হংকংয়ের একটি বহুতল ভবন কমপ্লেক্সে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় অন্তত ৪৪ জন নিহত হয়েছেন। খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না ২৭৯ জনের। আগুনে দগ্ধ হয়েছেন অনেকে। গতকাল বুধবার স্থানীয় সময় দুপুরের দিকে শহরের তাই পো এলাকায় আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। পরে রাতে হতাহতের খবর জানান শহরের প্রধান নির্বাহী জন লি।
গতকাল রাতেও কমপ্লেক্সের ৩২তলা ভবনগুলোয় আগুন জ্বলতে দেখা যাচ্ছিল। ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে জানানো হয়, আগুনের তীব্র উত্তাপের কারণে ভবনগুলোর ওপরের দিকে যাওয়া যাচ্ছে না। রাতের অন্ধকার নেমে আসার কারণেও আগুন নেভাতে বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে। গতকাল রাত পর্যন্ত আগুন লাগার কারণ জানা যায়নি।
ওয়াং ফুক কোর্ট আবাসিক কমপ্লেক্সে মোট আটটি ভবন রয়েছে। ভবনগুলোয় মোট অ্যাপার্টমেন্টের সংখ্যা ২ হাজার। এসব অ্যাপার্টমেন্টে ৪ হাজার ৬০০ জনের বেশি বাসিন্দা বাস করেন। আগুন লাগা ভবনের ভেতরে কতজন আটকা পড়েছেন, তা জানাতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস। তবে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা রয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে তারা।
আগুনে যখন আবাসিক কমপ্লেক্সটি জ্বলছিল, তখন অনেকেই পাশে দাঁড়িয়ে তা দেখছিলেন। তাঁদের অনেককে আহাজারি করতে দেখা যায়। এমনই একজন ৭১ বছর বয়সী ওং। তাঁর স্ত্রী আগুন লাগা ভবনগুলোর একটিতে আটকা পড়েছিলেন। হ্যারি চেউং নামের আরেকজন বলেন, ‘হয়তো আজ রাতে আর বাসায় ফিরতে পারব না। রাতে কোথায় থাকব আমি?’
আগুনের কারণে হংকংয়ে যান চলাচলও ব্যাহত হয়েছে। শহরের পরিবহন বিভাগ জানিয়েছে, সেখানকার প্রধান দুটি মহাসড়কের একটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। যানবাহনগুলো ঘুরিয়ে দেওয়া হয় অন্য দিকে। এ ছাড়া আজ বৃহস্পতিবার শহরের অন্তত ছয়টি স্কুল বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছে শহরের শিক্ষা ব্যুরো।
আগুন লাগার পর গতকাল রাতে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং সরকারি দপ্তরগুলোকে আগুন নিয়ন্ত্রণের সব ধরনের চেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন। হতাহতের ঘটনা যেন কম হয়, সেদিকেও খেয়াল রাখতে বলেন তিনি।
এর আগে ১৯৯৬ সালে হংকংয়ের কোউলুন এলাকায় একটি বাণিজ্যিক ভবনে আগুনে ৪১ জন নিহত হন। গতকালের আগুন লাগার ঘটনার আগে এটিই ছিল শহরটির সবচেয়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড।
রয়টার্স

















