৫০ লাখ টাকার এই শাড়ি নাম তুলেছে গিনেস বুকে

0
218
শাড়িটি এখন কিনতে গেলে আপনার পকেট থেকে চলে যাবে প্রায় ১ কোটি টাকা, ছবি: ফেসবুক থেকে

শাড়িটি কেন এত দামি?

প্রথমত, এই শাড়িতে ভারতীয় চিত্রকর রাজা রবি বর্মার ১১টি জনপ্রিয় পেইন্টিং নতুন করে তোলা হয়েছে। দ্বিতীয়ত, এখানে বিভিন্ন দামি পাথর ব্যবহার করা হয়েছে। তৃতীয়ত, শাড়িটি চেন্নাই সিল্কের, খুবই দামি সুতায় বোনা। চতুর্থত, দীর্ঘ সময় ধরে অনেক দক্ষ কারিগর, বুননশিল্পী ও চিত্রশিল্পীরা মিলে শাড়িটি তৈরি করেছেন। ফলে শাড়ির মূল্যের সঙ্গে তাঁদের মজুরিও যোগ হয়েছে।

এই সেই শাড়ি
এই সেই শাড়ি, ছবি: ফেসবুক থেকে

‘দ্য হিস্ট্রি অব ইন্ডিয়ান আর্ট’–এ রাজা রবি বর্মাকে ভারতের সর্বকালের সেরা চিত্রশিল্পীদের একজন হিসেবে গণ্য করা হয়। তাঁর মৃত্যুর ১০০ বছর উপলক্ষে ২০০৬ সালে শাড়িটি তৈরির উদ্যোগ নেয় দক্ষিণ ভারতের তামিলনাড়ুর ভেলোরের জনপ্রিয় ব্র্যান্ড দ্য চেন্নাই সিল্ক। শাড়িটিতে ভারতের ঐতিহ্যের প্রতিনিধিত্ব করে এমন ১১টি চিত্র আঁকা হয়। মূল ছবিটি ছিল আঁচলে, ‘দ্য গ্যালাক্সি অব মিউজিশিয়ানস’।

শাড়িটিতে আরও ছিল ৫৯ গ্রাম ৭০০ মিলিগ্রাম সোনা, ৩ ক্যারেট ৯১৩ সেন্ট হীরা, ১২০ মিলিগ্রাম প্লাটিনাম, ৫ গ্রাম রুপা, ২ ক্যারেট ৯৮৫ সেন্ট রুবি, ৩৫ সেন্ট পান্না, ৩ সেন্ট পোখরাজ, ৫ ক্যারেট নীলা, ১৪ সেন্ট ক্যাট আই স্টোন, ১০ সেন্ট টোপাজ স্টোন, ২ গ্রাম মুক্তা ও ৪০০ মিলিগ্রাম প্রবাল।

শাড়িটি এখন কিনতে গেলে আপনার পকেট থেকে চলে যাবে প্রায় ১ কোটি টাকা
শাড়িটি এখন কিনতে গেলে আপনার পকেট থেকে চলে যাবে প্রায় ১ কোটি টাকাছবি: ফেসবুক থেকে

শাড়িটি তৈরি করতে সময় লেগেছে ৪ হাজার ৭৬০ ঘণ্টা। সব মিলিয়ে শাড়িটির ওজন হয়েছিল ৮ কেজি। শাড়িটির ডিজাইন করেন চেন্নাই সিল্কের পরিচালক এস কার্থি। চেন্নাই সিল্কের সিল্ক সেকশনের ফ্লোর হেড রমেশ রাজা জানান, শাড়িটিতে ৯ ধরনের ভারতীয় ঐতিহ্যবাহী রত্ন বা নবরত্ন ব্যবহার করা হয়েছে। এ ছাড়া সোনা, রুপা আর হীরাও ব্যবহার করা হয়েছে। শাড়িটি কাতারের একজন ব্যবসায়ী তাঁর হবু স্ত্রীর জন্য কিনেছিলেন। তিনি তাঁর পরিচয় জানাতে চাননি।

পরের বছর এই একই রকম শাড়ির আরেকটা অর্ডার আসে, বেঙ্গালুরুর একজন ব্যবসায়ী দ্বিতীয় শাড়িটি কেনেন, তাঁর বিয়ের দশম বার্ষিকীতে স্ত্রীকে উপহার দেওয়ার জন্য। অর্থাৎ বিশ্বে এই শাড়ি মাত্র দুটি রয়েছে। দুটিই ৩৯ লাখ ৩১ হাজার রুপি বা প্রায় ৫০ লাখ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

শাড়ির আঁচলে ‘দ্য গ্যালাক্সি অব মিউজিশিয়ানস’
শাড়ির আঁচলে ‘দ্য গ্যালাক্সি অব মিউজিশিয়ানস’, ছবি: ফেসবুক থেকে

শাড়ির আঁকা ছবিতে ১৬টি রঙের ৬৪টি শেড ব্যবহার করা হয়েছে। শাড়ির ডিজাইনে ব্যবহার করা হয়েছে ক্যাড সফটওয়্যার। ৩৬ জন দক্ষ বুননশিল্পী শাড়িটি বানিয়েছেন। প্রথম শাড়িটি সম্পূর্ণ করতে প্রায় দুই বছর লাগলেও দ্বিতীয়টি বানাতে লেগেছে ১ বছর ৪ মাস। ভারতের এই শাড়িটি ২০০৮ সালেই বিশ্বের সবচেয়ে দামি শাড়ি হিসেবে নাম তুলেছে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে। মজার ব্যাপার হলো, এই শাড়িটি যদি আপনি এখন কিনতে চান, তাহলে এক কোটির কমে পাবেন না।

সূত্র: বিগ শাড়িজ ও ডিএনএ ইন্ডিয়া

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.