৩ কোটি টাকা, ব্যক্তিগত উড়োজাহাজসহ আরও যা যা পান একজন মিস ইউনিভার্স

0
12
মিস ইউনিভার্স ২০২৩ হন নিকারাগুয়ার শেনিস পালাসিয়াস, ছবি: এএফপি

মিস ইউনিভার্স বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ সৌন্দর্য প্রতিযোগিতার মধ্যে অন্যতম। এই প্রতিযোগিতা বিজয়ীদের জীবন সম্পূর্ণভাবে বদলে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। বার্ষিক আন্তর্জাতিক সৌন্দর্য প্রতিযোগিতাটি পরিচালনা করে থাইল্যান্ড ও মেক্সিকোভিত্তিক ‘মিস ইউনিভার্স অর্গানাইজেশন’। এর চূড়ান্ত পর্বের সরাসরি সম্প্রচার থেকে শুরু করে পরবর্তী এক বছরে প্রায় ৫০ কোটির বেশি বার দেখা হয়। ফলে এই প্রতিযোগিতা ইতিহাসের অন্যতম সর্বাধিক দেখা জনপ্রিয় বিউটি প্যাজেন্ট।

থাইল্যান্ডের ব্যাংকক ও ফুকেটে চলছে মিস ইউনিভার্সের ৭৪তম আসর। সেখানে ইতিমধ্যে আলোচনায় আছেন মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশ তানজিয়া জামান মিথিলা। মিস ইউনিভার্সের বার্ষিক বাজেট ১০০ মিলিয়ন ডলার। বিজয়ী হওয়ার পরবর্তী এক বছর মিস ইউনিভার্সের সব খরচ বহন করে মিস ইউনিভার্স কর্তৃপক্ষ। চলুন দেখে নেওয়া যাক, প্রতিযোগিতার বিজয়ী কী পান।

১. নগদ টাকা

মিস ইউনিভার্সকে এক বছরের বেতন হিসেবে নগদ আড়াই লাখ ডলারের চেক দেওয়া হয়, টাকার অঙ্কে যা ৩ কোটির বেশি।

মিস ইউনিভার্সকে এক বছরের বেতন হিসেবে নগদ আড়াই লাখ ডলারের চেক দেওয়া হয়, টাকার অঙ্কে যা ৩ কোটির বেশি
মিস ইউনিভার্সকে এক বছরের বেতন হিসেবে নগদ আড়াই লাখ ডলারের চেক দেওয়া হয়, টাকার অঙ্কে যা ৩ কোটির বেশি, ছবি: পেক্সেলস

২. নিউইয়র্কে বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট

মিস ইউনিভার্সের বিজয়ীকে এক বছর যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটি মিস ইউনিভার্স সংগঠনের বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্টে থাকতে দেওয়া হয়। অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রের মিস ইউনিভার্সের বিজয়ীরা সেখানে পাকাপাকিভাবে থাকার সুযোগ পান।

৩. ব্যক্তিগত উড়োজাহাজ

মিস ইউনিভার্স বিজয়ীকে পরবর্তী এক বছর বাজার করা, রান্না, খাওয়া, পোশাক, প্রসাধনসামগ্রী বা অন্য কোনো কিছু নিয়ে চিন্তা করতে হয় না। একটি ব্যক্তিগত উড়োজাহাজ দেওয়া হয়।

সেটিতে করে তিনি বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে ঘুরে বেড়াতে পারেন। আগে থেকে কেবল মিস ইউনিভার্স কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে অনুমোদন নিতে হয়। প্রতিটি সফরের হোটেল খরচ, খাওয়া, ফটোশুট বা প্রেস মিটিংয়ের আয়োজন করে মিস ইউনিভার্স কর্তৃপক্ষ।

২০১৮ সালে মিস ইউনিভার্স হওয়ার পর দেশের মাটিতে পা রাখার মুহূর্তে ফিলিপাইনের ক্যাটরিওনা গ্রে
২০১৮ সালে মিস ইউনিভার্স হওয়ার পর দেশের মাটিতে পা রাখার মুহূর্তে ফিলিপাইনের ক্যাটরিওনা গ্রে, ছবি: উইকিমিডিয়া কমনস

তবে শর্ত থাকে যে যেখানেই যান না কেন, মিস ইউনিভার্সের পক্ষ থেকে কিছু দাতব্য কাজে অংশ নিতে হবে। এর বাইরে মিস ইউনিভার্সের বিজয়ী ব্যক্তিগতভাবে কোনো কনসার্ট, ইভেন্ট, ফ্যাশন শো, অ্যাওয়ার্ড শো, পার্টি বা সিনেমার প্রদর্শনীতে যেতে চাইলেও মিস ইউনিভার্স কর্তৃপক্ষ সব ব্যবস্থা করে দেয়।

