অস্ট্রেলিয়ায় রপ্তানিতে ২০৩২ সাল পর্যন্ত শুল্কমুক্ত সুবিধা

0
107

তৈরি পোশাকের অন্যতম অপ্রচলিত বাজার অস্ট্রেলিয়া। দেশটিতে ২০৩২ সাল পর্যন্ত পণ্য রপ্তানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবে বাংলাদেশ। অর্থাৎ স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) কাতার থেকে উত্তরণের পর আরও ছয় বছর বর্তমানের রপ্তানি সুবিধা অব্যাহত থাকবে। সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়া সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পোশাক খাতের রপ্তানিকারক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বিজিএমইএর নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার পার্লামেন্টের স্পিকার, মন্ত্রী ও সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলরা।

অস্ট্রেলিয়ায় বর্ধিত সময়ের জন্য এ শুল্কমুক্ত রপ্তানি সুবিধা পেতে উৎস বিধির কোনো শর্ত পরিপালনের বাধ্যবাধকতা থাকছে না। তবে দেশটি থেকে আরও বেশি তুলা ও উল আমদানির অনুরোধ করা হয়েছে অস্ট্রেলিয়া সরকারের পক্ষ থেকে। বর্তমানে উৎপাদনের ক্ষেত্রে অস্ট্রেলিয়ার তুলা ও উল খুব সামান্যই ব্যবহার করে থাকেন বাংলাদেশের উদ্যোক্তারা। তবে সরাসরি সেখান থেকে আমদানি না করে চীনের মাধ্যমে দেশে আনা হয়। এর আগে ঢাকায় অস্ট্রেলিয়ার হাইকমিশনার জেরেমি ব্রুর এলডিসি-পরবর্তী আরও তিন বছর বাংলাদেশের পণ্যের শুল্কমুক্ত সুবিধা অব্যাহত রাখতে তাঁর দেশের সিদ্ধান্তের কথা জানান।

রপ্তানি পণ্য এবং বাজার সম্প্রসারণের মিশনে বিভিন্ন দেশ সফর করছেন বিজিএমইএর নেতারা। সংগঠনের সভাপতি ফারুক হাসানের নেতৃত্বে গত সপ্তাহে বিজিএমইএর একটি প্রতিনিধি দল অস্ট্রেলিয়া সফরে যায়। সপ্তাহব্যাপী এ সফরে দেশটির গুরুত্বপূর্ণ নীতিনির্ধাকরদের সঙ্গে বৈঠক করে তারা। অন্তত ১০টি পৃথক বৈঠক হয়। এর মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভের স্পিকার মিল্টন ডিক, দেশটির সহকারী বাণিজ্যমন্ত্রী এবং কয়েকজন সিনেটরের সঙ্গে বৈঠকে ২০৩২ সাল পর্যন্ত শুল্কমুক্ত সুবিধার সিদ্ধান্ত জানানো হয়। বাংলাদেশের হাইকমিশনার এম আলমা সিদ্দিকী এবং বিজিএমইএর কয়েকজন নেতা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

এসব বৈঠকে বিজিএমইএর সহসভাপতি শহিদ উল্লাহ আজিম অংশ নেন। জানতে চাইলে তিনি বলেন, আলোচনায় অস্ট্রেলিয়া সরকারের একাধিক নীতিনির্ধারক ২০৩২ সাল পর্যন্ত বর্তমানের মতো শুল্কমুক্ত সুবিধায় পণ্য রপ্তানির সুযোগের কথা জানান। তিনি বলেন, বাংলাদেশের জন্য এটা অনেক বড় সুখবর। কারণ এখন পর্যন্ত অন্য কোনো দেশ এত বড় মেয়াদে শুল্কমুক্ত সুবিধা ঘোষণা করেনি।

শহিদ উল্লাহ আজিম বলেন, আলোচনায় ‘উইন উইন পলিসি’ হিসেবে দুই দেশই যাতে বাণিজ্যে লাভবান হতে পারে সে জন্য অস্ট্রেলিয়া থেকে তুলা ও উল আমদানি বাড়ানোর অনুরোধ জানানো হয়েছে। বিজিএমইএ বিষয়টি খুবই ইতিবাচকভাবে নিয়েছে। অস্ট্রেলিয়া থেকে সরাসরি তুলা ও উল আমদানি করলে সময় এবং অর্থ সাশ্রয় হবে বলে জানান তিনি।

এদিকে গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রথমবারের মতো অস্ট্রেলিয়ায় পোশাক রপ্তানি ১০০ কোটি ডলারের মাইলফলক ছাড়িয়েছে। মোট ১১৬ কোটি ডলারের পোশাক গেছে দেশটিতে। আগের অর্থবছরের চেয়ে বেড়েছে ৪২ শতাংশেরও বেশি। আগের অর্থবছর এর পরিমাণ ছিল ৮১ কোটি ডলারের কিছু বেশি। আর ২০২০-২১ অর্থবছরে ছিল ৭৩ কোটি ডলার।

গত অর্থবছর প্রচলিত শ্রেণির একক প্রধান বাজার যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি কম হয়েছে প্রায় ৬ শতাংশ। জোটগত প্রধান বাজার ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) রপ্তানি বেড়েছে ১০ শতাংশেরও কম। অন্যদিকে অপ্রচলিত বাজার শ্রেণিতে রপ্তানি বেড়েছে ৩১ শতাংশেরও বেশি হারে। এর মধ্যে অপ্রচলিত

শ্রেণির দ্বিতীয় প্রধান বাজার অস্ট্রেলিয়ায় রপ্তানি বেড়েছে ৪২ দশমিক ৪৮ শতাংশ। অবশ্য এ শ্রেণির প্রধান বাজার জাপানে আরও বেশি হারে রপ্তানি বেড়েছে। গত অর্থবছর জাপানে রপ্তানি বেড়েছে প্রায় ৪৬ শতাংশ। ১৬০ কোটি ডলার মূল্যের পোশাক রপ্তানি হয় দেশটিতে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.