‘অনেকে দেখে হাসাহাসি করে, তাতে কিচ্ছু আসে–যায় না’

নারী দিবস

0
192
সাতজনের সংসারের খরচ মেটাতে ইজিবাইক চালান সুমি

মো. ফরহাদ বললেন, ‘আমি তো বেশির ভাগ সময়ই কাজ করতে পারি না। পরিবারে এতগুলান মানুষের মুখে খাবার তুলে দিতে বউ গাড়ি চালায়। মানুষ এ নিয়ে অনেক কিছু বলে। মানুষের কথা শুনলে তো সংসার চলব না।’

সুমি ইজিবাইকের মালিককে দৈনিক ভাড়া দেন ৩৫০ টাকা। স্কুল ও অফিস–আদালত বন্ধ থাকলে সব খরচ বাদ দিয়ে কোনো কোনো দিন ২০০ টাকা নিয়ে বাড়ি ফেরেন সুমি। আবার সব খোলা থাকলে তা ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা হয়।

ফরহাদ-সুমি দম্পতি খিলগাঁও থাকেন। চার ছেলেমেয়ে, ফরহাদের মাসহ পরিবারের সদস্য মোট সাতজন। চার ছেলেমেয়ের মধ্যে বড় ছেলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ছে। অন্যরা অন্যান্য শ্রেণিতে পড়াশোনা করছে। ঘরভাড়া দিতে হয় বিদ্যুৎ বিল ছাড়া ৩ হাজার ৫০০ টাকা। সাতজনের খাবারসহ অন্যান্য খরচ মিলে মাসে সুমির সংসারে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা খরচ হয়।

 

সুমি আক্তার

সুমি আক্তার

সুমি আগে একটি পোশাকশিল্প কারখানায় কাজ করতেন। তবে রাত পর্যন্ত কাজ করতে হতো, কাজে সময় বেশি দিতে হতো। টাকাও কম ছিল। ছেলেমেয়েদের দেখাশোনা করতে পারতেন না। তাই সে কাজ বাদ দিয়েছেন। এখন ছোট ছেলেমেয়েদের স্কুলে দিয়ে আসা, রান্নাসহ পরিবারের অন্যান্য কাজ সামলে ইজিবাইক নিয়ে বের হন সুমি। রাতের আগেই বাড়ি ফেরেন। সুমির পায়ে একটু সমস্যা থাকায় গৃহকর্মী হিসেবে বা অন্য কোনো কাজও করতে পারেন না।

স্বামী ফরহাদের কাছেই চালানো শিখেছেন সুমি। বলেন, তিনি নিজে স্বাধীনভাবে কাজ করছেন। ইজিবাইকে যাত্রীদের সঙ্গে দরাদরি করেন না। যাত্রীরা খুশি হয়ে যা দেন, তা–ই নেন। নারী চালক দেখে যাত্রীদের কেউ কেউ ভাড়া ছাড়াও ১০০–২০০ টাকা দেন খুশি হয়ে। সব মিলে তিনি ভালো আছেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.