সংবাদ প্রকাশের জেরে বেসরকারি টেলিভিশন আরটিভির ঢাকা কার্যালয়ের নিজস্ব প্রতিবেদক অধরা ইয়াসমিনের বিরুদ্ধে চলমান তদন্ত বন্ধে দেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানিয়েছে সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষায় সোচ্চার আন্তর্জাতিক সংগঠন কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে)। সে সঙ্গে সিপিজে সাংবাদিকদের ভয়ভীতি দেখাতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ব্যবহার বন্ধেরও আহ্বান জানিয়েছে।
এ আহ্বান জানিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার একটি বিবৃতি দিয়েছে সিপিজে। বিবৃতিটি সিপিজের এশিয়া শাখার টুইটার অ্যাকাউন্টে টুইট করা হয়েছে।
চট্টগ্রামের সাইবার ট্রাইব্যুনালে গত ১৩ মে সাংবাদিক অধরা ইয়াসমিন ও তাঁর সোর্সের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়। এর আগে গত ৩০ মে আরটিভিতে অধরার একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রচার করা হয়। ওই প্রতিবেদনে তিনি রাজারবাগ দরবার শরীফ ও এর নেতা শাকেরুল কবিরের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের কথা প্রকাশ করেন। এ কারণে সংক্ষুব্ধ এক ব্যক্তি চট্টগ্রামের আদালতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন। এ বিষয়ে মামলার সঙ্গে সম্পৃক্ত এক ব্যক্তি নাম গোপন রাখার শর্তে সিপিজের সঙ্গে কথা বলেন।
মামলায় সাংবাদিক অধরা ইয়াসমিনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের তিনটি ধারা লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়েছে। অন্যদিকে তদন্তে অধরা ইয়াসমিন বলেছেন, শাকেরুল কবিরের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, জমি দখল ও নারীর প্রতি সহিংসতার অভিযোগ রয়েছে।
২০২২ সালে বিশ্বে ৬৭ সাংবাদিককে হত্যা: সিপিজে
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালে বাংলাদেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন কার্যকর হয়। এর পর থেকে বিভিন্ন সময় সাংবাদিকদের হয়রানি করতে এই আইনের ব্যবহার দেখা গেছে। চলতি বছরের মার্চে সাংবাদিককে (শামসুজ্জামান শামস) গ্রেপ্তার করে তাঁর বিরুদ্ধে এই আইনের আওতায় একাধিক তদন্ত শুরু করা হয়। এই পরিস্থিতিতে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার টুর্ক সংবাদপত্রের নেতৃত্ব ও কর্মীদের ওপর এই আইনের ব্যবহার বন্ধে কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
সিপিজে ও অন্যান্য অধিকার সংগঠনগুলোও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন স্থগিত করার আহ্বান জানিয়েছে।
কর্মীদের হয়রানি বন্ধের আহ্বান সিপিজের
বিবৃতিতে সিপিজের প্রোগ্রাম পরিচালক কার্লোস মার্তিনেজ দে লা সেরনা বলেন, আতঙ্কের বিষয় এটা যে বাংলাদেশি সাংবাদিক অধরা ইয়াসমিনকে তাঁর কাজের জন্য কঠোর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে লক্ষ্যবস্তু বানানো হয়েছে। অবিলম্বে কর্তৃপক্ষকে অধরা ইয়াসমিনের বিরুদ্ধে চলা তদন্ত বন্ধ করতে হবে। সাংবাদিকদের হয়রানি করতে এই আইনের ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। নিশ্চিত করতে হবে যে অধরা ইয়াসমিন তাঁর কাজের জন্য রোষের শিকার হবেন না।
সিপিজে এ বিষয়ে কথা বলার জন্য রাজারবাগ দরবার শরীফ ও এর নেতা শাকেরুল কবির ও ইয়াসমিনের মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মুহাম্মদ রফিকুল ইসলামকে ফোন করেছে ও বার্তা পাঠিয়েছে। তবে তাঁরা কোনো উত্তর দেননি।