আইপিএল থেকে সরে আক্ষেপ নেই সাকিবের

0
204
সোমবার মিরপুরে অনুশীলন শেষে ড্রেসিং রুমে ফিরছেন সাকিব, লিটন ও মুশফিক বিসিবি

শেষ পর্যন্ত আইপিএল থেকে সরেই গেলেন সাকিব আল হাসান। কলকাতা নাইট রাইডার্সের (কেকেআর) অনুরোধ আর আর্থিক লাভক্ষতির যোগ বিয়োগ শেষে তিনি দেশেই থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানা গেছে। কলকাতার একটি এজেন্ট জানায়, ভারতের টি২০ লিগ থেকে সরে দাঁড়ানোর বিষয়টি কেকেআরকে ই-মেইলে নিশ্চিত করেন সাকিব।

এ ব্যাপারে বাঁহাতি এ অলরাউন্ডারের মোবাইলে কল করে আর হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা দেওয়া হলেও উত্তর পাওয়া যায়নি। তবে জাতীয় দল নির্বাচক প্যানেলের একজন সদস্যকে সাকিব বলেছেন, বিসিবি অনাপত্তিপত্র না দেওয়ায় তাঁর কোনো আক্ষেপ নেই। শুধু ছোট্ট করে বলেছিলেন, ‘দিলে ভালো হতো, দেয়নি অসুবিধা নেই।’

অনাপত্তিপত্র পেয়েছেন লিটন, কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে খেলতে পারেন তিনি

৩৬ বছর, বয়স বিবেচনায় সাকিবের শেষ আইপিএল হতে পারত এটি। এ কারণে লিগের প্রথম থেকে খেলতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট ম্যাচ থাকায় অনাপত্তিপত্র দেয়নি বিসিবি। এ নিয়ে বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনকেও বিশেষ অনুরোধ জানাননি সাকিব।

সাকিব-লিটন দুজনকেই নিয়েছে কেকেআর। বিসিবির পরিকল্পনা অনুযায়ী ৮ এপ্রিলের পরে অনাপত্তিপত্র কার্যকর হবে দুজনের। ২৫ দিনের মতো আইপিএলে থাকতে পারতেন তাঁরা। কারণ ইংল্যান্ডের মাঠে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজটি হবে ৯ মে থেকে ১৪ মে পর্যন্ত। এর আগে ৫ মে একটি অনুশীলন ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। যার অর্থ ৩ মের মধ্যে সাকিব আর লিটনকে ইংল্যান্ডে যেতেই হবে। আর আইপিএল শেষ হবে ২৮ মে। অর্থাৎ ৮ এপ্রিল থেকে ২ মে, আবার ১৫ মে থেকে ২৮ মে পর্যন্ত আইপিএলে খেলার সুযোগ ছিল সাকিবের। কিন্তু এভাবে ভেঙে ভেঙে বিদেশি ক্রিকেটার রাখতে চায় না কেকেআর।

দলটির কর্মকর্তারা আশা করেছিলেন বাংলাদেশি এ দুই ক্রিকেটারকে আরও বেশি সময় পাওয়া যাবে। বিসিবির শক্ত অবস্থানের কারণে সেটা সম্ভব না হওয়ায় সাকিব-লিটনকে কেকেআর থেকে অনুরোধ করা হয়েছিল স্বেচ্ছায় সরে দাঁড়াতে। ফ্র্যাঞ্চাইজির প্রস্তাবে সাকিব রাজি হলেও লিটনের বিষয়টি ঝুলে রয়েছে। উইকেটরক্ষক এ ব্যাটার বিসিবি থেকে অনাপত্তিপত্রও নিয়ে রেখেছেন। টেস্ট শেষ করেই ভারতে বিমান ধরতে পারেন। লিটন-মুস্তাফিজ অনাপত্তিপত্র নিলেও সাকিব নেননি।

মূলত আর্থিক লাভ-ক্ষতির পাশাপাশি শারীরিক ও মানসিক চাপের বিষয়টিও সিদ্ধান্ত নিতে সাকিবকে প্রভাবিত করেছে বলে জানান ক্রিকেটের এক কর্মকর্তা। আইপিএলে গেলে ছয় থেকে সাতটি ম্যাচে দলের সঙ্গে থাকা হতো সাকিবের। ম্যাচ না খেলে রিজার্ভ বেঞ্চে থাকলে যে টাকা পাবেন, তার চেয়ে বেশি পাবেন জাতীয় দল ও ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে (ডিপিএল) খেলে। বোনাস হিসেবে থাকছে চাপমুক্ত থাকতে পারা। নিয়মিত সময় দিতে পারবেন বিজ্ঞাপনী কাজেও।

গতকাল টিম হোটেল বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন, ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান জালাল ইউনুসকে সাকিব জানান, আইপিএলকে না করে দিয়েছেন তিনি। একটি সূত্র থেকে জানা গেছে, জালাল ইউনুসের কাছে আইপিএলে না যাওয়ার কারণও বলেছেন টেস্ট অধিনায়ক। যদিও ফোনে যোগাযোগ করা হলে জালাল ইউনুসকে পাওয়া যায়নি।

সাকিব নিজের সিদ্ধান্তে অটল থাকলে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট শেষ করে মোহামেডানের হয়ে লিগের ম্যাচ খেলবেন। মোহামেডান ক্রিকেট কমিটির সহসভাপতি এ জি এম সাব্বির বলেন, ‘সাকিব ৮ এপ্রিল ম্যাচ খেলবেন এটা নিশ্চিত। আইপিএলে না গেলে বাকি ম্যাচ খেলবেন।’

সাধারণত আইপিএলের নিয়ম অনুযায়ী ফ্র্যাঞ্চাইজি চুক্তিবদ্ধ ক্রিকেটারকে এমনিতে বাদ দিতে পারে না। শুধু চোট বা ক্রিকেটার স্বেচ্ছায় সরে দাঁড়ালে বিকল্প নিতে পারবে তারা।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.