রাজধানীর বেইলি রোডে গ্রিন কোজি কটেজে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মারা যাওয়া বৃষ্টি খাতুনের মরদেহ ১১ দিন পর পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
সোমবার (১১ মার্চ) দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গ থেকে মরদেহ বৃষ্টির বাবা শাহাবুল আলম ওরফে সবুজ খানের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
মেয়ের লাশ বুঝে পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন শাহাবুল আলম সবুজ। ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে বৃষ্টি খাতুনের বাবা বলেন, আমি বাবা হয়ে ১১টা দিন মেয়ের লাশ রেখে কীভাবে ভাত খাই, কীভাবে ঘুমাই। আমার চোখে তো ঘুম আসে না। আল্লাহর কাছে লাখো লাখো শুকরিয়া যে ১১ দিন পার হলেও নিজের মেয়ের মরদেহ বুঝে পেলাম।
প্রশাসন ও সাংবাদিকদের ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, সঠিক তথ্য যাচাই-বাছাই করে আমার সন্তান আমার কাছে ফেরত দিয়েছে। আমি সন্তুষ্ট।
কাঁদতে কাঁদতে তিনি আরও বলেন, মেয়ের জন্য তার মা কান্না করতে করতে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। আমার ছোট মেয়েরাও কান্না করছে। আমি যে ভোগান্তিতে পড়েছি, এমন ভোগান্তিতে কেউ যেন না পড়ে। আল্লাহ পাক আমাকে হেদায়েত দিয়েছেন, আমি আমার মেয়েকে তথ্য-প্রমাণ দিয়ে ফিরে পেয়েছি। এজন্য আমি আল্লাহর কাছে দোয়া করি, আল্লাহ যেন আমার মেয়েকে জান্নাতবাসী করে, বেইলি রোডে যারা মারা গেছে, সবাইকে যেন আল্লাহ জান্নাতবাসী করে।
বৃষ্টির মরদেহ হস্তান্তরের বিষয়ে সিআইডি ঢাকা মেট্রোর অতিরিক্ত ডিআইজি মো. জাহাঙ্গির হোসেন মাতুব্বর বলেন, গত ২৯ ফেব্রুয়ারি আগুনের ঘটনার পরদিন বার্ন ইনস্টিটিউটে এসে বৃষ্টি খাতুনের মরদেহ শনাক্ত করেছিলেন তার বাবা সবুজ খান। তবে রমনা কালি মন্দিরের সভাপতি উৎপল সাহা দাবি করেন, মৃতের নাম অভিশ্রুতি শাস্ত্রী। মেয়েটি নিয়মিত মন্দিরে আসতেন। উৎপল সাহা রমনা থানায় লিখিতভাবে দাবি করেন, ময়নাতদন্ত ও ডিএনএ নমুনা সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নেওয়া হোক। এরপর বিজ্ঞ আদালতের শরণাপন্ন হয়ে মর্গ থেকে মরদেহের ময়নাতদন্ত ও ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়।
তিনি আরও বলেন, গতরাতে রমনা কালি মন্দিরের সভাপতি উৎপল সাহা আবারও লিখিতভাবে আবেদন করেন, আমার কোনো দাবি নেই, ভুল বোঝার কারণে হয়েছে। মরদেহ প্রকৃত স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হোক।
বৃষ্টি খাতুনের গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়া জেলার খোকশা থানার বনগ্রামে। সেখানে ব্র্যাক স্কুল থেকে পাস করে হাইস্কুলে ভর্তি হন তিনি। গ্রাম থেকে এসএসসি ও কুষ্টিয়া সরকারি মহিলা কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। পরে ঢাকায় ইডেন কলেজে ভর্তি হন বৃষ্টি।