৯ জেলায় ঝড়ে ১৪ জন নিহত

0
107
কালবৈশাখী ঝড়ে বিধ্বস্ত

সারাদেশে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কালবৈশাখী ঝড়ে ৯ জেলায় গাছ চাপা পড়ে ও বজ্রপাতে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।

রোববার (৭ এপ্রিল) আরটিভির প্রতিনিধিদের পাঠানো সংবাদ থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

খুলনা : জেলার ডুমুরিয়া উপজেলায় সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বজ্রপাতে মো. ওবায়দুল্লাহ গাজী (২৯) নামের একজন নিহত হয়েছেন। নিহত ওবায়দুল্লাহ গাজী ওই গ্রামের মো. দেলোয়ার হোসেন গাজীর ছেলে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ডুমুরিয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুকান্ত কুমার সাহা।

বাগেরহাট : ঝড়ের তাণ্ডবে গাছ পড়ে ও বজ্রপাতে একজন নিহত এবং ১০ জন আহত হয়েছেন। সকাল ৯টা ৪০ থেকে ১০ টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত চলা ঝড়ে অন্তত দেড় শতাধিক ঘর-বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নিহত ব্যক্তি কচুয়া উপজেলার। এ খবর নিশ্চিত করেছেন জেলা প্রশাসক মো. খালিদ হোসেন।

যশোর : জেলার ঝিকরগাছা উপজেলায় সকালে ধান ক্ষেতে কাজ করতে গিয়ে বজ্রপাতে আব্দুল মালেক পাটোয়ারী (৬০) নামে এক কৃষক নিহত হয়েছেন। তিনি উপজেলার বড়পোদাউলিয়া গ্রামের মৃত ওমর আলি পাটোয়ারীর ছেলে। ঝিকরগাছার শংকরপুর ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য পোদাউলিয়া গ্রামের জাহান আলি বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

পিরোজপুর : সকালে পিরোজপুরে ১৫ মিনিটের কালবৈশাখী ঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে পৌরসভার পালপাড়া ও সদর উপজেলার শারিকতলা ডুমরিতলাসহ বেশ কয়েকটি গ্রাম। এতে নলবুনিয়া গ্রামের খালে পড়ে মৃত কানাই লাল পালের ছেলে অনিল পাল (৮২) ও শারিকতলা ইউনিয়নের মরিচাল গ্রামে ঘরের ওপর গাছ চাপা পড়ে রুবী বেগম (২২) নামে এক নারী নিহত হন। এসময় তার শিশু কন্যা গুরুতর আহত হলে তাকে খুলনায় চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে। পিরোজপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমান এ খবর নিশ্চিত করেছেন।

ভোলা : কালবৈশাখী ঝড়ে তছনছ হয়ে গেছে ভোলার লালমোহন উপজেলার বিভিন্ন এলাকার বহু ঘর-বাড়ি। রোববার বেলা ১১টা থেকে ১২ টা পর্যন্ত ঝড়ে লালমোহন উপজেলার বদরপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে ঘর চাপা পড়ে হারিছ আহমেদ (৭০) ও বজ্রপাতে উপজেলার চরভূতা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের চরলেঙুটিয়া গ্রামে মো. বাচ্চু নামে (৩৫) এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া ঝড়ে দুই শতাধিক ঘর-বাড়ির ক্ষতি হয়েছে। লালমোহন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. তৌহিদুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

পটুয়াখালী : পটুয়াখালীর বাউফলে কালবৈশাখী ঝড়ের সময় বজ্রপাতে রাতুল (১৪) নামের এক কিশোর ও গাছ চাপায় সুফিয়া বেগম (৮৫) নামের এক বৃদ্ধা ও ইব্রাহিম ফরাজী (৪৩) নামে এক জেলে নিহত হয়েছেন। রাতুলের বাড়ি উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের রায় তাঁতের কাঠি গ্রামে। আর সুফিয়া বেগমের বাড়ি উপজেলার দাশপাড়া ইউনিয়নের চরআলগী গ্রামে। ইব্রাহিম ফরাজী (৪৩) চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের মান্নান ফরাজীর ছেলে। রোববার সকাল সাড়ে ১০টা থকে ১১টা ৫ মিনিট পর্যন্ত ৩৫ মিনিট স্থায়ী এ ঝড়ে কাঁচা বাড়ি-ঘর, গাছ গাছালি উপরে গেছে। বাউফলের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রায় শতাধিক আধাপাকা বাড়ি বিধ্বস্ত ও কয়েক হাজার গাছগাছালি উপরে পড়ার খবর পাওয়া গেছে। এ সময় ব্যাপক শিলাবৃষ্টি ও বিরামহীনভাবে বজ্রপাত হয়েছে। বাউফল পৌর শহরের থানার সামনে ছালেহিয়া ফাজিল মাদরাসার একটি ভবনের টিনের চালা উপড়ে রাস্তায় পরে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। উপজেলা নির্বাহী অফিসার বশির গাজী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

রাঙামাটি : জেলার রাজস্থলী উপজেলায় বজ্রপাতে সাজেউ খিয়াং (৪৮) নামে একজন নিহত গেছেন। রোববার (৭ এপ্রিল) বিকেলে এ বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে। সাজেউ খিয়াং রাজস্থলী উপজেলার ১নং ঘিলাছড়ি ইউনিয়নের ধনুছড়ি পাড়া গ্রামের অংসাউ খিয়াং এর ছেলে। রাজস্থলী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকবাল হোসেন বজ্রপাতে যুবকের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

ঝালকাঠি : জেলার দুই উপজেলায় ঝড়ের সময় মাঠে গরু আনতে গিয়ে বজ্রপাতে দুই নারী ও এক কিশোরীর মৃত্যু হয়েছে। মৃতরা হলেন, কাঁঠালিয়া উপজেলার আওরাবুনিয়া ইউনিয়নের মুন্সিরাবাদ গাজীবাড়ি এলাকার মৃত আলম গাজীর স্ত্রী গৃহিনী হেলেনা বেগম, সদর উপজেলার শেখেরহাট এলাকার ফারুক হোসেনের স্ত্রী গৃহিনী মিনারা বেগম ও পোনাবালিয়া এলাকার মো. বাচ্চুর মেয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী মাহিয়া আক্তার ঈশান। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঝালকাঠির পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আফরুজুল হক টুটুল।

নেত্রকোণা : জেলার খালিয়াজুরী উপজেলার হাওরে বেলা পৌনে ১২টার দিকে বজ্রপাতে শহীদ মিয়া (৫২) নামে এক কৃষক নিহত হয়েছেন। তিনি উপজেলার মেন্দীপুর ইউনিয়নের জগন্নাথপুর গ্রামের কফিল উদ্দিনের ছেলে। নিহতের ভাই স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.