অল্প কয় দিনে সাকিব–মুশফিকদের যেভাবে বদলে দিলেন হাথুরু

0
171
চন্ডিকা হাথুরুসিংহে

আইপিএলের জন্য সাকিবদের ছাড়বেন হাথুরু, তবে …

এই একটা জিনিসই দ্রুত বদলানো সম্ভব। হুট করে ক্রিকেটারদের দক্ষতা বদলানো যায় না। কিন্তু চেষ্টা করলে বদলানো যায় ড্রেসিংরুমের পরিবেশ। রয়ে–সয়ে খেলার রক্ষণাত্মক মাসনিকতা থেকে ক্রিকেটারদের বের করে আনা যায়। আগ্রাসী ক্রিকেট খেলার জন্য যে ‘মনস্তাত্ত্বিক নিরাপত্তা’ দরকার, সেটা দেওয়া যায়।

ওয়ানডের পাশাপাশি টি-টোয়েন্টিতেও দাপুটে হয়ে উঠছে বাংলাদেশ দল

ওয়ানডের পাশাপাশি টি-টোয়েন্টিতেও দাপুটে হয়ে উঠছে বাংলাদেশ দল

ছবি: শামসুল হক

দায়িত্ব নেওয়ার পর দলের মধ্যে পরিবর্তনের ব্যাখ্যায় এই দুটি শব্দ ব্যবহার করেছেন হাথুরুসিংহে। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচের আগের সংবাদ সম্মেলনে এ প্রসঙ্গে প্রধান কোচের ব্যাখ্যাটা ছিল এ রকম, ‘একটা কথাই বলি—মনস্তাত্ত্বিক নিরাপত্তা। এটা বড় একটা শব্দ।’

সাকিব–লিটনদের আইপিএল খেলার সিদ্ধান্ত জানালেন বিসিবি সভাপতি

হাথুরুসিংহে এরপর যোগ করলেন, ‘এর পেছনে অনেক ব্যাপার আছে। যেমন ধরেন আপনি এমন একটা পরিবেশ তৈরি করতে পারলেন, যাতে খেলোয়াড়রা ফলাফলের ব্যাপারে, এর প্রভাবের ব্যাপারে চিন্তা না করে নিজের সেরাটা দিতে পারল। শুধু কোচ বা নির্বাচকেরা নন, এমনকি সতীর্থদের কাছ থেকেও…তারা যদি চেষ্টা করার মতো উন্মুক্ত হতে পারে, এরপরও ব্যর্থ হয়—তাহলে তো ঝামেলা নেই। তারা ওই একই খেলোয়াড়ই থাকবে, যাদের ওপর আমাদের আস্থা আছে। আমার মনে হয় এটিই সবচেয়ে বড় পরিবর্তন।’

গত দুই মাসে ক্রিকেটারদের দক্ষতায় বড় কোনো পরিবর্তন আসেনি, সেটিও মনে করিয়ে দিলেন প্রধান কোচ, ‘আমার মনে হয় না কিছু বদলেছে। তারা তো একই স্কিলের একই খেলোয়াড় আছে।’ হাথুরু বলে চলেন, ‘শুধু ড্রেসিংরুমের পরিবেশ একটু বদলেছে শুধু—আমরা যেভাবে কথা বলি, আলোচনা করি। আমি দলের মাঝে মনস্ত্বাত্ত্বিক নিরাপত্তা আনার চেষ্টা করেছি। তাদের বলেছি, তারা ভালো করুক বা ব্যর্থ হোক, তাদের মূল্য আমাদের কাছে আছে। তারা আমাদের কাছে মূল্যবান। ফলে খেলোয়াড়দের কিছুই বদলায়নি, আমি জানি না এর আগে কী হয়েছে, তবে স্কিল একই আছে।’

কোচিং স্টাফের অন্য সদস্যরাও দলের এই আবহ পরিবর্তনের বিষয়টি লক্ষ্য করেছেন, ‘অন্য কোচেরাও বলেছে আমাকে—এটিই সবচেয়ে বড় পরিবর্তন। আমিও সেটিই তৈরি করার চেষ্টা করছিলাম। এমন একটা পরিবেশ তৈরি করতে পারলে তারা নিজেদের সেরাটা দিতে পারবে। মানে, তাদের সেরাটা যদি মাঝেমাধ্যে যথেষ্ট না-ও হয়, আমরা হারব। কিন্তু তাতে তো ক্ষতি নেই।’

অনুশীলনে হাসিমুখে লিটন–হৃদয়রা

অনুশীলনে হাসিমুখে লিটন–হৃদয়রা
ছবি: শামসুল হক

অধিনায়ক তামিমের মুখে সাকিব-হৃদয়ের সঙ্গে মুশফিকেরও নাম

দল থেকে বাদ পড়ার ভয় না থাকলে মাঠের ক্রিকেটটা রোমাঞ্চকরই হওয়ার কথা। হাথুরুসিংহের কাছে এটা কোনো রকেট–বিজ্ঞান নয়। এই পরিবর্তনকে তিনি বাংলাদেশ ক্রিকেটের ‘নতুন যুগের শুরুও’ বলতে রাজি নন। তাঁর চাওয়া একটাই, আগ্রাসী ক্রিকেটের ধারবাহিকতা, ‘আমি নতুন যুগ দেখি না। সামনেও আমরা এভাবেই খেলতে চাই। আগ্রাসী ক্রিকেট খেলতে চাই।’

হাথুরুসিংহের কাছে আগ্রাসী ক্রিকেটের ব্যাখ্যাটাও শুনে নিন, ‘আগ্রাসী ক্রিকেট মানে এই নয় যে আমরা গেলাম আর জোরে জোরে মারলাম। সবদিক থেকেই আগ্রাসী হয়ে ওঠা। দল নির্বাচন, ফিল্ড সাজানো, আমাদের শরীরী ভাষা, ফিল্ডিং, ব্যাটিং। কৌশলগত দিক দিয়েও আগ্রাসী হব, ফল কী হবে, তা নিয়ে ভাবব না। নিজেদের সেরাটাই খেলতে চাই। যখনই আমরা এমন আগ্রাসী ক্রিকেট খেলি, মুক্তভাবে খেলেছি—এ দল তখনই ভালো করেছে।’

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.