সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে গত দুই বছর ধরে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন বরেণ্য অভিনেতা ও সংসদ সদস্য আকবর হোসেন পাঠান ফারুক। তিনি হাসপাতালে থাকা অবস্থায় গত জানুয়ারিতে তার খোঁজ নেয় সমকাল।
সে সময় ফারুকের স্ত্রী ফারহানা পাঠান বলেছিলেন, ‘আমি সারাক্ষণই ফারুকের সঙ্গে ছায়ার মতো আছি। দুইজন গল্প করছি। এ জন্য সবসময় সে খোশমেজাজেই থাকে। ইবাদত-বন্দেগি করে সময় কাটছে তার। কিছু সময় ঘুমিয়ে কাটে। অনেকেই ফোন করে খোঁজ-খবর নিচ্ছেন। দেশের মানুষ ফারুককে কত ভালোবাসেন তা প্রতিনিয়ত ফোন পেয়ে বুঝছি। মাঝেমধ্যে এলাকার মানুষের সঙ্গে অল্পস্বল্প কথা বলছেন। দোয়া করবেন, যেন সব সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। আবার যেন ফারুক ফিরতে পারে সবার হৃদয়ে।’
তিনি আরও বলেন, ‘দেশে আসার জন্য ফারুক উদগ্রীব। জমে আছে সংসদীয় এলাকার অনেক কাজকর্ম। দেশে ফিরে কাজগুলো সারবেন বলেছেন।’
২০২১ সালের ৪ মার্চ নিয়মিত চেকআপের জন্য সিঙ্গাপুর যান অভিনেতা ও ঢাকা-১৭ আসনের সংসদ সদস্য ফারুক। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। উচ্চ রক্তচাপ, মস্তিষ্ক, স্নায়ুতন্ত্রের নানা সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। ছিল পুরোনো বেশ কিছু শারীরিক জটিলতাও।
সোমবার (১৫ মে) সকাল ৮টায় সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে মারা যান বরেণ্য অভিনেতা ফারুক। তার বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর আট মাস।
১৯৪৮ সালের ১৮ আগস্ট ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন ফারুক। এইচ আকবর পরিচালিত ‘জলছবি’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে ১৯৭১ সালে ঢাকাই সিনেমার তার অভিষেক হয়। প্রথম সিনেমায় তার বিপরীতে ছিলেন কবরী। এরপর ১৯৭৩ সালে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র খান আতাউর রহমানের পরিচালনায় ‘আবার তোরা মানুষ হ’ ও ১৯৭৪ সালে নারায়ণ ঘোষ মিতার ‘আলোর মিছিল’ এ দুটি সিনেমায় পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি।
পাঁচ দশকের বেশি সময়ের অভিনয় ক্যারিয়ারে অভিনয় করেন বহু দর্শকপ্রিয় চলচ্চিত্রে। ‘মিয়াভাই’ চলচ্চিত্রের সাফল্যের পর তিনি চলচ্চিত্রাঙ্গনে ‘মিয়াভাই’ হিসেবে খ্যাতি পান। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ নানা সম্মাননায় ভূষিত হন এই নন্দিত চিত্রনায়ক। অভিনয় থেকে অবসর নেওয়ার পর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে ঢাকা-১৭ আসনে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি।