বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক পাসের পর ২০১৯ সাল থেকে বিসিএসের প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেন শানিরুল ইসলাম শাওন। সফলতা পেতে খুব বেশি অপেক্ষা করতে হয়নি। নিজের প্রথম বিসিএসেই পেয়ে যান সফলতা। ৪১তম বিসিএসে পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশ পেয়ে নিয়োগের অপেক্ষায় থাকা শানিরুল ইসলাম এবার ৪৩তম বিসিএসে প্রশাসন ক্যাডারে প্রথম হয়েছেন।
বর্তমানে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকে সিনিয়র অফিসার শানিরুল ইসলাম। অন্যান্য দিনের মতো গতকাল মঙ্গলবারও (২৬ ডিসেম্বর) ব্যাংকে ছিলেন। ৪৩তম বিসিএসের ফলাফলের খবর শুনে সরকারি কর্ম কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে নিজের রেজিস্ট্রেশন নম্বর খুঁজতে থাকেন। কিন্তু প্রথমেই নিজের রেজিস্ট্রেশন নম্বর দেখতে পাবেন, এটা কল্পনাও করেননি বলে জানান শানিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘প্রথমে নিজের রেজিস্ট্রেশন নম্বর দেখে বিশ্বাস হচ্ছিল না। কয়েকবার মেলানোর পর নিশ্চিত হয়েছি।’
শানিরুল ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের চাকরি পছন্দের। পরিবারের ইচ্ছায় অনুপ্রাণিত হয়ে পরিবার-প্রিয়জনের স্বপ্ন পূরণের জন্য স্নাতক পাসের পর বিসিএসকে আমার ধ্যানজ্ঞান বানিয়ে চাকরি–যুদ্ধে নেমে পড়ি। ভালোভাবে বিসিএসের প্রস্তুতি নিতে পারলে অন্যান্য সরকারি চাকরির প্রস্তুতি নেওয়া সহজ হয়। বিসিএসের জন্য গোছানো প্রস্তুতি থাকায় দুটি বিসিএসসহ এখন পর্যন্ত ছয়টি চাকরির সুপারিশ পেয়েছি।’
পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডে প্রথম চাকরির জন্য সুপারিশ পান শানিরুল ইসলাম, দ্বিতীয় চাকরি পান প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকে সিনিয়র অফিসার পদে, তৃতীয় চাকরি জনতা ব্যাংকে সিনিয়র অফিসার পদে, চতুর্থ চাকরির সুপারিশ পান প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে, পঞ্চম চাকরির সুপারিশ পান ৪১তম বিসিএসে পুলিশ ক্যাডারে এবং সর্বশেষ গতকাল ৪৩তম বিসিএসে প্রশাসন ক্যাডারে প্রথম স্থান অর্জন করে হয়ে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন।
প্রতিটি বিসিএসের বিজ্ঞপ্তিতে লেখা থাকে, ‘যথাযথ প্রস্তুতি ও নির্দেশনার আলোকে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করুন এবং নির্বাচিত হয়ে দেশসেবার পবিত্র দায়িত্ব পালনের সুযোগ লাভ করুন।’ দেশসেবার পবিত্র সুযোগ লাভের কথাটি শানিরুলকে বিসিএসের প্রতি অনুপ্রাণিত করে বলে জানান।
২০১৯ সালের আগস্ট মাস থেকে ঢাকায় মেসে থেকে বিসিএসের প্রস্তুতি শুরু করেন। কিন্তু এরপর করোনায় সবকিছু বন্ধ হয়ে গেলে গ্রামের বাড়ি হবিগঞ্জে চলে যান। বাসায় নিজে নিজেই সব বিষয়ের প্রস্তুতি শুরু করেন। শানিরুল ইসলাম বলেন, ‘বাজারে প্রচলিত বইগুলো থেকে নিজের পছন্দ অনুযায়ী বই কিনে পড়া শুরু করি। “এক বই বারবার পড়া” এই নীতিটা জরুরি। আগের বিসিএসগুলোর প্রশ্ন ও অন্যান্য চাকরির প্রশ্ন জব সল্যুশন থেকে একাধিকবার পড়েছি। নিয়মিত ভোকাবুলারি অনুশীলন করেছি। কারণ এগুলো সহজে মনে থাকতে চায় না।’
নতুন যেসব প্রার্থী বিসিএসের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন, তাঁদের উদ্দেশে শানিরুল ইসলাম বলেন, ‘বিসিএসের বিশাল সিলেবাস দেখে ঘাবড়ে যাবেন না। ছোট ছোট ধাপে প্রস্তুতি শুরু করুন, প্রাথমিক সাফল্যগুলো নিজের আত্মবিশ্বাস কয়েকগুণে বাড়িয়ে দেবে। মন দিয়ে চেষ্টা করুন, পরীক্ষার হলে সবকিছু পরিকল্পনা অনুযায়ী না হলে ঘাবড়ে যাওয়া যাবে না। নিজের প্রতি বিশ্বাস রেখে এগিয়ে যেতে হবে।’