মহামারি কোভিড–১৯, বিশ্বজুড়ে দৈনন্দিন ব্যয় বেড়ে যাওয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ২০২০ সাল থেকে চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত নতুন করে দরিদ্রের তালিকায় যুক্ত হবেন বিশ্বের সাড়ে ১৬ কোটি মানুষ। বৃহস্পতিবার এ তথ্য প্রকাশ করে উন্নয়নশীল দেশগুলোর ঋণ পরিশোধ কার্যক্রম সাময়িক স্থগিতের আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংসের উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি)।
ইউএনডিপি পরিচালিত এক গবেষণায় উঠে এসেছে, নতুন করে দারিদ্যের শিকার সাড়ে ১৬ কোটি মানুষের মধ্যে অতি দারিদ্র সীমানায় অন্তর্ভুক্ত হবেন সাড়ে ৭ কোটি মানুষ। দিনে যাদের আয় ২ দশমিক ১৫ মার্কিন ডলারের (২৩৩ টাকা) চেয়েও কম। এছাড়া নতুন করে দারিদ্র্য সীমায় নেমে যাওয়া মানুষের সংখ্যা দাঁড়াবে ৯ কোটিতে। দিনে যাদের আয় ৩.৬৫ মার্কিন ডলারের (৩৯৫ টাকা) বেশি নয়।
ইউএনডিপির প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, সবচেয়ে দরিদ্র মানুষই উল্লেখিত অভিঘাতের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ২০২৩ শেষেও এসব মানুষ কোভিড–১৯ মহামারীর আগে তাদের আয়ের অবস্থায় ফিরতে পারবে না।
এক বিবৃতিতে ইউএনডিপির প্রধান আখিম স্টেইনার জানান, গত ৩ বছর ধরে যেসব দেশ সামাজিক সুরক্ষা খাতে বিনিয়োগ করেছে সেসব দেশ বিশাল সংখ্যক জনগোষ্ঠীকে দারিদ্র সীমায় অবনমন থেকে রক্ষা করতে পেরেছে। তুলনামুলকভাবে উচ্চমাত্রায় ঋণগ্রস্ত দেশগুলো তাদের জনগোষ্ঠীর সামাজিক সুরক্ষা খাতে ততটা ব্যয় করতে পারেনি। কারণ উচ্চমাত্রায় ঋণের সঙ্গে সামাজিক খাতে অপ্রতুল অর্থ ব্যয়ের একটি সম্পর্ক রয়েছে। এ কারণেই উচ্চ মাত্রায় ঋণগ্রস্ত দেশগুলোতে নতুন করে দারিদ্র সীমায় নেমে যাওয়া জনগোষ্ঠীর হার আশঙ্কাজনক বেশি।
বুধবার জাতিসংঘের প্রকাশিত অপর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রায় ৩.৩ বিলিয়ন মানুষ– যেটা বিশ্বের মোট মানবগোষ্ঠীর প্রায় অর্ধেক– এমন দেশসমূহে বসবাস করে যেসব দেশ বাজেটে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে যে পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ করে। তার চেয়ে বেশি অর্থ বরাদ্দ রাখে তাদের ঋণ পরিশোধে।