স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনের সুপারিশ জুলাই সনদে অন্তর্ভুক্তির দাবি

0
29
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে আজ সোমবার প্রতিবেদন জমা দিয়েছে স্বাস্থ্যবিষয়ক সংস্কার কমিশন, ছবি: প্রধান উপদেষ্টার ফেসবুক পেজ থেকে নেওয়া

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে খোলাচিঠি দিয়েছেন স্বাস্থ্য খাত–সংশ্লিষ্ট ছয় বিশিষ্টজন। চিঠিতে তাঁরা স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন এবং তা জুলাই সনদে অন্তর্ভুক্তির দাবি জানিয়েছেন। গতকাল শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ খোলাচিঠি দেন বিশিষ্টজনেরা।
খোলাচিঠিতে ছয় বিশিষ্টজন বলেন, ‘ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে প্রধান উপদেষ্টা নেতৃত্বের যে গুরুদায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছেন, তা শুধু প্রশাসনিক নয়, গভীর নৈতিক দায়ও বহন করে।’ প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে দেশের শাসনব্যবস্থা আরও স্বচ্ছ, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও মানবিক হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তাঁরা।

‘স্বাস্থ্য খাত কোনো একক মন্ত্রণালয় বা সেবার সীমায় আবদ্ধ নয়’ বলে উল্লেখ করা হয় খোলাচিঠিতে। সেখানে বলা হয়, ‘এটি জাতীয় উন্নয়নের মূল স্তম্ভ, যা মানবসম্পদের বিকাশ, সামাজিক নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং সম–অধিকারের মূল ভিত্তি গঠন করে। একটি কার্যকর, ন্যায়ভিত্তিক ও টেকসই স্বাস্থ্যব্যবস্থা ছাড়া জাতির উন্নয়ন কল্পনা করা যায় না।’

বিশিষ্টজনেরা বলেন, ‘আমরা অকপটে স্বীকার করি, বিগত কয়েক দশকে বাংলাদেশ স্বাস্থ্য খাতে কিছু অগ্রগতি অর্জন করেছে। কিন্তু একই সঙ্গে এটাও সত্য, একগুচ্ছ গভীর কাঠামোগত দুর্বলতা, শাসনব্যবস্থায় বিচ্যুতি ও প্রাতিষ্ঠানিক স্বচ্ছতার অভাব আমাদের এ অগ্রযাত্রাকে বারবার থমকে দিয়েছে।’

স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের তাগিদ দিয়ে খোলাচিঠিতে বলা হয়, ‘সুপারিশগুলো এসেছে এক গুরুতর বাস্তবতা থেকে, যা কেবল সেবার সম্প্রসারণ বা গুণগত মান বৃদ্ধির পরামর্শ নয়, বরং একটি সুসংহত রূপরেখা। এর মাধ্যমে স্বাস্থ্য খাতের গভীর সমস্যাগুলোর সমাধান, প্রতিষ্ঠানগুলোর পুনর্গঠন এবং প্রশাসনিক জবাবদিহির একটি টেকসই কাঠামো গড়ে তোলা সম্ভব।’

স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনের সুপারিশ জুলাই সনদে অন্তর্ভুক্তির আহ্বান জানিয়ে খোলাচিঠিতে ছয় বিশিষ্টজন বলেন, ‘যথাসময়ে পদক্ষেপ না নিলে গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলো কাগজে বন্দী থেকে যায়। সুপারিশগুলো জুলাই সনদে অন্তর্ভুক্ত করা হবে যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত, যা অতীতের সম্মান এবং ভবিষ্যতের অঙ্গীকারকে একসূত্রে বেঁধে রাখবে।’

স্বাধীন, গণজবাবদিহিমূলক ও উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন স্বাস্থ্য কমিশন গঠন, শহর ও গ্রামে বিনা মূল্যে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার ব্যবস্থা চালু এবং উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যদের সমন্বয়ে উচ্চপর্যায়ের স্টিয়ারিং কমিটি গঠনের পরামর্শ দেন ছয় বিশিষ্টজন। তাঁরা খোলাচিঠিতে বলেন, এসব পরামর্শ ২০২৫ সালের মধ্যভাগে গ্রহণ করলে ডিসেম্বরের মধ্যে প্রয়োজনীয় সরকারি আদেশ ও অধ্যাদেশ জারি সম্ভব। আর ২০২৬ সালের প্রথম প্রান্তিকে জনগণের সামনে কাঠামোগত এই রূপান্তরের দৃশ্যমান অগ্রগতি উপস্থাপন করা যাবে।

খোলাচিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনের সদস্য সৈয়দ মো. আকরাম হোসেন, আবু মুহাম্মদ জাকির হোসেন, লিয়াকত আলী, নায়লা জামান খান, আজহারুল ইসলাম খান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক সৈয়দ আব্দুল হামিদ।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.