রাঙ্গামাটি রাজবন বিহারে দীর্ঘ পাঁচ বছর পর আজ আবারও সংঘসুত্র শোনা হলো মহাসমারোহে। সাধনানন্দ মহাস্থবির বনভন্তের নিদের্শ মোতাবেক রাজবন বিহারের তাঁর অন্যতম শিষ্য জ্ঞান প্রিয় মহাস্থবির ভান্তের উপস্থিতিতে এই মহৎ দান কার্য সম্পাদন করা হয়।
১৯৯১ সালের ঘুর্ণিঝরের পরে এই আধ্যাতিক ভিক্ষু বনভন্তে সংঘসুত্র সারারাত ব্যাপী শোনার জন্য নিদের্শ দেন। এই সুত্রপাত ও শ্রবণে অপদেবতাগণের উৎপাত ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ হতে রক্ষা পাওয়া যায় বলে তিনি বর্ণনা করেন। যারা এই সুত্রপাতের আয়োজন করেন ও সুত্রপাত করেন উভয়ের মঙ্গল সাধিত হয়। এই দ্বারা দেব মনুষ্যগণ সম্পদ শালী হয় ও সুখী হয়।
সেই ধারাবাহিকতা রক্ষার্থে রাজবন বিহারে বনভন্তের প্রধান উপাসিকা শ্রদ্ধাবতি রুচিরা মা ( সমীরা দেওয়ান) এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন।
সুত্রপাতের পূর্বে জ্ঞানপ্রিয় মহাস্থবির ভান্তে বলেন, সাধনানন্দ মহাস্থবি বনভন্তে কয়েকটি জিনিস দেখিয়ে গেছেন। প্রথমত, কিভাবে ধ্যান বা ভাবনা করতে হয়, দ্বিতীয়ত, সারারাত ব্যাপী সুত্রপাত, তৃতীয়ত, ত্রিপিটক পূজা বা শোভাযাত্রা, চতুর্থ, মহাসংঘদান, পঞ্চম, আকাশ প্রদীপ প্রজ্জল/উত্তোলন ইত্যাদি। সুত্রপাতের ফলে বা শ্রদ্ধাসহকারে শ্রবণ করলে ক্ষেত বা ফসলের ফলন ঘটে, মানুষ ধনী হয়।
তিনি আরো বলেন আগামী ৩ডিসেম্ববরের পরিবর্তে ত্রিপিটক পূজা ৫ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। একটি বৃক্ষের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন আরো বলেন, মাঝে মাঝে বৃক্ষের পাতা ওষধ হিসেবে কাজে লাগে, মাঝে মাঝে বৃক্ষের ফল ওষধ হিসেবে কাজে লাগে, মাঝে মাঝে বৃক্ষের কান্ড ওষধ হিসেবে কাজে লাগে, মাঝে মাঝে বৃক্ষের শেখর ওষধ হিসেবে কাজে লাগে। তাই ত্রিপিটক পূজাও বর্তমান সময়ের প্রয়োজনে তা করতে হবে।
কয়েক হাজার পূণ্যার্থীদের উপস্থিতিতে সংঘসুত্র পাত অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয় রাঙ্গামাটি রাজবন বিহারে। আজ প্রায় ৩ ঘন্টা যাবৎ ভিক্ষসংঘগণ বুদ্ধে পবিত্র মুখনিঃসৃত বাণী পাঠ করেন। ৫০জন ভিক্ষু এই সুত্রপাতে অংশ গ্রহন করেন।
পরিত্রান পাঠ করেন রুচিরামা (সমীরা দেওয়ান), সঞ্চালনায় বিজ্ঞান্তর তালুকদার ও প্লেন্টি চাকমা, ড্যকুমেন্টেশন করেন মহাবীর চাকমা। সার্বিক সহযোগিতায় এফআইটিভি ও প্রভাত আলো সদস্যবৃন্দ ও ধর্মপদ ফাউন্ডেশন।