‘দুর্নীতির আখড়া এসেনশিয়াল ড্রাগস: সরকারি অডিটে ৩২ অনিয়ম, ৪৭৭ কোটি টাকা লোপাট’ শিরোনামে দৈনিক মানবজমিনে গতকাল শনিবার প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়। আদালতে প্রতিবেদনটি পড়ে শোনান ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন। সঙ্গে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আন্না খানম।
প্রতিবেদন উপস্থাপনের একপর্যায়ে আদালত বলেন, অনৈতিক পন্থায় বড় ধরনের অনিয়ম দেখা যাচ্ছে। দুর্নীতিবাজ কিছু লোক সিন্ডিকেট তৈরি করে দুর্নীতি করেছে। অবৈধভাবে অর্থ আত্মসাৎ করেছে। ৪৭৭ কোটি টাকা আত্মসাতের বিষয়টি সরকারি নিরীক্ষায় চিহ্নিত করা হয়েছে। ৩২ ধরনের অনিয়মের ঘটনা ঘটেছে।
পরে আদালত রুলসহ আদেশ দেন। অনৈতিক পন্থায় ও বড় ধরনের অনিয়মের মাধ্যমে এসেনশিয়াল ড্রাগস থেকে বিপুল অর্থ আত্মসাতে জড়িত ব্যক্তি বা সত্তার বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ নিতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা-ব্যর্থতা কেন বেআইনি হবে না, রুলে তা জানতে চাওয়া হয়েছে। অর্থ আত্মসাতের মাধ্যমে দুর্নীতির অপরাধ সংঘটনে জড়িত ব্যক্তি ও সত্তার বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি পদক্ষেপসহ কার্যক্রম শুরু করতে কেন প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হবে না, রুলে তা–ও জানতে চাওয়া হয়েছে।
দুদক, এসেনশিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, স্বাস্থ্যসচিব ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। আগামী ১৪ মে পরবর্তী শুনানির জন্য তারিখ রেখেছেন আদালত।
আদালত বলেছেন, কোনো ব্যক্তি ও সত্তার বিরুদ্ধে এই দুর্নীতিতে জড়িত থাকার প্রাথমিক সত্যতা পেলে তাঁদের বিরুদ্ধে যেকোনো আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষেত্রে বিবাদীদের স্বাধীনতা থাকবে।
প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, এসেনশিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেড (ইডিসিএল) শতভাগ সরকারি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান। রাজধানীর তেজগাঁওয়ে অবস্থিত প্রতিষ্ঠানটিতে সরকারি অডিটেই আর্থিক বড় দুর্নীতির চিত্র উঠে এসেছে। ২০২০-২১ অর্থবছরের অডিট প্রতিবেদনে ৩২টি গুরুতর অনিয়মে সরকারি ৪৭৭ কোটি ৪১ লাখ ৯১ হাজার ৩৭৮ টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে প্রতিষ্ঠানটিতে। স্বাস্থ্য অডিট অধিদপ্তরের নিরীক্ষায় যেসব অনিয়ম ধরা পড়েছে, তার মধ্যে আছে নিয়োগ–বাণিজ্য, টেন্ডার–বাণিজ্য, ব্যবহৃত কাঁচামালের চেয়ে ওষুধ উৎপাদন কম দেখানো, উৎপাদিত ওষুধে সঠিক মাত্রায় কাঁচামাল ব্যবহার না করে গুণগত মানের ওষুধ উৎপাদন না করা, কনডম প্রস্তুতে কাঁচামালের ঘাটতি, বনভোজনের নামে ভ্রমণ ভাতা, করোনাকালে ক্যানটিন বন্ধ থাকলেও প্রাপ্যতা না হওয়া সত্ত্বেও কর্মকর্তা-কর্মচারী-শ্রমিকদের অনিয়মিতভাবে ক্যানটিনে সাবসিডি প্রদানের নামে টাকা আত্মসাৎ।