স্বর্ণের খোঁজে রাতেও টর্চ জ্বালিয়ে মাটি খুঁড়ছেন হাজারও মানুষ

0
71
বর্ণের আশায় রাতেও টর্চ জ্বালিয়ে খুঁড়ছেন হাজারও মানুষ।

স্বর্ণ পেলে রাতারাতি ভাগ্য বদলে যাবে, তাই এই তীব্র গরমে দিনের পাশাপাশি রাতেও টর্চ জ্বালিয়ে মাটির স্তুপ খুঁড়ছেন হাজারও মানুষ। ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল উপজেলায় আরবিবি ইটভাটায় এমন ঘটনা ঘটছে। জানা গেছে, স্বর্ণ পাওয়ার আশায় দীর্ঘদিন ধরেই মাটি খুঁড়ছেন লোকজন। শুরুতে দুই একজন স্বর্ণ পেলেও বাকিরা ফিরছেন খালি হাতে। অনেকেই এটিকে গুজব বলছেন।

স্থানীয়রা বলছেন, দিনের চেয়ে রাতের মাটিতে বেশি স্বর্ণ পাওয়া যায়- এমন খবরে রাতে টর্চ লাইট আর মাটি খুঁড়ার যন্ত্র নিয়ে ইট ভাটায় ভিড় করছেন হাজার হাজার মানুষ। অনেকে মাটি খুঁড়তে অন্য জেলা থেকেও আসছেন।

শনিবার সকালে আরবিবি ইটভাটায় গিয়ে দেখা যায়, ইটভাটার ঠিক পশ্চিম পাশে একটি মাটির স্তূপে বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের জটলা। সে জটলার পাশেই ছোট শাবল, কোদাল, বসিলা দিয়ে আস্তে আস্তে মাটি খনন করে বাছাই করছে বয়স্ক, নারী, পুরুষ, যুবক, কিশোরসহ বিভিন্ন বয়সী মানুষ।

স্থানীয়রা জানায়, ঠাকুরগাঁও জেলার রানীশংকৈল উপজেলার কাতিহার আরবিবি ইট ভাটায় গত কয়েকদিন ধরে চলছে মাটি খনন প্রতিযোগিতা। গ্রামের বিভিন্ন বয়সের নারী পুরুষ বাড়ি হতে কোদাল, বসিলা নিয়ে ওই ভাটায় আসছেন এবং ভাটার ইট তৈরির জন্য স্তুপ করে রাখা মাটির ঢিবিতে চালাচ্ছেন ইচ্ছেমতো খনন প্রতিযোগিতা। এদের মধ্যে শ্রমিক শ্রেণির মানুষের সংখ্যা বেশি।

মাটি খননের এই কাণ্ড দেখতে আসা ঠাকুরগাঁও পীরগঞ্জের জনগাঁও এলাকার বেলাল বলেন, লোকজন দিন ও রাতের বেলায় আসতেছে মাটি খুঁড়তে। সবসময় লোক থাকলেও রাতে বেশি লোক থাকে। সবার মত আমিও দেখতে এসেছি। বিষয়টি মানুষ যেভাবে ছড়িয়েছে ওই রকম মনে হয়নি। গুজবের মতো মনে হচ্ছে।

পীরগঞ্জ উপজেলা থেকে আসা রহিমা নামের এক নারী বলেন, মাটিতে স্বর্ণ পাওয়া যাচ্ছে এমন খবর শুনে এসেছি। অনেকে স্বর্ণের জিনিস পেয়েছে। তাই সকাল থেকেই মাটি খনন করছি। তবে এখন পর্যন্ত স্বর্ণের কিছু মেলেনি। যদি স্বর্ণ পাই তবে পরিবারের জন্য খরচ করবো।

ঠাকুরগাঁও সদরের আব্দুল আওয়াল বলেন, কেবল ঠাকুরগাঁও নয়, দিনাজপুর, রংপুরসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে স্বর্ণের খোঁজে মানুষ আসছেন। অনেকেই স্বর্ণ পেয়েছেন বলে শুনেছি।

এ বিষয়ে আরবিবি ইটভাটার ব্যবস্থাপক লিটন আলী বলেন, কাতিহার সামরাই মন্দিরের পাশ থেকে মাটি খনন করে ইটভাটায় স্তূপ করা হয়েছে। গুজব উঠেছে ঐ মাটির স্তূপ থেকে স্বর্ণের জিনিস পাওয়া গেছে। এরপর থেকেই সাধারণ মানুষ দিন রাত ঐ মাটির স্তূপ খনন করে বাছাই শুরু করেছে।

রানীশংকৈল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রকিবুল হাসান বলেন, বিষয়টি জানার পরে লাল কাপড় দিয়ে চিহ্নিত করে সাধারণের প্রবেশ নিষেধ করা হয়েছিল। কয়েকদিন বন্ধ থাকার পরে আবারও মানুষ আসা যাওয়া শুরু করেছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.