সরকারই কোনো রাস্তা খোলা রাখেনি

0
166
বিএনপির চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ঢাকা, ২৩ জুলাই

এক দফার আন্দোলনে আগামী বৃহস্পতিবার ঢাকায় মহাসমাবেশ করতে যাচ্ছে বিএনপি। আন্দোলনের চূড়ান্ত পর্যায়ে এসে গণ–অভ্যুত্থান সৃষ্টি করতে চাইছে দলটি। তবে কোনোভাবেই সহিংস কর্মসূচিতে না যাওয়ার কথা বলছে তারা। এক দফার আন্দোলন, বৃহস্পতিবারের মহাসমাবেশসহ বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে গত রোববার বিএনপির চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে কথা বলেছে প্রথম আলো। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন কাদির কল্লোল ও সেলিম জাহিদ 

মির্জা ফখরুল: আসলেই তো আমরা শেষ পর্যায়ে চলে এসেছি। এক দফা দাবি যখন আমরা দিয়েছি, তখনই তো বুঝতে হবে যে আমরা একটি চূড়ান্ত আন্দোলনের দিকে যাচ্ছি। এক দফা হচ্ছে সরকারের পদত্যাগ। কেন পদত্যাগ—বেসিক্যালি এই সরকার তো অবৈধ সরকার। পঞ্চদশ সংশোধনী (সংবিধানের এই সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করা হয়) অবৈধভাবে উপস্থাপন করে পাস করা হয়েছে। তার পরিপ্রেক্ষিতে যে সরকার এসেছে, সেটা অবৈধ। দ্বিতীয়ত, ২০১৮-তে কোনো নির্বাচনই হয়নি। সুতরাং কোনোমতেই এটা বৈধ সরকার হতে পারে না। সে কারণেই আমরা প্রথমেই বলেছি, এই অবৈধ সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। ৩ নম্বরে আমরা বলেছি, এই সংসদও বৈধ নয়, তাকেও বিলুপ্ত করতে হবে। একটা নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা দিতে হবে। এরপর আমরা বলেছি যে একটা নতুন নির্বাচন কমিশনও গঠন করতে হবে। যে কমিশন নতুন করে নির্বাচন করবে। সেই দাবির পরিপ্রেক্ষিতেই কিন্তু আমরা এক দফা দিয়েছি। এক দফার প্রথম কথা হচ্ছে, তাদের পদত্যাগ করতে হবে। এ কারণেই আজকে এটা বলতে পারেন, আন্দোলন একটা চূড়ান্ত পর্যায়ে এসেছে।

আপনারা একের পর এক বড় কর্মসূচি দিচ্ছেন। এ ক্ষেত্রে সরকারেরও নিশ্চয়ই একটা কৌশল থাকবে। যদি অনুমতি (মহাসমাবেশ) না দেয় অথবা আবারও ১০ ডিসেম্বরের মতো পরিস্থিতি যদি তৈরি হয়…

মির্জা ফখরুল: আমরা কিন্তু সরকারের কাছে অনুমতি চাচ্ছি না। প্রতিবারই আমরা যেটা করি, সেটা হচ্ছে অবহিত করি। তখন পুলিশ বলে যে আপনারা ওখানে করেন বা ওখানে করেন। তাদের সুবিধা অনুযায়ী, ট্রাফিক যেন না হয়, সেটা করে আরকি। আমরা সেভাবেই তাদের সঙ্গে কথা বলছি যে আমরা সভাটা করতে চাই। যে অপশনগুলো আছে তারা বলুক, কোথায় বা কী। আমরা সভা করব ঢাকায়। মহাসমাবেশ আমরা করব। সেটাতে আমরা ডিটারমাইন্ড (অনড়)।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

মির্জা ফখরুল: সরকারই এই কাজটা শুরু করেছে প্রথম। তারা প্রথমেই বলেছে যে কোনো সংলাপ নয়। বিএনপির সঙ্গে আবার কিসের সংলাপ। নিশ্চয়ই মনে আছে আপনাদের। তারপর বলেছে যে এই সংবিধানের অধীনেই নির্বাচন হতে হবে এবং পরিষ্কার করে বলেছে যে শেখ হাসিনার অধীনেই নির্বাচন হতে হবে। তারাই (সরকার) তো কোনো রাস্তা খোলা রাখছে না। আমাদের দিক তো আমরা বাধ্য হয়ে বলছি যে এখন এটা (পদত্যাগ) করতে হবে। কোনো অপশন (উপায়) নেই।

