শ্রমিকের মজুরি বাড়বে, পোশাকের দাম বাড়ান: ক্রেতাদের উদ্দেশে বিজিএমইএ

0
110
বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান

চলতি বছরের মধ্যে দেশের তৈরি পোশাক খাতে নতুন ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান। মজুরি বৃদ্ধির আগের ধারা এবং গত পাঁচ বছরের সামগ্রিক মূল্যস্ফীতির সাপেক্ষে এবার মজুরি বেশ ভালোই বাড়বে বলেও তিনি জানিয়েছেন।

পোশাক খাতের ক্রেতাদের প্রতিনিধি ও ব্র্যান্ডগুলোর উদ্দেশে লিখিত এক চিঠিতে এসব কথা বলেছেন ফারুক হাসান।

চিঠিতে ফারুক হাসান বলেছেন, বিশ্বের সবখানেই এখন মূল্যস্ফীতির হার বেশি। এ পরিস্থিতিতে ন্যূনতম মজুরি বোর্ড শ্রমিকদের জন্য মজুরি পর্যালোচনা করছে। তবে এই বোর্ড স্বাধীন, সেখানে শ্রমিক, মালিক ও স্বাধীন পর্যবেক্ষকদের সমান প্রতিনিধিত্ব আছে। বিজিএমইএর সভাপতি বলেন, ‘মজুরি বোর্ড স্বাধীনভাবে কাজ করে। এ কারণে আমার পক্ষে অনুমান করা কঠিন, মজুরি কত বাড়বে।’

একই সঙ্গে শ্রমিকদের জীবনমান ও মূল্যস্ফীতির বিবেচনায় ক্রেতাদের প্রতিও পোশাকের দাম বাড়ানোর অনুরোধ জানিয়েছেন ফারুক হাসান। যেসব ক্রয়াদেশের পোশাক চলতি বছরের ১ ডিসেম্বর থেকে জাহাজিকরণ করতে হবে, সেই সব পোশাকের দাম যৌক্তিকভাবে বৃদ্ধির অনুরোধ জানান তিনি।

চিঠিতে বৈশ্বিক পরিস্থিতিরও আলোকপাত করেছেন ফারুক হাসান। তিনি বলেন, পণ্য উৎপাদনকারী থেকে শুরু করে ক্রেতা—সবাই এখন কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন। মূল্যস্ফীতির হার অভূতপূর্ব উচ্চতায় উঠে যাওয়ায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সংকোচনমুখী মুদ্রানীতি গ্রহণ করেছে। এতে সমাজে অর্থের প্রবাহ কমে যাচ্ছে, কমছে পণ্যের চাহিদা। একদিকে খুচরা বিক্রয়ের পর্যায়ে সরবরাহব্যবস্থা ঠিক রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে, অন্যদিকে উৎপাদকেরা একেবারে ‘দুঃস্বপ্নের’ মতো পরিস্থিতিতে পড়ে গেছেন। এতে তাঁদের পক্ষে নিজেদের সক্ষমতা, সরবরাহ, পরিকল্পনা ও পূর্বাভাস—সবকিছু ব্যবস্থাপনা কঠিন হয়ে পড়েছে।

এত প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও দেশের তৈরি পোশাক খাত রপ্তানির ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে পেরেছে। সে জন্য ক্রেতাদের সহযোগিতা ও সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন বিজিএমইএর সভাপতি।

ফারুক হাসান বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্যমাত্রা ও আশা আছে, তবে বাস্তবতা অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং। ব্যয় বাড়বে না কমবে, সে বিষয়ে কেউ ভালোভাবে কিছু বলতে পারবে না। মহামারির ক্ষতি আমরা এখনো পুষিয়ে উঠতে পারিনি, তারপরও এই শিল্পকে টেকসই ও স্বচ্ছ করতে আমরা বিপুল বিনিয়োগ করছি। উচ্চ মূল্যস্ফীতির সঙ্গে গ্যাস, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধির কারণে আমাদের কাজের পরিধি সংকুচিত হচ্ছে। বস্তুত, উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন শ্রমিকেরা, যাঁরা আমাদের শিল্পের প্রাণ। আমাদের পণ্যের দাম কিছুটা বেড়েছে, তবে ব্যয় যতটা বেড়েছে, তার সঙ্গে সেটা সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।’

এ পরিস্থিতিতে তৈরি পোশাক খাতের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে বিভিন্ন উদ্যোগের কথা চিঠিতে তুলে ধরেন ফারুক হাসান।

ফারুক হাসান বলেন, ‘আমরা সব সময় ভালো কিছু করতে অঙ্গীকারবদ্ধ। আপনারা যে ব্যয় করছেন, তার সর্বোচ্চ মূল্য দিতে আমরা কোনো চেষ্টাই বাকি রাখছি না। সেই সঙ্গে আমরা নৈতিক ও দায়িত্বশীল ব্যবসার সঙ্গে আপস করছি না। আসুন, পরস্পরের সঙ্গে আমরা আরও একাত্ম হই এবং অংশীদারি টিকিয়ে রাখা ও পুনরায় জোটবদ্ধ হওয়ার পরিসর খুঁজে বের করি।’

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.