ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল করে জম্মু-কাশ্মিরকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ঘোষণার সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে পিটিশন দায়ের করা হয়েছে।
মঙ্গলবার ভারতের সর্বোচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হন এম.এল শর্মা নামের এক আইনজীবী। খবর ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের।
তার দাবি, এ ব্যাপারে যে পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়েছে, তা ‘অসাংবিধানিক’। জরুরি ভিত্তিতে ওই মামলার শুনানির আবেদনও করেছেন শর্মা।
সোমবার ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিলের মধ্য দিয়ে কাশ্মিরের স্বায়ত্তশাসনের অধিকার কেড়ে নেয় বিজেপি সরকার। সেইসঙ্গে জম্মু-কাশ্মিরের প্রশাসনিক ব্যবস্থাকে রাজ্য থেকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত করতে রাজ্যসভায় বিল পাস করে বিজেপি সরকার। পরদিন লোকসভায়ও পাস হয় বিলটি।
জম্মু-কাশ্মির পুনর্গঠন বিল ২০১৯ নামের এ বিলের আওতায় জম্মু-কাশ্মিরকে দু’ভাগ করে জম্মু-কাশ্মির ও লাদাখ হবে পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল।
৩৭০ ধারা অনুসারে কাশ্মীর সরকারের অনুমোদন ছাড়া ধারাটি বাতিলের অধিকার ছিল না ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের। কিন্তু গত এক বছর ধরে সেখানে কার্যত কোনো রাজ্য সরকার নেই। গত বছরের জুনে রাজ্যটির তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতির সরকার সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারালে সেখানে রাজ্যপালের শাসন চালু করে কেন্দ্রীয় সরকার। অর্থাৎ, বিজেপি সরকারের জন্য কেবল তাদের নিয়োগ দেওয়া রাজ্যপালের অনুমতি নেওয়াই যথেষ্ট ছিল।
এম.এল শর্মা তার যুক্তিতে বলেন, ৩৭০ ধারা খারিজ করতে গেলে জম্মু-কাশ্মীরের বিধানসভায় তা নিয়ে আলোচনা করতে হতো। কিন্তু, তা না করেই একতরফাভাবে ওই অনুচ্ছেদ বাতিল করা হয়েছে।
তবে বিজেপি সরকার জানিয়েছে, ৩৭০ ধারা অস্থায়ী। তা যেকোনো সময় রদ হয়ে যেতে পারে। আর সেই ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে রাষ্ট্রপতিকেই। জম্মু-কাশ্মীরে এখন আর বিধানসভা নেই। সেখানে রাষ্ট্রপতির শাসন চলছে। তাই রাষ্ট্রপতি ওই নির্দেশিকা জারি করেছেন।
গত সপ্তাহ থেকেই জম্মু-কাশ্মীরে অতিরিক্ত আধা সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। শুক্রবার সরকারের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, অমরনাথের তীর্থযাত্রী ও পর্যটকদের দ্রুত রাজ্য ছেড়ে চলে যেতে হবে। ওই ঘোষণার পরেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে রাজ্যে।
সোমবার রাতে পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় বিল পাসের পর জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মহেবুবা মুফতি ও ওমর আবদুল্লাকে গ্রেফতার করা হয়। উপত্যকার বেশ কিছু এলাকায় জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা।