খ্যাতনামা অর্থনীতিবিদ এবং বাংলাদেশের প্রথম পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য অধ্যাপক আনিসুর রহমান মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। আজ রোববার দুপুরে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। অধ্যাপক আনিসুর রহমানের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন তাঁর ছাত্র এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক এম এম আকাশ।
অধ্যাপক আনিসুর রহমান বার্ধক্যজনিত নানা অসুখে ভুগছিলেন।
এম এম আকাশ বলেন, অসুস্থ অবস্থায় অধ্যাপক আনিসুর রহমানকে ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই আজ বেলা সোয়া একটার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯১ বছর।
অধ্যাপক আনিসুর রহমানের জন্ম ১৯৩৩ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। তাঁর গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনার কেন্দুয়ায়। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন।
তাঁর আত্মজীবনীমূলক বই ‘পথে যা পেয়েছি’তে লেখা হয়েছে, ১৯৭৭ সালে আনিসুর রহমান জেনেভায় আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার আমন্ত্রণে ওই সংস্থায় যোগ দিয়ে গ্রামীণ উন্নয়নে জনগণের অংশগ্রহণের ওপর একটি বিশ্বব্যাপী প্রোগ্রাম সৃষ্টি করে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত এই প্রোগ্রাম পরিচালনা করেন এবং ১৯৯১ সালে দেশে ফিরে আসেন। অংশীদারি গবেষণা এবং আত্মনির্ভর অংশীদারি উন্নয়নের দর্শন ও পদ্ধতিগত প্রশ্নে তাঁর অবদান বিশ্বস্বীকৃত এবং বিভিন্ন দেশে এই কাজে তাঁর চিন্তা ও রচনাবলি অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে। সমাজ ও উন্নয়নদর্শন ছাড়া অধ্যাপক রহমান রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী এবং গবেষক হিসেবে উভয় বাংলায় সুবিদিত।
এম এম আকাশ বলেন, অধ্যাপক আনিসুর রহমানের আত্মীয়স্বজন ঢাকায় এ মুহূর্তে নেই। এ জন্য তাঁর মরদেহ বারডেমের হিমঘরে রাখা হবে। আগামী মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টায় সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য তাঁর মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রাখা হবে।
আত্মনির্ভরশীল অর্থনীতি ও গণগবেষণার অন্যতম পথিকৃৎ ছিলেন অধ্যাপক আনিসুর রহমান। তিনি গুণী রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী ছিলেন।
অধ্যাপক আনিসুর রহমানের বইগুলোর মধ্যে আছে ‘উন্নয়ন জিজ্ঞাসা’, ‘যে আগুন জ্বলেছিল: মুক্তিযুদ্ধের চেতনার স্বতঃস্ফূর্ত প্রকাশ’, ‘মাই স্টোরি অব ১৯৭১’, ‘অপহৃত বাংলাদেশ’ ইত্যাদি।