খুলনার গল্লামারীতে অবস্থিত খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় (খুবি) শিক্ষা কার্যক্রমের ৩৪ বছর পূর্ণ করে ৩৫ বছরে পদার্পণ করছে। আজ সোমবার (২৫ নভেম্বর) খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস। দিবসটি উপলক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
১৯৯০-৯১ শিক্ষাবর্ষে ৪টি ডিসিপ্লিনে ৮০ শিক্ষার্থী নিয়ে এর কার্যক্রম শুরু হয়। একই বছরের ২৫ নভেম্বর শিক্ষা কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। প্রতিবছর এ দিনটি ২৫ নভেম্বর খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে উৎসবমুখর পরিবেশে পালিত হয়ে আসছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়টির স্কুল বা অনুষদের সংখ্যা ৮টি এবং ডিসিপ্লিন বা বিভাগের সংখ্যা ২৯টি। শিক্ষার্থীর সংখ্যা সাড়ে ৭ হাজারেরও বেশি। যার মধ্যে ৩৪ জন বিদেশি শিক্ষার্থী রয়েছেন।
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে বুয়েটের পরই ১৯৯৭-৯৮ শিক্ষাবর্ষ থেকে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোর্স ক্রেডিট পদ্ধতি চালু হয়। দেশের মধ্যে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক পর্যায়ে নগর ও গ্রামীণ পরিকল্পনা ডিসিপ্লিন, ব্যবসায় প্রশাসন ডিসিপ্লিন, এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স ডিসিপ্লিন এবং ঢাকার বাইরে স্থাপত্য ডিসিপ্লিন ও কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ডিসিপ্লিন প্রথম চালু হয়। দেশের মধ্যে ফরেস্ট্রি অ্যান্ড উড টেকনোলজি ডিসিপ্লিন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয় হিসেবে চালু হয়। সুন্দরবন ও উপকূল নিয়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশ্বের মধ্যে প্রথম স্থাপিত হয়েছে ইনস্টিটিউট ফর ইন্টিগ্রেটেড স্টাডিজ অন দ্য সুন্দরবনস অ্যান্ড কোস্টাল ইকোসিস্টেম (আইআইএসএসসিই)। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থাপিত হয়েছে দেশের প্রথম সয়েল আর্কাইভ। বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু অ্যাকাডেমিক ভবনের মাটির ২০ ফুট গভীর নিচে সুরম্যভাবে স্থাপিত এ আর্কাইভ। এখানে সংগৃহীত আছে দেশের ৫টি জোনের ১ হাজার ৮৫৮টি প্লটের ৫ হাজারের বেশি মাটির নমুনা, যা সংরক্ষণ করা হয়েছে গবেষণার জন্য।
জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগে অর্জিত নতুন প্রজন্মের স্বাধীনতার পর এবার ভিন্ন আলোকে উদ্যাপিত হবে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস বলে জানিয়েছেন বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম। এক শুভেচ্ছা বার্তায় তিনি বলেন, নতুন বাংলাদেশে নতুন আবহে গড়ে উঠবে বিশ্ববিদ্যালয়। এ বিশ্ববিদ্যালয় হবে একটি ইমপ্যাক্টফুল বিশ্ববিদ্যালয়। এখানে যে গবেষণাগুলো হবে, তা দেশের উন্নয়নে এবং বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ভূমিকা রাখবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এমনভাবে দক্ষ হয়ে উঠবে, তারা যেখানে যে কাজই করুক- তারা তাদের একটি গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করতে সক্ষম হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসন এমনভাবে পরিচালিত হবে, যেন তা সমাজের এবং জাতির টেকসই উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারে।
বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে:
কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- সকাল ০৯.৩০ মিনিটে শহিদ মিনারে পুষ্পমাল্য অর্পণ, ০৯.৪৫ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, পরে মুক্তমঞ্চে বিভাগ/ডিসিপ্লিনসমূহের গত বছরের অর্জন ও আগামী বছরের পরিকল্পনা উপস্থাপনার ডিসপ্লে বোর্ড স্থাপন, ১০.০০ মিনিটে কেক কাটা অনুষ্ঠান, ১০.১৫ মিনিটে আলোচনা সভা, ১০.৪০ মিনিটে মুক্তমঞ্চে গত বছরের কৃতিত্ব অর্জনকারী শিক্ষার্থী ও সংগঠনসমূহকে সম্মাননা প্রদান, বাদ জোহর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে দোয়া মাহফিল ও সুবিধাজনক সময়ে মন্দিরে প্রার্থনা, সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।