মালয়েশিয়ার প্রধান উন্নয়ন তহবিলের বিলিয়ন ডলারের আর্থিক কেলেঙ্কারির ঘটনায় জাতির কাছে ক্ষমা চেয়েছেন দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক। নাজিব তুন রাজাকের ক্ষমা চাওয়ার এ বিষয়টিকে স্বাগত জানিয়েছেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম।
রাষ্ট্রীয় তহবিল থেকে অর্থ সরানোর ঘটনায় নাজিব রাজাক বর্তমানে কারাভোগ করছেন। গত বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) রাষ্ট্র পরিচালনায় নিজের ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে মালয়েশিয়ার সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী দাবি করেন, এই কেলেঙ্কারি তিনি শুরু করেননি বা এর ‘মাস্টারমাইন্ড’ তিনি নন। এ সংক্রান্ত একটি লিখিত বিবৃতি কুয়ালালামপুরের আদালত এলাকায় পাঠ করেন তার ছেলে মোহাম্মদ নিজার।
চিঠিতে নাজিব রাজাক বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রী হিসেবে আমার তত্ত্বাবধানে মালয়েশিয়ার প্রধান উন্নয়ন তহবিলে (ওয়ানএমডিবি) বিপর্যয় ঘটেছে জেনে প্রতিদিন আমার কষ্ট হয়। এজন্য আমি মালয়েশিয়ার জনগণের কাছে নিঃশর্তভাবে ক্ষমা চাইছি।’
সাবেক প্রধানমন্ত্রীর আত্মোপলব্ধি ও ক্ষমাপ্রার্থনার এ বিষয়টিকে স্বাগত জানিয়েছেন মালয়েশিয়ার বর্তমান সরকারপ্রধান আনোয়ার ইব্রাহিম। শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) এ নিয়ে একটি বিবৃতি দেন তিনি।
প্রসঙ্গত, ২০০৯ সালে নাজিব রাজাক প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে মালয়েশিয়ার প্রধান উন্নয়ন তহবিল ওয়ান মালয়েশিয়া ডেভেলপমেন্ট বেরহাদ থেকে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে। উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা এবং তাদের সহযোগীরা জড়িত ছিলেন এ কেলেঙ্কারিতে। সেখান থেকে ১০ মিলিয়ন ডলার গ্রহণের প্রমাণ পাওয়া যায় নাজিবের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে কমপক্ষে ছয়টি দেশে দুর্নীতির তদন্ত হয়। পরে বিশ্বাসভঙ্গ, ক্ষমতার অপব্যবহার ও মুদ্রাপাচারের অভিযোগে মামলা হয় নাজিবের বিরুদ্ধে।
২০২০ সালে মামলার রায়ে নাজিবকে ১২ বছরের কারাদণ্ড এবং ২১ কোটি রিংগিত জরিমানা করা হয়। পরে মালয়েশিয়ার সাবেক রাজার সভাপতিত্বে একটি ‘ক্ষমা বোর্ড’ এই সাজা অর্ধেক করে দেয়।
পাঁচ বছর আগে শুরু হওয়া ওয়ানএমডিবির দুর্নীতি মামলায় নাজিবকে আত্মপক্ষ সমর্থন করতে হবে কি না আগামী বুধবার সিদ্ধান্ত নেবে কুয়ালালামপুরের উচ্চ আদালত।