এককথায়, বিজয়ী হওয়ার পরবর্তী এক বছর মিস ইউনিভার্স স্বপ্নের মতোই জীবনযাপনের সুযোগ পান।

মিস ইউনিভার্স কি মুকুটটি রেখে দিতে পারেন

২০২২ সালে মিস ইউনিভার্সের বিজয়ীর জন্য উন্মোচন করা হয় নতুন মৌওয়াদ মুকুট, এর নাম ‘ফোর্স অব গুড’
২০২২ সালে মিস ইউনিভার্সের বিজয়ীর জন্য উন্মোচন করা হয় নতুন মৌওয়াদ মুকুট, এর নাম ‘ফোর্স অব গুড’ছবি: এএফপি

৭৪ বছরে ৯ বার মিস ইউনিভার্স বিজয়ীর মুকুটের নকশা বদলেছে। ২০২২ সালে নতুন একটি প্রতিষ্ঠান সংগঠনটির একটা বড় শেয়ার কিনে নেওয়ার পর লেবানিজ লাক্সারি ব্র্যান্ড ‘মৌওয়াদ জুয়েলারি’র সঙ্গে মিস ইউনিভার্সের চুক্তি নবায়ন হয়।

মিস ইউনিভার্সের বিজয়ীর জন্য উন্মোচন করা হয় নতুন মৌওয়াদ মুকুট। এর নাম ‘ফোর্স অব গুড’। এই মুকুটে ছিল ১১০ ক্যারেট নীলকান্তমণি ও ৪৮ ক্যারেট সাদা হীরা। মৌওয়াদের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, মুকুটটির মূল্য প্রায় ৫ দশমিক ৭৫ মিলিয়ন ডলার বা ৬৭ কোটি ১৭ লাখ টাকা।

২০২৪ সালের মিস ইউনিভার্সের মুকুটটির নাম ছিল ‘লুমিয়ের দে আফিনি’
২০২৪ সালের মিস ইউনিভার্সের মুকুটটির নাম ছিল ‘লুমিয়ের দে আফিনি’ ছবি: এএফপি

২০২৪ সালের মিস ইউনিভার্সের মুকুটটির নাম ছিল ‘লুমিয়ের দে আফিনি’। তৈরি করেছিল ফিলিপাইনভিত্তিক জুয়েলারি ব্র্যান্ড ‘জুয়েলমার’। পুরোপুরি হাতে তৈরি মুকুটটিতে ব্যবহার করা হয়েছিল ফিলিপাইনের জাতীয় রত্ন হিসেবে পরিচিত দুর্লভ সোনালি মুক্তা। এর কেন্দ্রে ছিল একটি বড় সোনালি মুক্তা আর চারপাশে আরও ২২টি সোনালি মুক্তা, সঙ্গে ছিল বেশ কিছু প্রাকৃতিক হীরকখণ্ড।

এবার আসি প্রশ্নের উত্তরে। মিস ইউনিভার্স কি আজীবন এই মুকুট নিজের কাছে রেখে দিতে পারেন? উত্তর হলো, ‘না’। তিনি কেবল এক বছরের জন্য মুকুটটি নিজের কাছে রাখতে পারেন। পরের বছর তিনি নতুন বিজয়ীর মাথায় মুকুটটি পরিয়ে দেন।

তবে মিস ইউনিভার্সের বিজয়ীকে পাকাপাকিভাবে একটি রেপ্লিকা মুকুট দেওয়া হয়। রেপ্লিকা বলে সেটির দামও নেহাত কম নয়, ১৫–২০ হাজার ডলার বা ১৮–২৪ লাখ টাকা।

মিস ইউনিভার্স নারীদের দ্বারা, নারীদের জন্য পরিচালিত একটি বৈশ্বিক প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করে যাবে। এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিশ্বের নানা প্রান্তের নারীদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন, আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি এবং নেতৃত্ব উন্নয়নে সহায়তা করা হয়। আমাদের লক্ষ্য সামাজিক অন্তর্ভুক্তি, লিঙ্গসমতা ও পরিবেশগত স্থায়িত্বের পথে আরও বেশি মানুষকে যুক্ত করা। আমরা সৌন্দর্যের ধারণাকে প্রতিনিয়ত সম্প্রসারিত করতে চাই। একটা দেশের বিজয়ী নারীকে এমনভাবে ক্ষমতায়িত করি, যাতে তিনি সারা বিশ্বের প্রান্তিক নারীদের আত্মবিশ্বাসের শক্তিতে বলিয়ান হয়ে উঠতে সাহায্য করতে পারেন।

মারিও বুকারো, মিস ইউনভার্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা

সূত্র: ওলা ও মিস ইউনিভার্স

জিনাত শারমিন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.