চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে জঙ্গলছলিমপুর পাহাড়ি এলাকা দখল নিয়ে দুই দলের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ২৫ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে জানা গেছে। এসময় কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে রোকন বাহিনীর এক সদস্যকে। তবে তার নাম জানা যায়নি। শনিবার ভোরে জঙ্গলছলিমপুরের আলিনগরে এ সংঘর্ষ হয়। রোকন বাহিনীর ১৫-২০ জনকে শনিবার রাত ৯টা পর্যন্ত খুঁজে পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে আলিনগর এলাকাটি মো. ইয়াছিনের লোকজনের দখলে। শনিবার ভোরে উত্তর জেলা যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. রোকন উদ্দিন ও গোলাম গফুরের নেতৃত্বে ছলিমপুর, ফৌজদারট, আল মদিনা, সিডিএ, ফকিরহাট, বাংলাবাজার, শেরশাহ এলাকার শতাধিক অস্ত্রধারী ওই এলাকা দখল করতে যায়। এ সময় ইয়াছিনের বাহিনীর সদস্যরা প্রতিরোধ গড়ে তোলেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সংঘর্ষ চলাকালে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলি হয়। এতে অন্তত ২৫ জন গুলিবিদ্ধ হয়। পরে রোকন বাহিনীর এক সদস্যকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। এই বাহিনীর অন্তত ১৫-২০ জনের খোঁজ রাত পর্যন্ত মেলেনি।
পুলিশের ভাষ্য, সেখানে গুলিবিদ্ধ ব্যক্তির সংখ্যা ১৩ জন। তারা হলেন– জাবেদ (৩৮), জাকির (৪৮), তানভীর (২৩), সিরাজুল ইসলাম (৪৩), ফজলুল করিম, ইসমাইল হোসেন বাবু (৩০), জাহিদুল ইসলাম (১৯), সৌরভ বড়ুয়া (১৭), মো. পারভেজ (২০), নুরুল আলম (৪০), শুক্কুর আলম (২২), রায়হান (১৮) ও শামীম (২৯)। তবে তাদের মধ্যে কে কোন বাহিনীর সদস্য সেই তথ্য জানা যায়নি।
এ বিষয়ে রাত ৯টার দিকে কথা হয় উত্তর জেলা যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রোকন উদ্দিনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ভূমিদস্যু ইয়াছিনের লোকজন ছিন্নমূল এলাকা থেকে ১৫ জন বাসিন্দাকে ধরে নিয়ে বেদম মারধর করে। এতে একজন নিহত হয়েছেন। তবে এই ঘটনায় তিনি জড়িত নন। রোকনের ভাষ্য, যারা হামলার শিকার হয়েছেন, তারা বিএনপির রাজনীতিতে জড়িত, এটা ঠিক।
ফৌজদারহাট পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক সোহেল রানা সোহেল রানা বলেন, পাল্টা আক্রমণে ১৫ জন আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে একটি দেশে তৈরি এলজি, ৮টি শটগানের গুলি, ২টি পিস্তল, ম্যাগজিন, ১টি চাপাতি, ১টি লোহার হাতুড়ি ও পিস্তলের ৩টি গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। এখনো তারা কোনো পক্ষের অভিযোগ পাননি। তারা অভিযোগ দিলে মামলা নথিভুক্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেবেন।
চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সীতাকুণ্ড সার্কেল) লাবিব আবদুল্লাহ বলেন, দুই গ্রুপের সংঘর্ষে একজন মারা গেছেন। তবে তার পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি। গুলিবিদ্ধ ১৩ জনের নাম নিশ্চিত হওয়া গেছে।
ইউপি সদস্যের বাড়িতে লুটপাট
এদিকে ছলিমপুর ইউপির ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মোহাম্মদ শাহাদাতের বাসা ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তিনি একই ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। বৃহস্পতিবার থেকে তাঁর বাড়ির ভবন ভেঙে ইট, রড খুলে নিচ্ছে বলে শনিবার অভিযোগ করেছেন এই ইউপি সদস্য। তিনি এ ঘটনার জন্য রোকন বাহিনীর সদস্যদের দায়ী করে ফেসবুকে ভিডিও বার্তা দিয়েছেন। এতে পরিবারকে রক্ষায় তিনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সহায়তা কামনা করেন।