‘পাটালি গ্রুপের’ নেতাসহ গ্রেপ্তার ৩৬

0
56
র‍্যাব-২–এর প্রধান কার্যালয়ে অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি আনোয়ার হোসেন গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের বিবরণ তুলে ধরেন। মোহাম্মদপুর, ঢাকা, ১৭ ফেব্রুয়ারি, ছবি: র‍্যাবের সৌজন্যে

রাজধানীর মোহাম্মদপুর, আদাবর ও হাজারীবাগ এলাকায় বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে কিশোর গ্যাংয়ের ৩৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব-২। তাঁরা ‘পাটালি গ্রুপ’, ‘মাউরা এমরান গ্রুপ’, ‘লেভেল হাই গ্রুপ’সহ বিভিন্ন গ্রুপের সদস্য বলে জানানো হয়েছে।

আজ শনিবার রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বসিলায় র‍্যাব-২–এর প্রধান কার্যালয়ে অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি আনোয়ার হোসেন গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের বিবরণ তুলে ধরেন।

র‍্যাবের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, গতকাল শুক্রবার অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার সবারই বয়স ১৮ বছর থেকে ২৫ বছরের মধ্যে বলে জানিয়েছে র‍্যাব।

র‍্যাব জানায়, মোহাম্মদপুর এলাকায় বেশ কয়েকটি ‘কিশোর গ্যাং’–এর সদস্যরা ছিনতাই, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিলেন। এসব সন্ত্রাসীদের হামলা ও ছিনতাইয়ের অভিযোগে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় একাধিক সাধারণ ডায়েরি ও মামলা হয়েছে। কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করতেন। সম্প্রতি মোহাম্মদপুর, আদাবর, হাজারীবাগ ও তার আশপাশের এলাকায় বেশ কয়েকটি ছিনতাই, চাঁদাবাজি ও অন্যান্য সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড সম্পর্কে তথ্য পায় র‌্যাব।

র‍্যাব-২ বলেছে, মোহাম্মদপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে গতকাল পাটালি গ্রুপের নেতা সুজন মিয়া ওরফে ফর্মা সজিবকে গ্রেপ্তার করা হয়। নিজেদের মধ্যে অন্তর্কোন্দলের কারণে তাঁরা দুই থেকে তিনটি গ্রুপে বিভক্ত হয়েছে। এ ছাড়া মোহাম্মদপুরের বেড়িবাঁধ এলাকায় অভিযান চালিয়ে চাঁন গ্রুপ ও মাহি গ্রুপের মারুফ, আল আমিনকে গ্রেপ্তার করা হয়। আর মোহাম্মদপুরের চাঁদ উদ্যান এলাকায় অভিযান চালিয়ে ‘লেভেল হাই’ গ্রুপের নেতা শরিফ ওরফে মোহনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার আসামিদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে বিভিন্ন ধরনের ধারালো অস্ত্র।

র‍্যাব বলেছে, গ্রেপ্তার ৩৬ জনের মধ্যে কিশোর গ্যাং ‘পাটালি গ্রুপের’ সদস্যসংখ্যা পাঁচজন, ‘লেভেল হাই গ্রুপের’ সদস্যসংখ্যা ছয়, ‘চান গ্রুপের’ পাঁচজন, ‘মাউরা এমরান গ্রুপের’ সাতজন এবং বাকিরা অন্যান্য গ্রুপের সদস্য।

র‍্যাবের দেওয়া তথ্য বলছে, সুজন মিয়ার নেতৃত্বে ‘পাটালি গ্রুপ’ পরিচালিত হয়ে আসছে। এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, ডিশ ব্যবসা, চাঁদাবাজি, ছিনতাই, মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য ১৫ জনের একটি গ্রুপ তৈরি করেন সুজন।

আর ‘লেভেল হাই গ্রুপের’ নেতৃত্ব দেন শরিফ। তাঁরা মোহাম্মদপুর, আদাবর, বেড়িবাঁধ ও ঢাকা উদ্যান এলাকায় চাঁদাবাজি, ছিনতাই, ডাকাতিসহ অন্যান্য সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করতেন।

র‍্যাব বলছে, এ গ্রুপের সন্ত্রাসীরা পথচারীদের আকস্মিকভাবে ঘিরে ধরে চাপাতিসহ ধারালো অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে অর্থ ও মূল্যবান সামগ্রী ছিনতাই করে দ্রুত পালিয়ে যান। তাঁরা বিভিন্ন সময় চাঁদাবাজিসহ আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ঢাকা উদ্যান, আদাবর, শ্যামলী, মোহাম্মদপুরসহ পাশের এলাকায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে মারামারিসহ বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করতেন। আর ‘চাঁন গ্রুপের’ সহযোগী সদস্য সাকিব। তিনি ২০১৮ সালে বরিশাল থেকে ঢাকায় এসে ঢাকা উদ্যান এলাকায় বসবাস শুরু করেন।

র‍্যাব বলছে, ‘মাউরা ইমরান’ গ্রুপের নেতা ইমরান। একসময় তিনি মোহাম্মদপুর এলাকায় রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। ২০২১ সালে একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করার সময় নিজেই কিশোর গ্যাং ‘মাউরা ইমরান গ্রুপ’ গঠন করেন। ইমরান মোহাম্মদপুর এলাকায় চাঁদাবাজি, ডাকাতি ও অপহরণের সঙ্গে জড়িত।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.