সির সঙ্গে ফোনে কথা বললেন ট্রাম্প, কবে যাচ্ছেন চীন

0
14
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং, ফাইল ছবি: এএফপি

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের মধ্যে তাইওয়ান এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যসহ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ফোনালাপ হয়েছে।

দক্ষিণ কোরিয়ায় গত মাসে দুই নেতার বৈঠক হওয়ার পর থেকে দুই দেশের (যুক্তরাষ্ট্র–চীন) সম্পর্কে নতুন গতি দেখা যাচ্ছে। আর এর মধ্যেই গতকাল সোমবার সকালে এ ফোনালাপ হয়।

কথোপকথনের কয়েক ঘণ্টা পর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, সি চিন পিংয়ের সঙ্গে তাঁর ‘দারুণ’ ফোনালাপ হয়েছে। তাঁরা দুজন ইউক্রেন যুদ্ধ, ফেন্টানিল মাদকের পাচার ঠেকানো ও কৃষকদের জন্য একটি চুক্তি করার বিষয়ে আলোচনা করেছেন।

ট্রাম্প দুই দেশের মধ্যকার ‘অত্যন্ত দৃঢ়’ সম্পর্কেরও প্রশংসা করেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, তিনি ও চিন পিং দুজনই এক অপরকে নিজেদের দেশে সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।

ট্রাম্প বলেন, ‘এখন আমরা বড় বিষয়গুলোর দিকে নজর দিতে পারি…আমরা একমত হয়েছি যে আমাদের মধ্যে ঘন ঘন যোগাযোগ হওয়াটা জরুরি এবং আমি তা করতে আগ্রহী।’

এখন আমরা বড় বিষয়গুলোর দিকে নজর দিতে পারি…আমরা একমত হয়েছি যে আমাদের মধ্যে ঘন ঘন যোগাযোগ হওয়াটা জরুরি এবং আমি তা করতে আগ্রহী।

ডোনাল্ড ট্রাম্প, মার্কিন প্রেসিডেন্ট

মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, আগামী বছরের এপ্রিল মাসে চীন সফরে যাওয়ার জন্য তাঁকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তিনি তা গ্রহণ করেছেন। আর ওই বছরের শেষ দিকে সি যুক্তরাষ্ট্র সফর করবেন।

তাইওয়ান নিয়ে আলোচনার বিষয়ে ট্রাম্প কিছু উল্লেখ করেননি। তবে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বক্তব্য অনুযায়ী, সি ট্রাম্পকে বলেছেন, দ্বীপটির নিয়ন্ত্রণ চীনের কাছে ফেরানো ‘যুদ্ধোত্তর আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ’।

সি এমন সময়ে ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনে কথা বললেন, যখন কিনা চীন তাইওয়ান দ্বীপের ভবিষ্যৎ নিয়ে জাপানের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়েছে। স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল তাইওয়ানকে চীন নিজেদের ভূখণ্ড বলে মনে করে। জাপানের প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচি সম্প্রতি বলেছেন, যদি তাইওয়ানের ওপর কোনো হামলা হয়, তবে জাপানের সেনাবাহিনী সামরিক হস্তক্ষেপ করতে পারে।

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বক্তব্য অনুযায়ী, ট্রাম্প সিকে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ানকে আনুষ্ঠানিকভাবে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকার না করলেও দ্বীপ অঞ্চলটির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার এবং অস্ত্র সরবরাহকারী হিসেবে বোঝে যে তাইওয়ান প্রশ্নটি চীনের কাছে কতটা গুরুত্বপূর্ণ।

সি এমন সময়ে ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনে কথা বললেন, যখন কিনা চীন তাইওয়ান দ্বীপের ভবিষ্যৎ নিয়ে জাপানের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়েছে। স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল তাইওয়ানকে চীন নিজেদের ভূখণ্ড বলে মনে করে। জাপানের প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচি সম্প্রতি বলেছেন, যদি তাইওয়ানের ওপর কোনো হামলা হয়, তবে জাপানের সেনাবাহিনী সামরিক হস্তক্ষেপ করতে পারে।

তা ছাড়া ফোনালাপটি এমন সময়ে হলো যখন কিনা ইউক্রেন–রাশিয়া যুদ্ধ অবসানে ট্রাম্প প্রশাসন প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। চীন এ সংঘাতের বিষয়ে নিরপেক্ষ অবস্থান নিয়েছে।

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, ফোনালাপে সি বলেছেন, তিনি ‘শান্তির জন্য সহায়ক সব প্রচেষ্টা’য় সমর্থন দেন এবং আশা প্রকাশ করেন, সংকটের ‘মূল স্তর’ থেকে সমাধান হবে।

দক্ষিণ কোরিয়ার বুসান শহরে বৈঠকের প্রায় এক মাস পর দুই নেতার এ আলাপচারিতা হলো। দুই দেশের বাণিজ্যযুদ্ধকে কেন্দ্র করে আন্তর্জাতিক বাজার যখন অস্থির হয়ে উঠেছিল, তখন তাঁদের মধ্যে ওই বৈঠক হয়। অক্টোবরে হওয়া ওই বৈঠকে তাঁরা একটি বাণিজ্য চুক্তির কাঠামোর বিষয়ে একমত হয়েছেন। চুক্তি অনুযায়ী বেইজিং এক বছরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ খনিজ পদার্থের রপ্তানি বিধিনিষেধ স্থগিত করতে সম্মত হয়েছে।

ওয়াশিংটন জানিয়েছে, তারা চীনা পণ্যের ওপর আমদানি শুল্ক কমাবে; আর বেইজিং মার্কিন কৃষকদের কাছ থেকে সয়াবিন কেনা বাড়িয়ে দেবে।

ট্রাম্প গতকাল বলেছেন, তিনি চীনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ‘ফেন্টানিল, সয়াবিন ও অন্যান্য কৃষিপণ্যে’র বিষয়ে আলোচনা করেছেন।

ট্রাম্প লিখেছেন, ‘আমরা আমাদের মহান কৃষকদের জন্য একটি ভালো এবং খুব গুরুত্বপূর্ণ সমঝোতায় পৌঁছেছি। এর সুফল সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আরও বৃদ্ধি পাবে।’ তবে তিনি এ ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য দেননি।

আল–জাজিরা

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.