মির্জা ফখরুল: আমরা তো সংঘাত করতে চাই না। আমরা সংঘাতে বিশ্বাসও করি না। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে ২০১১ সালে যখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধানটা বাতিল করে সংসদে পঞ্চদশ সংশোধনীটা পাস করল, এটাই কিন্তু সংঘাতের সূত্রপাত করে দিয়েছে। ওই দিনই আমাদের চেয়ারপারসন গুলশানের এই কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বলেছিলেন যে দেশে স্থায়ীভাবে একটা অস্থিতিশীলতা, অনিশ্চয়তা এবং একটা সংঘাতময় পরিস্থিতির রাজনীতি শুরু হলো। এটাই আজকে প্রমাণিত হয়েছে যে ম্যাডামের (খালেদা জিয়া) সেদিনকার কথাটা সত্য ছিল। গত কয়েক বছরে দেখেন, ২০১৪-তে হয়েছে, ২০১৮-তে হয়েছে। সব সংঘাত হয়েছে। সরকার এখানে তার রাষ্ট্রীয় বাহিনী প্রয়োগ করে জোর করে মানুষের ভোটের অধিকারটা নিয়ে গেছে।

মির্জা ফখরুল: সেটা আমরা প্রকাশ্যেই বলছি। সেটা হচ্ছে, জনগণের একটা গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে বিজয় অর্জন করতে চাই আমরা।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

সেই গণ-অভ্যুত্থানের জন্য যে পরিবেশ দরকার, সেটা হতে সরকার দেবে না। সরকার আটকে দিল।

মির্জা ফখরুল: গণ-অভ্যুত্থানের পরিবেশ সরকার কোনো দিনই দেয় না। কোনো সরকারই দেয় না। সেটা জনগণ তৈরি করে নেয়।

মির্জা ফখরুল: এটা আমরা মনে করি যে এখন পরিস্থিতি সে রকমই আছে। জনগণ আর এ সরকারকে চাচ্ছে না।

মির্জা ফখরুল: আমাদের প্রতিটা কর্মসূচি হচ্ছে জনসম্পৃক্ত। একেবারেই শান্তিপূর্ণ, অহিংস কর্মসূচি আমাদের। আমরা জনগণের সম্পৃক্ত কর্মসূচি বলতে যা বোঝায়, সমাবেশ, অবস্থান—এ ধরনের কর্মসূচিতে থাকব। অন্য কোনো কর্মসূচিতে আমাদের ইচ্ছাও নেই, আমরা যাবও না।

মির্জা ফখরুল: হরতালে তো আমরা যাচ্ছিই না ঘোষিতভাবে। কোনো সহিংস কর্মসূচিতে আমরা যাব না। যাইনি, যাব না। আপনারা তো দেখতেই পাচ্ছেন, আমরা যাইনি। শান্তিপূর্ণভাবেই আমাদের সব কর্মসূচি হবে।

মির্জা ফখরুল: এটা সম্পূর্ণ সরকারের দায়দায়িত্ব। আমরা যেটা ঘোষণা করেছি, সেটাতেই থাকব। এখন পর্যন্ত প্রমাণও করেছি যে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি করে এসেছি। শত উসকানির মুখেও আমরা এতটুকুও ওই জায়গা থেকে সরিনি। যদি অন্য কিছু ঘটে, এর জন্য সম্পূর্ণ দায়দায়িত্ব সরকারের।

মির্জা ফখরুল: সরকার বরাবরই আক্রমণাত্মক। সরকার তার অবৈধ ক্ষমতাকে টিকিয়ে রাখার জন্য রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করছে। শুধু বিদেশিরা যখন ছিল, তখন হয়তো বিদেশিদের দেখানোর জন্য ওভার অ্যাক্ট করেনি। ঘটনা তো ঘটেই যাচ্ছে।

