মাগুরা-১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী জাতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকে শোকজ করা হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) গঠন করা মাগুরা-১ নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির কাছে সশরীর উপস্থিত হয়ে শোকজের জবাব দিতে বলা হয়েছে সাবিককে।
আওয়ামী লীগের প্রার্থী হওয়ার পর বুধবার প্রথম নির্বাচনী এলাকায় যান সাকিব আল হাসান। মাগুরায় পৌঁছে তিনি একাধিকবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আচরণবিধি লঙ্ঘন করেন। আজ বৃহস্পতিবার মাগুরা-১ নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির প্রধান এবং যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ সত্যব্রত শিকদারের সই করা চিঠিতে বলা হয়েছে, সাকিব আল হাসান কামারখালী এলাকা থেকে গাড়িবহর নিয়ে মাগুরা শহরে ঢোকেন। তিনি নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেন। এতে চলাচলের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়। এই কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে তিনি নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হবে না সে ব্যাপারে লিখিত ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, বুধবার দুপুর ১২টার দিকে বিশাল গাড়ির বহর নিয়ে ঢাকা থেকে সড়কপথে মাগুরায় যান সাকিব। তাকে অভ্যর্থনা জানাতে সকাল থেকে মাগুরা ও ফরিদপুরের সীমান্ত গড়াই সেতু এলাকায় অবস্থান নেন হাজারও নেতাকর্মী ও সমর্থক। কামারখালীর গড়াই সেতু থেকে মাগুরা শহরে ১২ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে সাকিবের প্রায় দুই ঘণ্টা সময় লেগে যায়। এ সময় ওয়াপদা বাজার ও কামারখালী সেতু এলাকায় যানজট সৃষ্টি হয়।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আচরণবিধিমালা অনুসারে, কোনো নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল কিংবা তাদের মনোনীত প্রার্থী বা তাদের পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি কোনো ট্রাক, বাস, মোটরসাইকেল বা অন্য কোনো যান্ত্রিক যানবাহন নিয়ে মিছিল বের করতে পারবেন না। মহড়াও করা যাবে না।
আচরণবিধি ভঙ্গের বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ হায়দার বলেন, তিনি (সাকিব) যেহেতু একজন সেলিব্রেটি (তারকা), জাতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক, এখানে তার ভক্তরা জড়ো হয়েছেন। এখানে রাজনৈতিকভাবে কেউ জড়ো হননি। এখানে পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। এ কারণে আমার মনে হয়, আমরা আচরণবিধি লঙ্ঘন করিনি।
তবে জনদুর্ভোগের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন সাকিব। বুধবার দুপুরে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে তিনি বলেন, অনেক সময় অনেকে অতি-উৎসাহী হয়ে অনেক কিছু করে ফেলেন। তবে আমি সবাইকে অনুরোধ করব, সবাই যেন সংযত থাকেন। পোস্টার লাগানো, লিফলেট লাগানো, মাইক বাজানো-সবকিছুই যেন করা হয়—এই ভেবে যে মানুষের কষ্ট যেন না হয়। এ সময় সাকিব সবাইকে আচরণবিধি মেনে চলার অনুরোধ করেন।
তিনি বলেন, এটা আমাদের দল, আমাদেরই প্রবলেম (সমস্যা) হবে, যদি আচরণবিধি আমরা মেনে না চলি।
এ বিষয়ে মাগুরার জেলা প্রশাসক ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবু নাসের বেগ গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, আচরণবিধি লঙ্ঘন হয়েছে, এমন কোনো খবর এখনও আমার কাছে আসেনি। আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে ম্যাজিস্ট্রেটরা কাজ করছেন চারদিকে। আচরণবিধি লঙ্ঘনের কোনো অভিযোগ লিখিতভাবে কেউ দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।