আগামী পাঁচ বছর এযাবৎকালের সবচেয়ে উষ্ণতম সময় পার করতে পারে বিশ্ব। এই সময়ের মধ্যেই বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে আটকে রাখার যে লক্ষ্য, সেই সীমাও ছাড়িয়ে যেতে পারে। জাতিসংঘের আবহাওয়াবিষয়ক সংস্থা ডব্লিউএমও এ সতর্কবার্তা দিয়েছে।
বিশ্বে এযাবৎকালের সবচেয়ে উষ্ণ যে আট বছর রেকর্ড হয়েছে, সেগুলো সবই ২০১৫ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে। বৈশ্বিক তাপমাত্রা আরও বাড়ার পূর্বাভাস দেওয়া হচ্ছে। ডব্লিউএমও বলেছে, ‘আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে কমপক্ষে একটি বছর এবং সব মিলিয়ে এই পাঁচ বছর সময়কাল সবচেয়ে উষ্ণ হবে।’ সংস্থাটি বলেছে, ২০২৩–২০২৭ সালের মধ্যে অন্তত একটি বছরে বিশ্বের ভূপৃষ্ঠের বার্ষিক তাপমাত্রা শিল্পায়নপূর্ব সময়ের চেয়ে দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি হবে।
২০১৫ সালে হওয়া প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে চলতি শতকের শেষ নাগাদ বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশ কম, সম্ভব হলে দেড় ডিগ্রির মধ্যে আটকে রাখতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের বিষয়ে মতৈক্য হয়। বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির এই হিসাব হবে ১৮৫০ থেকে ১৯০০ সালের মধ্যকার গড় তাপমাত্রার তুলনায় দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত বছর বৈশ্বিক গড় তাপমাত্রা ছিল ১৮৫০ থেকে ১৯০০ সালের মধ্যকার গড় তাপমাত্রার চেয়ে ১ দশমিক ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি।
ডব্লিউএমওর প্রধান পেটেরি তালাস বলেছেন, আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে কোনো এক বছর বিশ্বের ভূপৃষ্ঠের তাপমাত্রা বৃদ্ধি দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যাওয়ার অর্থ এটা স্থায়ী রূপ পাচ্ছে তা নয়। তবে অস্থায়ীভাবে এ ধরনের ঘটনা বাড়ার বিষয়ে ডব্লিউএমও সতর্ক করছে। তিনি বলেছেন, আগামী কয়েক মাসের মধ্যে আবহাওয়ায় এল নিনো (উষ্ণ সামুদ্রিক স্রোত) প্রভাব শুরু হতে যাচ্ছে। এর সঙ্গে মানুষের নানা কর্মকাণ্ডে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বাড়ছে। স্বাস্থ্য, খাদ্যনিরাপত্তা, পানি ব্যবস্থাপনা ও পরিবেশের ওপর এর সুদূরপ্রসারী প্রভাব পড়বে। এ পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে।
আবহাওয়ায় এল নিনো সক্রিয় থাকলে মধ্য ও পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে উষ্ণতা বাড়ে। সাধারণত প্রতি দুই থেকে সাত বছরের মাথায় আবহাওয়ায় এ পরিস্থিতি বিরাজ করে। এর প্রভাবে আগামী বছর উষ্ণতা বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।