অ্যান্টিবায়োটিক বা কেমিক্যাল ছাড়াই ব্রণ থেকে মুক্তি পাওয়ার ৬ উপায়

0
56
ব্রণ থেকে মুক্তি

বয়ঃসন্ধিকালের সমস্যা হিসেবে পরিচিত হলেও ব্রণ এখন প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যেও ব্যাপক হারে দেখা যায়। প্রচলিত অ্যান্টিবায়োটিক কিংবা কেমিক্যাল-ভিত্তিক সৌন্দর্য পণ্যে তাৎক্ষণিক ভাবে আরাম মেলে। কিন্তু এতে দীর্ঘমেয়াদে সমস্যা দূর হয় না।

বর্তমান সময়ে ২৬ থেকে ৩০ বছর বয়সীদের মধ্যে ব্রণ সমস্যা বেশ প্রকট। যার মধ্যে নারীদের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে বেশি। গরমের সময় প্রায় ৪৪.৫% ব্রণ আক্রান্তের অবস্থা আরও খারাপ হয়। দ্রুত মুক্তির জন্য বেশির ভাগ মানুষই অ্যান্টিবায়োটিক বা কেমিক্যাল-ভিত্তিক সৌন্দর্য পণ্যেই বেশি ব্যবহার করে। কিন্তু ব্রণ থেকে পুরোপুরি মুক্তি পেতে প্রয়োজন দেহের অভ্যন্তরীণ ভারসাম্য ও ডিটক্সিফিকেশন। সঠিক প্রাকৃতিক উপাদান খুঁজে পেতে আয়ুর্বেদেরও সাহায্য নেওয়া যেতে পারে।

প্রাকৃতিক উপাদানে ত্বক পরিচর্যা

আয়ুর্বেদের মতে, ব্রণ মূলত দেহের ত্রিদোষ বা তিনটি দোষ (বাত, পিত্ত, কফ) এর ভারসাম্যহীনতার কারণে হয়। তাই ডিটক্সিফিকেশন, হজমশক্তি বৃদ্ধি ও হরমোন নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ত্বক পরিষ্কার রাখা উচিত। এজন্য আয়ুর্বেদে চারটি প্রাকৃতিক উপাদান বা ভেষজের বিষয়ে উল্লেখ রয়েছে। যেগুলো ব্রণ নিরাময়ে বিশেষভাবে কার্যকর:

• নিম: প্রাকৃতিক অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল, প্রদাহ কমায় ও ব্যাকটেরিয়া দূর করে।

• গন্ধক: দেহ ডিটক্সিফিকেশন করে ব্রণের প্রবণতা কমায়।

• চিরতা: তিতা স্বাদযুক্ত এই ভেষজ রক্ত পরিশোধন ও টক্সিন দূর করে।

• হরীতকী: হজম ও অন্ত্র পরিষ্কার রাখে, যা ত্বকের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

জীবনধারায় ৬টি পরিবর্তন যা ত্বক রাখবে ব্রণমুক্ত

আয়ুর্বেদ ত্বকের পরিচর্যায় জীবনধারায় কিছু পরিবর্তনকেও গুরুত্ব দেয়। যা সঠিক ভাবে মেনে চললে ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো থাকে।

• পানি পান: প্রতিদিন অন্তত ৮ গ্লাস পানি পানে টক্সিন দূর হয়।

• মৃদু স্কিনকেয়ার: দিনে ২-৩ বার হালকা, সাবান-মুক্ত ক্লিনজার দিয়ে মুখ ধোয়া।

• কেমিক্যাল এড়িয়ে চলা: কসমেটিক ও হেভি মেকআপ ব্যবহার সীমিত করা।

• পুষ্টিকর খাবার: নিয়মিত শাকসবজি, ফলমূল ও আশযুক্ত শস্য খাওয়া উচিত। পুরোপুরি সম্ভব না হলেও চিনিযুক্ত ও প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলা।

• স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট: ধ্যান, ব্যায়াম ও যোগব্যায়াম হরমোন ব্যালেন্সে সাহায্য করে।

• সানস্ক্রিন: পানিভিত্তিক বা ওয়াটার বেইসড এসপিএফ ৩০-৫০ (SPF) যুক্ত সানস্ক্রিন ব্যবহার করা উচিত।

বিশেষজ্ঞদের মতে, কেমিক্যালভিত্তিক চিকিৎসার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ার ফলে মানুষ এখন প্রাকৃতিক বিকল্পের দিকে ঝুঁকছে। এক্ষেত্রে শুধুমাত্র ব্রণ নিরাময় নয়, বরং সামগ্রিক সুস্থতা নিশ্চিত করতে প্রাকৃতিক বিকল্পকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত।

প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার, সচেতন জীবনধারা ও সাধারণ স্কিনকেয়ার মেনে চললেই মিলতে পারে দীর্ঘস্থায়ী, স্বাস্থ্যোজ্জ্বল এবং ব্রণমুক্ত ত্বক, সেটাও কোনো রাসায়নিক ছাড়াই।

ছবি: পেকজেলসডটকম

 

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.