মির্জা ফখরুল: চাপ তো অবশ্যই আছে। চাপ এত বেশি আছে যে মন্ত্রীরা-প্রধানমন্ত্রী আবোলতাবোল কথা বলতে শুরু করেছেন। এটা তো আশা করা যায় যে প্রধানমন্ত্রী আমেরিকা থেকে ফিরে এসে বললেন, ওরা আমাকে সরিয়ে দিতে চায়। এটাতে কী প্রমাণ করে, তার মানে আপনি চাপে আছেন। ২ নম্বর হচ্ছে, আমি যদি সেন্ট মার্টিন দিয়ে দিতাম, তাহলে আর কোনো সমস্যা ছিল না। আমি গ্যাস দিতাম, সমস্যা ছিল না। এ কথাগুলো প্রমাণ করেছে যে তাদের ওপর চাপ পড়েছে। কিন্তু আমাদের প্রশ্নটা যে জায়গায়, সেটা হচ্ছে আমাদের জনগণের চাপটা বোধ করছে নিশ্চয়ই। এ চাপটা যদি বোধ না করে, তাহলে বলতে হবে, দায়িত্বহীন রাজনৈতিক দল এটা (আওয়ামী লীগ)।

মির্জা ফখরুল: কূটনীতিকেরা (বিদেশি) কি কোনো সমঝোতার জন্য দৌড়ঝাঁপ করছে? আমার মনে হয় না। মনে হয়নি আমার। এখন পর্যন্ত কোনো সমঝোতার দৌড়ঝাঁপ আমি দেখিনি। যেমন ইইউ আসছে, ওরা ইলেকশন অবজারভার পাঠাবে কি পাঠাবে না, সেটার কাজ করছে। সমঝোতার কোনো কথাবার্তা তাদের মধ্যে নেই।

মির্জা ফখরুল: না, তারা ওই ধরনের কথা কখনোই বলে না। ওরা যা বলে সরাসরি বলে যে আমরা অংশগ্রহণমূলক, অন্তর্ভুক্তিমূলক অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। এই একটা কথাতেই থাকে তারা। এর বাইরে তারা যায় না। তবে তাদের সবকিছু শারীরিক ভাষা, কথাবার্তায় এটা পরিষ্কার বোঝা যায় যে তারা সত্যিকার অর্থেই এবারের অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চায়। আমেরিকা তো কিছু কাজই (ভিসা নীতি) করে ফেলেছে নির্বাচনকে লক্ষ্য করে।

আওয়ামী লীগের অভিযোগ, এই যে বিদেশিরা তৎপর, এর পেছনে বিএনপির ভূমিকা আছে, বিএনপিই নিয়ে এসেছে।

মির্জা ফখরুল: বিএনপির কোনো ভূমিকা নেই। এখানে ভূমিকা হলো সম্পূর্ণ সরকারের। সরকারের ব্যর্থতা, গণতন্ত্রের প্রতি তাদের প্রতারণা, একটা ছলনা—এটাই হচ্ছে এর কারণ। বিদেশিদের সম্পৃক্ত হওয়ার মূল কারণ হচ্ছে যে বাংলাদেশে গত দুটি (২০১৪ ও ২০১৮) নির্বাচন হয়নি।

মির্জা ফখরুল: সবচেয়ে সহজ হচ্ছে সংসদে তাদের (সরকার) নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে। আমরাও তো করেছিলাম (১৯৯৬ সালে)। তারাও সেটা করুক। বিএনপিকে তো নির্বাচন করে সেটা করতে হয়েছে। তাদের জন্য তো সেটা আরও সহজ। কারণ, এখনো সংসদ আছে, তাদের দুই-তৃতীয়াংশের বেশি সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে। তারা সংশোধনীটা (সংবিধান) সহজে করতে পারে। আরেকটা হতে পারে, হ্যাঁ, আমরা এটা করব। নিরপেক্ষ সরকার গঠন করব। এটা বলে তারা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কথা বলতে পারে। ঘোষণাটা দিলেই হলো যে আমরা নির্দলীয় সরকার করব।

মির্জা ফখরুল: এর জন্য সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে। যেটা আমি সব সময় বলে আসছি যে চালককে উদ্যোগ নিতে হবে। তারা সরকারে আছে, তাদের উদ্যোগ নিতে হবে। অন্য কেউ তো উদ্যোগ নেবে না। এই সংকট থেকে বের হওয়ার জন্য তাদের উদ্যোগ নিয়ে বলতে হবে যে আমরা তত্ত্বাবধায়ক সরকার করব। খুব কঠিন না তো, তারা যেভাবে বাতিল করেছে, ওভাবেই আজকে…সংসদেই তো তারা সংশোধন করতে পারে।

