আর্জেন্টিনা তখনো অলিম্পিক বাছাইপর্ব শুরুই করেনি। দেশটির অনূর্ধ্ব-২৩ দলের কোচ হাভিয়ের মাচেরানোকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, অলিম্পিক ফুটবলে লিওনেল মেসিকে তিনি চান কি না। ‘অবশ্যই চাই’—এমনই ছিল মাচেরানোর উত্তর। সেই সময় মেসিকেও প্রশ্ন করা হয়েছিল, তিনি অলিম্পিকে খেলতে চান কি না, সেই প্রশ্নের উত্তরে মেসিও ‘হ্যাঁ’বোধক মাথাই নেড়েছিলেন।
বাছাইপর্ব শুরু হওয়ার পর মেসির অলিম্পিক খেলার আলোচনার পালে আরও বেশি বাতাস লাগে। আর এখন তো আর্জেন্টিনা প্যারিস ২০২৪ অলিম্পিকের বাছাইপর্ব উতরে চূড়ান্ত পর্বে জায়গা করে নিয়েছে। মেসির অলিম্পিকে খেলাবিষয়ক আলোচনা চূড়ান্ত গতি পাওয়ারই কথা। ব্রাজিলের বিপক্ষে কাল রাতে ১-০ গোলে জিতে আর্জেন্টিনা অলিম্পিকের চূড়ান্ত পর্বের টিকিট পাওয়ার পর প্রশ্নটি আবার করা হয়েছিল মাচেরানোকে। এবার তিনি বললেন, মেসির মতো একজন খেলোয়াড়ের জন্য তাঁর দরজা সব সময়ই খোলা।
এমনিতে অলিম্পিক ফুটবলে যেকোনো দেশের অনূর্ধ্ব-২৩ দল খেলে। কিন্তু কোচ চাইলে দলে তিনজন বেশি বয়সী খেলোয়াড় রাখতে পারেন। আর্জেন্টিনা দলে সেই তিনজন কারা হবেন—এমন আলোচনায় মেসির সঙ্গে আছে আনহেল দি মারিয়ার নামও। যদিও দি মারিয়া আগেই ঘোষণা দিয়েছেন—এ বছরের কোপা আমেরিকা খেলেই আন্তর্জাতিক ফুটবলকে বিদায় বলবেন। এরপরও কি মাচেরানোর অলিম্পিক পরিকল্পনায় আছেন দি মারিয়া? আর্জেন্টিনার অনূর্ধ্ব-২৩ দলের কোচ এই উইঙ্গারের ক্ষেত্রেও ইতিবাচকই।
ব্রাজিলকে হারানোর পর সংবাদ সম্মেলনে মাচেরানো মেসির বিষয়ে বলেছেন, ‘এই মুহূর্তে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে ছেলেরা যা করেছে। ওরা আমাদের আরেকবার অলিম্পিক গেমসে নিয়ে গেছে। আমি এখানে বিশেষ কিছু কিরিনি। আমি শুধু অসাধারণ এক দল খেলোয়াড়দের সঙ্গ দিয়েছি।’
অলিম্পিক ফুটবলে আর্জেন্টিনা এখন পর্যন্ত দুটি সোনা জিতেছে, ২০০৪ ও ২০০৮ সালে। দুটি অলিম্পিকেই আর্জেন্টিনা দলে ছিলেন মাচেরানো। মেসি আর্জেন্টিনার হয়ে অলিম্পিক সোনা জিতেছেন বেইজিংয়ে ২০০৮ সালে। বেইজিং অলিম্পিকে সতীর্থ হিসেবে সোনা জেতা মেসি-মাচেরানো এবার কি কোচ-খেলোয়াড় হিসেবে জুটি বাঁধবেন প্যারিসে? মাচেরানো বলেছেন, ‘লিওর সঙ্গে আমার সম্পর্ক আর বন্ধুত্বের কথা সবাই জানে। তার মতো একজন খেলোয়াড়ের জন্য আমাদের সঙ্গে থাকার দরজা সব সময়ই খোলা।’
তবে মাচেরানো চাইলেই তো আর হবে না, মেসিরও চাইতে হবে। এর আগে খবর বেরিয়েছিল, মেসিও অলিম্পিকে খেলতে চাইছেন। কিন্তু অলিম্পিক ও কোপা আমেরিকা হবে পরপর। জুন-জুলাইয়ে কোপা আমেরিকা, আগস্ট-সেপ্টেম্বরে অলিম্পিক। পরপর দুটি টুর্নামেন্টে ৩৭ বছর বয়সী মেসি খেলতে পারবেন কি না বা চাইবেন কি না, সেটা বড় প্রশ্ন। মাচেরানোও বিষয়টি ছেড়ে দিচ্ছেন সাবেক সতীর্থের ওপর, ‘এটা তার ওপর নির্ভর করে।’ একই সঙ্গে মাচেরানো দি মারিয়ার অলিম্পিক খেলা নিয়েও কথা বলেছেন, ‘আমি লিও আর আনহেলের সঙ্গে কথা বলেছি। আমি যেটা (খবরে) পড়েছি যে কোপা আমেরিকার পর আর তারা খেলবে না। তারা কী চায়, সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার তাদের আছে। কিন্তু আমরা নিশ্চিত করেই তাদের দলে রাখতে চাইব।’
মাচেরানো এরপর মনে করিয়ে দেন ঠাসা সূচির কথা, ‘ওই সময় কোপা আমেরিকা আছে এবং বিষয়টি সহজ নয়।’