‘না পালালে আমাদের হত্যা করা হতো’

0
108
ইসরায়েলি অভিযানে পশ্চিম তীরের জেনিন লন্ডভন্ড হয়ে গেছে

‘আমাদের পালাতে হয়েছিল। নয়তো আমার মেয়েদের ও আমাকে হত্যা করা হতো।’
কাঁদতে কাঁদতে কথাগুলো বললেন ফাতিনা আল-গৌল। তিনি ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরের জেনিনের বাসিন্দা।

একসময় জেনিনের যে স্থানে ফাতিনার বাড়ি ছিল, তা এখন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। এই ধ্বংসস্তূপের দিকে তাকিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন তিনি।

ঘটনাস্থলে ইতিমধ্যে একটি বুলডোজার এসেছে। বুলডোজারটি সড়কে পড়ে থাকা ধ্বংসস্তূপ সরাচ্ছে।

দখলকৃত পশ্চিম তীরের জেনিন শহর। গত রোববার রাতে ইসরায়েলের সামরিক অভিযান শুরু হয়। কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় এই অভিযান দুই দিন চলে। অভিযানকালে ১২ ফিলিস্তিনি ও ১ ইসরায়েলি সেনা নিহত হন। আহত হন শতাধিক ফিলিস্তিনি। ইসরায়েলি অভিযানের মুখে হাজারো ফিলিস্তিনি জেনিন শরণার্থীশিবির ছেড়ে পালান।

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী একে ‘সন্ত্রাসবিরোধী’ অভিযান হিসেবে বর্ণনা করে, তবে ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই অভিযানকে জেনিনের জনগণের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য যুদ্ধ বলে অভিহিত করে।

জেনিনের কর্তৃপক্ষ জানায়, ইসরায়েলি হামলায় পশ্চিম তীরের এলাকাটি লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। জেনিনের শরণার্থীশিবিরের ৮০ শতাংশ ঘর হয় ধ্বংস হয়েছে, নয়তো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, নয়তো পুড়ে গেছে।

মঙ্গলবার রাতে জেনিন থেকে সেনা প্রত্যাহার শুরু করে ইসরায়েল। এই প্রেক্ষাপটে পালিয়ে যাওয়া অনেক ফিলিস্তিনি এখন জেনিন শরণার্থীশিবিরে ফিরছেন।

ইতিমধ্যে জেনিনে ফিরে আসা ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন ফাতিনা। জেনিনে ফিরে ফাতিনা ভয়াবহ দৃশ্য দেখতে পান। তিনি যেদিকেই তাকান, দেখেন শুধু ধ্বংসস্তূপ আর ধ্বংসস্তূপ।

অভিযানের মুখে ফাতিনাসহ ১০ জন একসঙ্গে পালিয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে ফাতিনার পরিবারের সদস্য ও তাঁর প্রতিবেশীরা ছিলেন।

ফিরে আসার পর চারপাশ দেখে ফাতিনা বলেন, ‘আমার বাড়ি পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। সবকিছু ভাঙা, পোড়া। সবকিছু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’

ফাতিনার মতো আরও যাঁরা জেনিনে ফিরে এসেছেন, তাঁদের জন্য এখন খাবার, পানি ও আশ্রয়ের স্থান জরুরি হয়ে পড়েছে। ফাতিনা বলেন, ‘আজ রাতে আমরা রাস্তায় ঘুমাব। ঘর যেখানে ছিল, সেখানে বসার মতো অবস্থাও নেই। আমাদের বা প্রতিবেশীদের কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই।’

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.