৩০ হাজার যুবকের রক্তে রঞ্জিত আ.লীগের হাত: মির্জা আব্বাস

0
166

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, আজকে আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন- বিএনপি খুনের রাজনীতি শুরু করেছে। দেশে যখন খুনের রাজনীতি শুরু হয় তখন তো বিএনপির জন্মই হয়নি। খুনের রাজনীতি দেখেছি ৭৪-৭৫ সালে। শাহজাহানপুর থেকে মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেনকে ধরে নিয়ে যায় এসপি মাহবুব, সার্জেন কুদ্দুস, সার্জেন্ট কিবরিয়া। এদের টিম লিডার ছিল এসপি মাহবুব। আবুল হোসেনকে আর পাওয়া যায়নি। সে ঘটনার সাক্ষী হিসেবে এখনও তিনি বেঁচে আছেন। ৭২ থেকে ৭৫ সালে ৩০ হাজার যুবকের রক্তে রঞ্জিত আওয়ামী লীগের হাত।

মঙ্গলবার বিকেলে বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ের ঢাকা মহানগর দক্ষিণে মতিঝিল, পল্টন, শাহবাগ, রমনা ও শাহজাহানপুর থানা বিএনপি উদ্যোগে আয়োজিত এক প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। দক্ষিণ বিএনপির সদস্যসচিব রফিকুল আলম মজনু ও ভারপ্রাপ্ত সদস্যসচিব তানভীর আহমেদ রবিনের মুক্তির দাবিতে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশ চলাকালে ১৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি নেতা আবুল বাসারের লাশ জানাজার জন্য নয়াপল্টনে আনা হয়। সোমবার কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। সেখান থেকে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালামের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু প্রমুখ।

মির্জা আব্বাস বলেন, বিএনপি কখনই খুনের রাজনীতি করে নাই। বরং জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার শাসনামলে দেশ অনেক ভালো অবস্থানে গিয়েছিল। এ দেশ তখন বিশ্বের কাছে ইমার্জিং টাইগার হিসেবে চিহ্নিত হয়েছিল। চোর-বাটপার ছিল না। আজকে সেই বাংলাদেশকে বলা হচ্ছে লুটেরাদের রাষ্ট্র।

তিনি বলেন, মাঝখানে কয়েকদিন নেতাকর্মীদের ওপর অন্যায়, অবিচার, জেল জুলুম বন্ধ ছিল। কী কারণে বন্ধ ছিল তা জানি না। এখন সব শুরু হয়েছে। জীবিত গ্রেপ্তার হচ্ছে, আর মৃত্যু বের হচ্ছে। আমাদের কর্মী আবুল বাসার, ইদ্রিস মন্ডলকে পিটিয়ে মেরে ফেলা হলো। আর লম্বা লম্বা কথা বলেন- আমরা খুনি রাজনীতি করি না। খুনের রাজনীতি দিয়ে শুরু করেছেন, এই রাজনীতি শেষ করবেন। এ সরকারকে সরানোর জন্য, দেশে গণতন্ত্র কায়েমের জন্য যতটুকু যাওয়া প্রয়োজন বিএনপি নেতাকর্মীরা ততটুকুই যাবে।

আব্বাস বলেন, নতুন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। কিছুদিন যাবত সরকারি কর্মকর্তাদের বক্তব্যে মনে হচ্ছে তারা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী নন, এরা আওয়ামী লীগের চাকর-বাকর। তারা ফরমায়েশি কথা বলছেন। ফরমায়েশি রায় দিচ্ছেন। বিএনপি নেতাকর্মীরা জেল-মৃত্যুকে ভয় পায় না। সারাদেশে পোশাকি সন্ত্রাস চলছে। জনগণের টাকায় বেতন নিয়ে জনগণের ওপরেই অত্যাচারের স্টিমরোলার চালাচ্ছেন।

তিনি বলেন, গতকাল দেখলাম তারেক রহমানের নামে তথাকথিত বিশিষ্টজনেরা নানারকম কথা বলছেন। আসলে তাদের কোনো পরিচয় নেই। এরা আওয়ামী লীগের। কোনো ভদ্রলোক আওয়ামী লীগ করে না। যারা ভদ্র তারা এ দল করতে পারে না, চলে আসতে বাধ্য হয়।

সমাবেশে সালাম বলেন, এ সরকার পতন নিশ্চিত দেখে আন্দোলনের দৃষ্টি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছে। শুরু করছে জঙ্গি নাটক। আরও অনেক নাটক করবে। আমরা সব বিষয়ে সজাগ আছি। কোনো ফন্দিফিকির করে লাভ নেই। ক্ষমতা ছাড়তেই হবে। অন্যায়ের বিচার এই বাংলার মাটিতেই হবে।

সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল নয়াপল্টন বিএনপি কার্যালয় থেকে শুরু হয়ে বিজয়নগর মোড় ঘুরে আবার দলীয় কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়। এছাড়া ঢাকা মহানগর দক্ষিণে বিভিন্ন থানা বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে মহানগর বিএনপি নেতারা।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.