আধুনিক জীবনযাত্রায় কম্পিউটারের ব্যবহার সর্বত্র। বাসা-অফিস সব জায়গাতেই কম্পিউটারে কাজ করতে হয়। তবে দীর্ঘক্ষণ কম্পিউটারে টাইপ বা মাউস নাড়াচাড়া করায় অনেকেরই হাত, আঙুলে তীব্র ব্যথা হতে পারে। মাঝেমধ্যে ব্যথানাশক ওষুধ খেলে অবশ্য সাময়িক ব্যথা কমে। আবার কাজ শুরু করলেই ফের যন্ত্রণা শুরু হয়।
এই পরিস্থিতিতে সমস্যা সমাধানের উদ্দেশ্যে বেশ কয়েকটি নিয়ম মেনে চলতে পারেন। এতে ব্যথা অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আসবে।
মাঝে মাঝে উঠুন: কাজের চাপে অনেকসময় দম ফেলার মতোও অবস্থা থাকে না। অনবরত হাত ও মাথা চলতে থাকে। তবে মনে রাখবেন টাইপ করার কারণে হাতে-আঙুলে তীব্র ব্যথা হলে অবশ্যই বিরতি নিতে হবে। ৩০ মিনিট কাজ করার পর অন্তত ২ থেকে ৩ মিনিটের বিরতি নিন। একটু চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ান। পায়চারি করতে পারেন। এরপর আবার কাজে বসুন। এতে হাতের আঙুলের পাশাপাশি কোমর, পা, ঘাড়ের জয়েন্টও সুস্থ থাকবে।
নখ ছোট রাখুন: নখ বড় থাকলে সঠিকভাবে টাইপ করা যায় না। এমনকি মাউস নাড়াচাড়ার ক্ষেত্রেও অসুবিধা হয়। আর সঠিকভাবে মাউস, কিবোর্ড ব্যবহার না করলে হাতে-আঙুলে ব্যথা হতেই পারে। এ কারণে নিয়মিত নখ কাটুন। এতেও ব্যথা কমতে পারে।
বসার ভঙ্গির দিকে খেয়াল রাখুন: হাতে ও আঙুলে ব্যথা হওয়ার পেছনে বসার ভুল ভঙ্গিও দায়ী হতে পারে। আর্গোনমিক নিয়ম মেনে বাসায় কম্পিউটারের চেয়ার টেবিল বানান। কম্পিউটারের সামনে বসে যাতে হাত, কোমড়, ঘাড় সঠিক সাপোর্ট পায়, তা নিশ্চিত করতে হবে। এই নিয়ম মানলেই শরীরের নানা জায়গায় ব্যথা এড়াতে পারবেন। আজকাল অনেক দোকানেই এই রকম চেয়ার-টেবিল কিনতে পাওয়া যায়। নিয়মিত ওয়ার্ক ফ্রম হোম চললে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এমন ধরনের চেয়ার-টেবিল কিনে ফেলুন। কোনোভাবেই ল্যাপটপ নিয়ে শুয়ে-বসে কাজ করবেন না। এতে ব্যথা বাড়বে।
হাত যেন সাপোর্ট পায়: টাইপ করার সময় হাতে সাপোর্ট থাকা খুবই জরুরি। অনেকে হাত শূন্যে ঝুলিয়ে টাইপ করেন। ফলে হাতের পুরো ভার গিয়ে কবজির ওপর পড়ে। এই কারণে আঙুল ও কবজিতে ব্যথা বাড়ে। এই ভুল এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন। বরং হাত যাতে সাপোর্ট পায় এমন চেয়ার ব্যবহার করুন। আর টাইপ করার সময় অবশ্যই হাত রাখতে হবে হ্যান্ড রেস্টের ওপর। তবেই এই সমস্যা মিটবে। তা না হলে হাতে ও আঙুলে ব্যথা বাড়বে।
চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে: এই ধরনের সমস্যার পেছনে বিভিন্ন ধরনের রোগও দায়ী থাকতে পারে। তাই ঠান্ডা-গরম সেক দেওয়ার পর, এমনকি ওপরের সব টিপস মেনে চলার পরও যদি ব্যথা না কমে, তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।