বিক্ষোভে উত্তাল ফ্রান্স, গ্রেপ্তার ৪৫৭

0
120
প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁর পেনশন সংস্কারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে উত্তাল ফ্রান্স

প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁর পেনশন সংস্কারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে ফ্রান্স। বৃহস্পতিবার নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় ৪৫৭ বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সংঘর্ষে ১৫০ জন নিরাপত্তাকর্মী আহত হয়েছেন বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেরাল্ড ডারমানিন জানিয়েছেন।

ফ্রান্স সরকারের প্রস্তাবিত অবসর নীতিমালার বিরুদ্ধে তিন মাস ধরে চলমান বিক্ষোভে এটিকে সবচেয়ে বড় সহিংসতার ঘটনা বলে উল্লেখ ধরা হচ্ছে। গত জানুয়ারির মাঝামাঝিতে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট মাখোঁ সরকারি কর্মচারীদের অবসরে যাওয়ার বয়স বাড়ানোর উদ্যোগ নেন। অবসরের বয়স ৬২ থেকে বাড়িয়ে ৬৪ করার পরিকল্পনা হয় এবং পার্লামেন্টে কোনো ধরনের ভোটাভুটি ছাড়াই এ সংস্কার পরিকল্পনা বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত হয়। এর প্রতিবাদে ফ্রান্সের রাস্তায় বিক্ষোভ চলছে। বৃহস্পতিবার বিক্ষোভ বড় ধরনের সহিংসতায় রূপ নেয়।

বৃহস্পতিবার রাজধানী প্যারিসসহ বিভিন্ন জায়গায় সহিংসতা হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা অগ্নিসংযোগ করেছেন। নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা বিক্ষোভকারীদের ওপর কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়েছেন এবং লাঠিপেটা করেছেন। দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় বর্দো শহরের পৌর ভবনের বারান্দায় অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।

প্যারিসে কয়েকশ কালো পোশাকধারী উগ্রপন্থি বিক্ষোভকারী ব্যাংক, দোকান ও ফাস্টফুড রেস্তোরাঁর জানালা ভেঙে ফেলেছেন এবং সড়কে থাকা বিভিন্ন সরঞ্জাম নষ্ট করেছেন।

ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, বৃহস্পতিবার দেশজুড়ে বিভিন্ন জায়গায় ১০ লাখ ৮৯ হাজারের মতো মানুষ বিক্ষোভে অংশ নেন। শুধু প্যারিসে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন ১ লাখ ১৯ হাজার মানুষ। গত জানুয়ারিতে বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর এটি ছিল রাজধানী শহরটিতে সবচেয়ে বড় জমায়েত। তবে দেশজুড়ে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক মানুষ অংশ নিয়েছিলেন ৭ মার্চের বিক্ষোভে। সরকারি হিসাব অনুযায়ী, ওইদিন বিভিন্ন জায়গায় মোট ১২ লাখ ৮০ হাজার মানুষ বিক্ষোভে যোগ দিয়েছিলেন।

বুধবার ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ অবসরকালীন সংস্কারকে জরুরি বলে উল্লেখ করার পর বিক্ষোভকারীরা আরও ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। এদিন মাখোঁ বলেছেন, এ সংস্কার করতে গিয়ে তাঁর জনপ্রিয়তা কমে গেলেও তিনি তা মেনে নিতে প্রস্তুত আছেন।

এদিকে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট দপ্তর এলিসি প্যালেস শুক্রবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, আগামী মঙ্গলবার আবারও রাস্তায় নামার হুমকি দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। আর এ বিষয়টি বিবেচনা করে রাজা তৃতীয় চার্লসের সফর স্থগিত করা হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এবং রাজা গতকাল সকালে ফোনে কথা বলেন। এ ফোনকলের পর ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্য সরকার এ সিদ্ধান্ত (সফর বাতিল) নিয়েছে। মহামান্যকে (তৃতীয় চার্লসকে) আমাদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের সঙ্গে মেলে এমন সময় স্বাগতম জানানো হবে। এই রাষ্ট্রীয় সফরটির দিন ও তারিখ যত দ্রুত সম্ভব আবারও পুনর্নির্ধারিত হবে। খবর বিবিসি ও এএফপির।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.