পেটালেন, বঁটি নিয়ে তেড়ে এলেন, পরে বললেন, ‘মহুয়া আমার ছোট বোন’

ছাত্রলীগ নেত্রীর নির্যাতন

0
85
ছাত্রলীগ নেত্রী রোকসানা আক্তার, ছবি: সংগৃহীত

রোকসানা আক্তার আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে কাছে দাবি করেন, ঘটনা মিটমাট হয়ে গেছে। তিনি বলেন, ‘তাঁর (মহুয়া আক্তার) সঙ্গে আমার মনোমালিন্য হয়েছিল, কথা-কাটাকাটি হয়েছিল। পরে আমাদের ছাত্রীনিবাসের সুপার আমাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। কোনো মারধরের ঘটনা ঘটেনি। স্টাম্প দিয়ে পেটানোর অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমরা নিজেদের মধ্যে বিষয়টি সমাধান করে নিয়েছি।’

নির্যাতনের ঘটনা নিয়ে এক লিখিত বিবরণে আরও কয়েকজন ছাত্রী রোকসানার বিরুদ্ধে তাঁদের হুমকি দেওয়াসহ নানা অভিযোগ করেন। তাঁরা বলেন, মহুয়াকে ক্রিকেট স্টাম্প দিয়ে পিটিয়েছেন রোকসানা। তাঁকে বঁটি দিয়েও মারতে উদ্যত হন তিনি।

তবে মহুয়াকে মারধর করার যে ভিডিও ফুটেজ পাওয়া গেছে, সে কথা উল্লেখ করলে বিষয়টি এড়িয়ে যান রোকসানা।

মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে ইডেন কলেজের শহীদ বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ছাত্রীনিবাসের পঞ্চম তলার একটি কক্ষে আসন দেওয়াকে কেন্দ্র করে মহুয়াকে নির্যাতন করেন রোকসানা। এ ঘটনার ভিডিও ফুটেজ কাছে রয়েছে। ওই ঘটনা নিয়ে এক লিখিত বিবরণে পঞ্চম তলার আরও কয়েকজন ছাত্রী রোকসানার বিরুদ্ধে তাঁদের হুমকি দেওয়াসহ নানা অভিযোগ করেন।

ইডেনের এ ঘটনায় তদন্ত সাপেক্ষে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।সাদ্দাম হোসেন, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি

ওই ছাত্রীরা বলেন, মহুয়াকে ক্রিকেট স্টাম্প দিয়ে পিটিয়েছেন রোকসানা। তাঁকে বঁটি দিয়েও মারতে উদ্যত হন তিনি।

ছাত্রীনিবাসের একাধিক ছাত্রী অভিযোগ করেন, রোকসানা সংগঠনের কলেজ শাখার সভাপতি তামান্না জেসমিনের অনুসারী। রোকসানা হলে সিট–বাণিজ্য করেন। তিনি মহুয়াকে ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে হলে তুলেছিলেন। কিন্তু এক বছর ধরে তাঁকে রোকসানার কক্ষে ফ্লোরিং (মেঝেতে) করতে হচ্ছিল। তাঁকে দিয়ে ব্যক্তিগত বিভিন্ন কাজ করানোর পাশাপাশি দুর্ব্যবহারও করতেন তিনি।

এর মধ্যেই সম্প্রতি অন্য একজনকে কক্ষের বেডে তুলে দেন রোকসানা। দীর্ঘদিন ধরে মেঝেতে থাকা মহুয়া এর প্রতিবাদ করলে রোকসানা খেপে গিয়ে তাঁকে পেটান ও বঁটি নিয়ে ধাওয়া করেন। চিৎকার শুনে অন্য ছাত্রীরা এগিয়ে গেলে তাঁদেরও নানা হুমকি দেন রোকসানা।

অবশ্য ছাত্রীনিবাসের সুপার নাজমুন নাহার ঘটনাটির কিছুটা ভিন্ন ব্যাখ্যা দেন। গতকাল বুধবার রাতে তিনি বলেছিলেন, রোকসানা ও মহুয়া একই কক্ষে থাকেন। মঙ্গলবার তাঁদের দুজনের মধ্যে হাতাহাতি হয়েছে। আমরা গিয়ে দেখি, দুজনই দুজনকে আঘাত করেছেন। কোনো সিম্পল ব্যাপার নিয়ে হয়তো এটা ঘটেছে। পরে নিজেরাই বিষয়টি সমাধান করে নিয়েছেন। এ ঘটনায় কোনো ছাত্রী অভিযোগ দেননি।

ভুক্তভোগী মহুয়া আক্তার রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে তৃতীয় বর্ষে অধ্যয়নরত। তিনি আজ দুপুরে বলেন, ‘ঘটনাটি নিয়ে আমি আর কথা বলতে চাইছি না। আমাদের মধ্যে সমাধান হয়ে গেছে।’ এদিকে বিকেলে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেত্রী প্রথম আলোর কাছে হলে সিট–বাণিজ্যের অভিযোগ অস্বীকার করেন।

ঘটনার বিষয়ে জানতে ইডেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তামান্না জেসমিনের মুঠোফোনে কল করা হলেও সাড়া পাওয়া যায়নি। তবে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন প্রথম আলোকে বলেছেন, ‘ইডেনের এই ঘটনায় তদন্ত সাপেক্ষে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.