সুদানে বিশেষ সেনা পাঠিয়ে কূটনীতিকদের সরিয়ে নিল যুক্তরাষ্ট্র

0
96
গতকাল শনিবার জেদ্দা বন্দরে সুদান থেকে সরিয়ে আনা বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের হাতে ফুল দিয়ে বরণ করে নিচ্ছে সৌদি আরব, ছবি: রয়টার্স

দুই পক্ষের সংঘাতে অস্থির সুদান। এর মধ্যে দেশটিতে বিশেষ বাহিনীর সদস্যদের পাঠিয়ে কূটনীতিক এবং তাঁদের পরিবারের সদস্যদের সরিয়ে নিল যুক্তরাষ্ট্র। আজ রোববার সকালে রাজধানী খার্তুম থেকে হেলিকপ্টারে করে তাঁদের সরিয়ে নেওয়া হয়।

কূটনীতিকদের উদ্ধারে যুক্তরাষ্ট্রের এই অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছে ‘ফাস্ট অ্যান্ড ক্লিন’। সকালে তিনটি চিনুক হেলিকপ্টার খার্তুমে মার্কিন দূতাবাসের সামনে অবতরণ করে। তখন এক শর কাছাকাছি মানুষকে সেখান থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আজ আমার নির্দেশে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী খার্তুম থেকে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কর্মীদের নিরাপদে বের করে আনতে একটি অভিযান চালিয়েছে।’

কূটনীতিকদের নিরাপদে সরিয়ে আনার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর জয়েন্ট স্টাফের পরিচালক (অপারেশন) লেফটেন্যান্ট জেনারেল ডগলাস সিমস। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের নেভি সিলস ও সেনাবাহিনীর বিশেষ ফোর্সের সদস্যরা উদ্ধার অভিযানে অংশ নেন। বিশেষ দলটি প্রথমে আফ্রিকার দেশ জিবুতি থেকে ইথিওপিয়া যায়। সেখানে থেকে সুদানে যায়। মাত্র এক ঘণ্টার কম সময়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে তারা উদ্ধারকাজ শুরু করে।

সুদানে আনুষ্ঠানিক কোনো যুদ্ধবিরতি নেই। তবে সুদানের আধা সামরিক বাহিনী র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) কূটনীতিকদের সরিয়ে নেওয়ার কাজে অংশ নেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের হেলিকপ্টারে গুলি না চালানোর বিষয়ে রাজি হয়েছিল।

যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার কাজে সহায়তা করায় জিবুতি, ইথিওপিয়া ও সৌদি আরবকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন বাইডেন। তিনি বলেছেন, সংকটময় মুহূর্তে এসব দেশের সহায়তায় সফলভাবে উদ্ধারকাজ করা সম্ভব হয়েছে। অবিলম্বে সুদানে সংঘাত বন্ধ করার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

কূটনীতিকদের সরিয়ে নেওয়ার পর খার্তুমে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এক টুইট বার্তায় এই ঘোষণা দেয় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস। তারা আরও জানিয়েছে, এই মুহূর্তে সুদানে অবস্থানরত যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের সরিয়ে আনা নিরাপদ নয়।

গত সপ্তাহে সুদানের সামরিক বাহিনী ও আধা সামরিক বাহিনী র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) মধ্যে লড়াই শুরু হয়। এরপর দ্বিতীয় দফায় আজ নিজেদের কূটনীতিকদের সরিয়ে নিল যুক্তরাষ্ট্র। পরে সুদান থেকে যুক্তরাজ্যের কূটনীতিকদেরও সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

এর আগে গতকাল শনিবার মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ, মিসর, পাকিস্তান ও কানাডার দেড় শতাধিক নাগরিককে সরিয়ে নেওয়া হয়। সমুদ্রপথে সৌদি আরবের জেদ্দা বন্দরে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁদের।

উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে সুদানের সামরিক বাহিনী ও আধা সামরিক বাহিনী র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) মধ্যে লড়াই শুরু হয়। চলমান এ সংঘাতের এক পক্ষে রয়েছেন সেনাপ্রধান জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান। অপর পক্ষে আছেন আরএসএফের প্রধান সাবেক মিলিশিয়া নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো ওরফে হেমেদতি। সপ্তাহজুড়ে সংঘাতে দেশটিতে এখন পর্যন্ত চার শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.