সাতক্ষীরায় উৎসবমুখর পরিবেশে আজ শুক্রবার গোবিন্দভোগ, গোলাপখাসসহ স্থানীয় জাতের আম পাড়া শুরু হয়েছে। আজ সকালে শহরের কুকরালী এলাকার একটি বাগানে আম পেড়ে কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শেখ মঈনুল ইসলাম ও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাতেমা তুজ জোহরা।
এর আগে গত ১৭ এপ্রিল সাতক্ষীরায় ১২ মে থেকে আম পাড়ার দিন নির্ধারণ করেছিল জেলা প্রশাসন ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। তবে নির্ধারিত দিনের আগে পাকতে শুরু করায় আম পাড়ার সময় এক সপ্তাহ এগিয়ে আনা হয়। সেই হিসাবে আজ থেকে গোবিন্দভোগ, গোপালভোগ, বোম্বাই, গোলাপখাস, বৈশাখীসহ স্থানীয় জাতের আম পাড়া ও বাজারজাতে কোনো বাধা থাকল না।
সাতক্ষীরায় আম পাড়ার সময় ৭ দিন এগোল
সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সাইফুল ইসলাম বলেন, সাতক্ষীরার আমের সুখ্যাতি দেশ ছাড়িয়ে এখন বিদেশেও। আমের গুণগত মান ঠিক রাখতে চাষিদের সঙ্গে আলোচনা করে আম পাড়ার দিন নির্ধারণ করে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসন। সেই হিসাবে ১২ মে থেকে গোপালভোগ, গোবিন্দভোগসহ স্থানীয় জাতের আম; ২৫ মে থেকে হিমসাগর ও ক্ষীরশাপাতি; ১ জুন থেকে ল্যাংড়া এবং ১৫ জুন থেকে আম্রপালি আম পাড়ার দিন নির্ধারণ করা হয়।
সাইফুল ইসলাম আরও বলেন, আবহাওয়ার কারণে সাতক্ষীরায় গোপালভোগ, গোবিন্দভোগ ও বোম্বাই আম আগে পাকা শুরু করায় আম পাড়া ও বাজারজাতের নির্ধারিত সময় সাত দিন এগিয়ে ৫ মে করা হয়েছে। তবে অন্যান্য জাতের আম পাড়ার তারিখ আগের মতোই আছে। সেই অনুযায়ী আজ সকালে অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আম পাড়া কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়।
সাতক্ষীরার কোন আম কবে থেকে পাড়া যাবে, জানাল প্রশাসন
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসন ও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর আয়োজিত সভায় ইউএনও ফাতেমা তুজ জোহরার সভাপতিত্বে এবং সদর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা প্লাবনী সরকারের সঞ্চালনায় আম সংগ্রহের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শেখ মঈনুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মনিরুল ইসলাম এবং সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সভাপতি শেখ মমতাজ আহমেদ।
বক্তারা বলেন, সাতক্ষীরার আম সুস্বাদু ও অগ্রিম পাকায় দেশে ব্যাপক চাহিদা আছে। আম পাড়ার নির্ধারিত সময়ে আম পাড়লে এবং বাজারজাত করলে আমের মান ভালো থাকে, অন্যথায় সাতক্ষীরার আমের সুনাম নষ্ট হয়। চাষি ও ব্যবসায়ীদের আমের মান ঠিক রেখে বাজারজাত করার অনুরোধ জানান বক্তারা।
অনুষ্ঠানে আমচাষি মোকছেদ মোড়ল বলেন, তাঁর ২০টি বাগানে সব মিলিয়ে খরচ হয়েছে ২৩ থেকে ২৪ লাখ টাকা। গাছে আমের ফলন ভালো হয়েছে। অনুকূল পরিবেশ আছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে তিনি চলতি বছর সাত থেকে আট লাখ টাকা লাভ করতে পারবেন বলে আশা করছেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত চাষিরা জানান, ২৫ মে থেকে হিমসাগর ও ক্ষীরশাপাতি, ১ জুন থেকে ল্যাংড়া এবং ১৫ জুন থেকে আম্রপালি¤আম পাড়ার তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু ইতিমধ্যে বাগানে হিমসাগর আম পাকতে শুরু করেছে। তাঁরা আম পাড়ার তারিখ পুনর্নির্ধারণের দাবি জানিয়েছেন।