ভারতে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশকারী ব্যক্তিরা ধরা পড়লে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে আটক শিবিরে রাখতে হবে। সে জন্য রাজ্যে রাজ্যে আটক বা বন্দিশিবির, ইংরেজিতে যা ‘ডিটেনশন ক্যাম্প’ তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই নির্দেশ পাঠিয়েছে।
সংসদের গত বাজেট অধিবেশনে অভিবাসন ও বিদেশি নাগরিক সংশোধনী আইন পাস হয়েছিল। ১ সেপ্টেম্বর থেকে সেই আইন বলবৎ হয়েছে। তাতেই বলা হয়েছে, যথাযথ নথি ছাড়া প্রবেশের সময় অথবা ভিসা উত্তীর্ণ হওয়া সত্ত্বেও অবৈধভাবে থেকে যাওয়া কেউ ধরা পড়লে তাঁকে নিজের দেশে ফেরত পাঠানো পর্যন্ত আটককেন্দ্রে বন্দী থাকতে হবে। সংবাদ সংস্থা পিটিআই এই খবর দিয়েছে।
এই সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকার আরও এক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সেই নির্দেশে বলা হয়েছে, ধর্মীয় নিপীড়নের কারণে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের হিন্দু, খ্রিষ্টান, শিখ, জৈন, বৌদ্ধ ও পার্সি নাগরিকদের যাঁরা ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ভারতে এসেছেন, বৈধ নথি না থাকলেও তাঁরা ভারতে বসবাস করতে পারবেন। তাঁদের শরণার্থীর মর্যাদা দেওয়া হবে। কাউকে আটক করা হবে না, তাড়িয়েও দেওয়া হবে না।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই বিজ্ঞপ্তির অর্থ বিশেষ করে বাংলাদেশ থেকে চলে আসা অমুসলিম যাঁরা পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, ত্রিপুরা বা মেঘালয়ে চলে এসেছেন, বৈধ নথি বা কাগজপত্র না থাকলেও তাঁদের থাকতে দেওয়া হবে। পরবর্তী সময় তাঁদের নাগরিকত্ব পেতে অসুবিধা হবে না। কেন্দ্রীয় সরকারের তথ্য অনুযায়ী, আফগানিস্তান ও পাকিস্তান থেকে ভারতে আসা শরণার্থীর সংখ্যা নগণ্য। সবচেয়ে বেশি শরণার্থী বাংলাদেশের নাগরিক।
এই নির্দেশ নাগরিকত্ব সংশোধন আইনেরই (সিএএ) সংশোধন ধরে নেওয়া যায়। সিএএতে ওই তিন প্রতিবেশী দেশের অমুসলিম নাগরিকদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। আইনে তাঁদের ভারতে আসার সময়সীমা নির্ধারিত ছিল ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর।
সরকারের নতুন নির্দেশে সেই সময় সীমা ১০ বছর বাড়িয়ে জানানো হলো ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত আসা ওই তিন দেশের অমুসলিম নাগরিকেরা বৈধ নথি ছাড়াই ভারতে থাকতে পারবেন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে বলা হয়েছে, এবার থেকে বিদেশিরা ভারতের ভিসার জন্য আবেদন করলে কিংবা যাঁরা ওভারসিজ সিটিজেন অব ইন্ডিয়া (ওসিআই) কার্ড পেতে নাম নিবন্ধন করলে, তাঁদের বায়োমেট্রিক তথ্য দেওয়ার জন্য সহযোগিতা করতে হবে।
অনুপ্রবেশকারী ব্যক্তিদের আটককেন্দ্রে রাখার যুক্তি হিসেবে বলা হয়েছে, এতে তাঁদের গতিবিধির ওপরে নজর রাখা সহজ হবে।