অলিম্পিকে ছয় স্বর্ণ বাইলসের

0
37
মেয়েদের আর্টিস্টিক অলরাউন্ডে মুগ্ধতা ছড়ান যুক্তরাষ্ট্রের সিমোন বাইলস এএফপি

মানসিক অবসাদ যদি সিমোন বাইলসের ক্যারিয়ারে হানা না দিত, তাহলে হয়তো তাঁর নামের পাশে ডজনখানেক স্বর্ণপদকের কথা লেখা থাকত। তবু কম কীসে! মাত্র তিনটি অলিম্পিকে অংশ নিয়ে এরই মধ্যে ছয়টি স্বর্ণপদক জিতে নিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের এই জিমন্যাস্ট। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার রাতে মেয়েদের আর্টিস্টিক অলরাউন্ডে ব্রাজিলের আন্দ্রাদে ও যুক্তরাষ্ট্রের লিকে হারিয়ে স্বর্ণ জেতেন। এই প্রতিযোগিতায় প্রথম হতে তাঁকে অর্জন করতে হয় ৫৯.১৩১ পয়েন্ট।

আর ষষ্ঠ স্বর্ণপদক জেতার পর নিজেকে সর্বকালের সেরা হিসেবেই দর্শকদের জানিয়ে রাখেন বাইলস। গলায় পরেন ‘গোট’ লকেট, যে লকেটে ৫৪৬টি হীরা রয়েছে। সেই হীরা দিয়েই আঁকা হয় গোটের ছবিটা। অর্থাৎ তিনি বুঝিয়ে দিলেন, তিনিই সর্বকালের সেরা। এর পর এই লকেট নিয়ে জানালেন নিজের মনের কথা, ‘আসলে আমি ঠিক করেই রেখেছিলাম, সবকিছু ভালো হলে আমি এই গোট নেকলেসটা পরব। আমি জানি, এটা নিয়ে চর্চা হবে। কিন্তু এটা তো চর্চা হওয়ার মতোই একটা বিষয়। এখন বিশ্বের সেরা অ্যাথলেট বলা হচ্ছে আমাকে। কিন্তু আমি নিজেকে টেক্সাসের সেই বাইলস হিসেবেই মনে করি, যে ফ্লিপ করতে ভীষণ ভালোবাসে।’

এই হাসিখুশি বাইলসের শুরুটাও ছিল দারুণ। ২০১৬ রিও অলিম্পিকে সবাইকে অবাক করে দেন। সেবার চার-চারটি স্বর্ণপদক জেতেন তিনি। তাতেই বিশ্বজুড়ে বাইলসকে নিয়ে শুরু হয় হইচই। কিন্তু পরের আসরেই হঠাৎ পথ হারানো। যার পেছনের গল্পটা তিক্ততায় পূর্ণ। ২০২০ টোকিও অলিম্পিকে তাঁর কাছে যুক্তরাষ্ট্রের আশা ছিল অনেক। কারণ, আগের আসরে তিনি একাই দাপট দেখান। কিন্তু তাদের আশা গুড়ে বালি ঢেলে দেয় মানসিক অবসাদ। সেই সময় দুই ইভেন্টের কোনোটিতেই বড় সাফল্য পাননি তিনি। একটিতে ব্রোঞ্জ, আরেকটিতে রৌপ্য জেতেন। এর পর তো আসরের মাঝপথেই নাম প্রত্যাহার করে নেন।
একটা সময় বাইলসের ক্যারিয়ারও শঙ্কার মুখে পড়ে। তিনি চিন্তা করেননি, এভাবে আবার ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন। এমনকি অনেকে ধারণাও করেছিলেন, আর বোধ হয় অলিম্পিকের আসরে দেখা যাবে না তাঁকে। কিন্তু সেই দুঃসহ দিন পেরিয়ে ঠিকই আবার নতুন ভোর দেখেছেন বাইলস। যেখানে প্রাণভরে উদযাপন করেছেন। ঝেড়ে ফেলেছেন অতীতের সব হতাশা। আর এমন সুসময়ে বলেছেন, সেই দুঃসময় দিনগুলোর কথাও, “সকালে থেরাপি নিয়ে দিন শুরু করেছিলাম। সত্যি খুবই শান্ত ছিলাম এবং অনুভব করছিলাম, আমি তৈরি। ভল্টে ল্যান্ড করার পর মনে হচ্ছিল, ‘হ্যাঁ, আমরা অবশ্যই জিততে যাচ্ছি।’ ভল্ট শেষ করার পর স্বস্তি পাচ্ছিলাম, কোনো স্মৃতি বা কিচ্ছু ফিরে আসেনি। সব মিলিয়ে দারুণ রোমাঞ্চকর ছিল সবকিছু। আমরা মজা করেছি, পরস্পরের সঙ্গে সময়টা উপভোগ করেছি এবং জিমন্যাস্টিকস করেছি।”
মনে হচ্ছে, ক্যারিয়ারের শুরুর দিনগুলোতে ফিরছেন বাইলস। ঠিক যেমন রিও ডি জেনেরিওতে দু’হাত ভরে স্বর্ণ জিতেছিলেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.