়ে ফিরছেন। এত সময় নিলেন কেন?
হ্যাঁ, প্রায় দেড় বছর পর ক্যামেরার সামনে দাঁড়াতে যাচ্ছি। তবে মাঝের সময়টি আমি বসে ছিলাম না। যে কাজটি শুরু করতে যাচ্ছি বা রিহার্সাল করছি, কাজটিসহ আরও দু-তিনটি কাজের প্রস্তুতি নিয়েছি। এসব কাজের ডেভেলপমেন্টের জন্য সময় দিয়েছি। আগামী বছরের কাজগুলোর জন্যও এই সময়টার মধ্যে শিডিউল তৈরি করেছি। সামনের কাজটি শেষ হলে তার পরপরই শিডিউল করা বাকি কাজ শুরু হবে। বলতে পারেন সামনের মাস থেকে আগামী বছর টানা কয়েকটি কাজ করব।
আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে বেশির ভাগ শিল্পীই সময় করে প্রস্তুতি নিয়ে, ছক করে কাজ করেন না। সেই ক্ষেত্রে আপনি ব্যতিক্রম মনে হচ্ছে।
যেকোনো কাজ প্রস্তুতি নিয়ে শুরু করলে ওই কাজ ভালো হয়। আর আমি প্রস্তুতি ছাড়া একদমই কাজ করতে পারি না, করিও না। আমি এ পর্যন্ত যে কটি কাজ করেছি, দীর্ঘ প্রস্তুতি নিয়েই করেছি। সেই ‘আইসক্রিম’ থেকে শুরু করে ‘হাওয়া’ সিনেমা দীর্ঘ প্রস্তুতির ফসল। এই যে দীর্ঘ প্রস্তুতি নিয়ে কাজগুলো করেছি, তার ফলও আমি দর্শকদের কাছ থেকে পেয়েছি। ‘হাওয়া’ মুক্তির পর শুটিংয়ের আগে প্রস্তুতি নেওয়ার বিষয়টি মাথায় আরও বেশি কাজ করে। গল্প শোনা, চিত্রনাট্য পড়া থেকে শুরু করে শুটিংয়ের আগে দু–তিন সপ্তাহ ধরে সহশিল্পীদের সঙ্গে রিহার্সাল করা এখন আমার কাছে বাধ্যতামূলক মনে হয়। মনে হয়, প্রস্তুতি ছাড়া ক্যামেরার সামনে আমি কাজ করতে পারব না। প্রস্তুতি নিয়ে ক্যামেরার সামনে দাঁড়ালে কাজটি সহজ হয়, চরিত্রটি ভাঙাগড়া করা যায়। এটি মনেপ্রাণে বিশ্বাসও করি। এভাবে কাজ করাটা উপভোগ করি আমি।
‘হাওয়া’ সিনেমায় দর্শকের প্রশংসা পেয়েছেন, বেশ কয়েকটি পুরস্কারও জিতেছেন…
এখনো সেই সফলতার বার্তা পাই। বলতে পারেন, এখনো ‘হাওয়া’ ছবির সফলতা আমাকে ঘিরে রেখেছে। আমি কোথাও ঘুরতে গেলে, যদি আমার নাম না–ও জানে, বলে ওই যে ‘হাওয়া’র নায়িকা। বলে ওই যে গুলতি। চরিত্রের নাম ধরে দর্শক যখন আমাকে ডাকেন, বিষয়টি ভালো লাগে। যেমন আজ জন্মদিন, অনেকেই লিখেছেন, ‘হ্যাপি বার্থ ডে গুলতি। গুলতির জন্য শুভ কামনা। গুলতির চেয়ে আরও শক্তিশালী চরিত্রে আপনাকে দেখতে চাই।’ এসব আমাকে বেশি আনন্দ দেয়। চরিত্রের নামে যখন সম্বোধন করেন, তখন যেকোনো শিল্পীকেই বিষয়টি আনন্দ দেয়, নিজের মধ্যে মিষ্টি অনুভূতি হয়।
‘হাওয়া’ মুক্তির পর ওটিটিতে কাজ করতে যাচ্ছেন, বড় পর্দা মিস করছেন না?
তা তো কিছুটা করছিই। তবে এই দেড় বছরের মধ্যে যে কাজগুলো করার জন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছি, শিডিউল তৈরি করেছি, তার মধ্যে বড় পর্দার কাজও আছে। সেই সুসংবাদ আগামী বছরই দিতে পারব। ওয়েব সিরিজটির কাজ শেষ হলে সিনেমার কাজ শুরু হতে পারে। সিনেমা লার্জার দেন লাইফ। বড় পর্দায় সিনেমা মানুষ বেশি দেখে। সিনেমা বেশি গণমানুষের কাছে পৌঁছায়।
আপনি নাটকে কাজ করবেন না?
২০১৪ সালে লাক্স তারকা হয়েছিলাম। ২০১৬ সালে ‘আইসক্রিম’ সিনেমা করলাম। লেখাপড়ার জন্য মাঝে তিন বছর বিরতি নিয়েছিলাম। বলতে গেলে নিয়মিত কাজ শুরু করি ২০১৯ সালে। আমি শুরু থেকেই নাটক করি না। প্রথমেই আমি সিনেমায় নিজেকে ফোকাস করার চেষ্টা করেছি। সিনেমায় প্রস্তুতি নিয়ে কাজের ব্যাপার থাকে। তা ছাড়া মিডিয়ায় সবারই সিনেমায় কাজের ইচ্ছা থাকে, স্বপ্ন থাকে। সেই আগ্রহটা আমার শুরু থেকেই ছিল। নাটক করি না। কারণ, নাটকে অল্প সময়ে অনেকগুলো দৃশ্য করতে হয়। অল্প সময়ে কাজটি করতে অনেক কষ্ট করতে হয়, শ্রম দিতে হয়। নাটকের মানুষ, অনেক পরিশ্রমী, মেধাবী। কিন্তু আমি পারি না, করি না। কারণ, ওই মেধা, সাধ্য আমার নেই। যে কারণে আমি মিডিয়ায় এসে প্রথমেই বুঝে নিয়েছি যে ওই জায়গা আমার না। নাটকে ধাপ ধাপ করে শুটিং করে ভালো মানের কাজ তৈরি করা চাট্টিখানি কথা নয়। যাঁরা করছেন, তাঁদের আমি স্যালুট করি। আমি একটু ধীর মানুষ, আরাম করে সময় নিয়ে কাজ করতে আমার ভালো লাগে। যেটি নাটকের বাজেটে সম্ভব নয়।