আপনি বলছেন, নির্দলীয় সরকার গঠনের বিষয়টি যদি সরকার গ্রহণ করে, তাহলে আলোচনা হতে পারে। সরকারকেই সেই উদ্যোগ নিতে হবে। কিন্তু সরকার সংবিধানের বাইরে যাবে না। তারা বলছে যে শেখ হাসিনার অধীনেই নির্বাচন হবে। তাহলে আলোচনার আর কোনো সুযোগ থাকে?

মির্জা ফখরুল: আমি কোনো কথাকেই শেষ কথা মনে করি না। রাজনীতিতে শেষ কথা বলে কিছু নেই। জনগণের চাহিদা ও চাপের কাছে নতিস্বীকার করে এটাকে মেনে নিতে হবে, সরকার বাধ্য হবে। সরকারের জন্য সবচেয়ে ভালো সেফ এক্সিট (নিরাপদ প্রস্থান) করা। নির্দলীয় সরকারব্যবস্থা মেনে নিয়ে একটা নির্বাচন দেওয়া, সেই নির্বাচনে যে-ই ক্ষমতায় আসুক। সেই ব্যবস্থা তাদের করা উচিত। এতে তাদের জন্য রাজনৈতিক, গণতান্ত্রিক এবং নৈতিক—সব দিক থেকেই ভালো হবে।

মির্জা ফখরুল: জামায়াত তাদের রাজনীতি করছে। যেমন আমরা গণতন্ত্র মঞ্চ বা আরও কয়েকটি দল ও জোটের সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলন করছি। এর বাইরে আরও কয়েকটি দল লেবার পার্টি, অলি আহমদের দল এলডিপি ও গণফোরাম আন্দোলন করছে। অন্যদিকে কমিউনিস্ট পার্টি বলেছে, এ সরকারের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। এই একই কথা বলেছেন চরমোনাইয়ের পীর সাহেব। এমনকি জাতীয় পার্টির জি এম কাদেরও বলছেন যে সরকার নির্বাচনের ফলাফল তৈরি করে দেয়। এখন দেশের প্রায় সব দলই বলছে যে এ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না।

মির্জা ফখরুল: সেই জোট ভেঙে গেছে। জামায়াত জামায়াতের রাজনীতি করছে। সেখানে আমাদের সঙ্গে সম্পর্ক নেই।

মির্জা ফখরুল: এ রকম চেষ্টা আছে। রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন দেওয়ার বিষয়টা দেখলেই বোঝা যায়। যাদের কোনো তৎপরতাই নেই, তাদের নিবন্ধন দিয়েছে। আর যারা এত দিন ধরে রাজনীতি করছে, তাদের নিবন্ধন দেওয়া হলো না। এটাতেই বুঝতে পারবেন যে সরকারের উদ্দেশ্যটা কী? জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতি সরকারের বিন্দুমাত্র সম্মানবোধ নেই। নির্বাচনে যেভাবেই হোক, তাদের যেতে হবে—নির্বাচনের প্রজেক্ট তারা (সরকার) তৈরি করে রেখেছে। আমরা আওয়ামী লীগের কাছে এটা আশা করিনি, গত তিন মেয়াদে তারা যা করল। একেবারে টিপিক্যাল, সেই মিলিটারি সরকারগুলোর মতো দল ভাঙাসহ বিভিন্ন অপতৎপরতা চালিয়ে তারা ক্ষমতায় থাকতে চায়।

মির্জা ফখরুল: এ রকম থাকে সব সময়। এর আগেও এ রকম কথা ছিল। বিএনপি থেকে নিয়েও গেছে, কোনো লাভ হয়নি। আমি বরাবরই যেটা বলি যে বিএনপি থেকে যারা যাবে, এটা তাদের জন্য আত্মহত্যার পথ বেছে নেওয়ার মতো হবে। কারণ, বিএনপি থেকে গিয়ে কেউ কোনো দিন লাভবান হতে পারেনি। বেরিয়ে গিয়ে আলাদা দল করেছে, লাভবান হয়নি। দেখেন, বদরুদ্দোজা চৌধুরী সাহেবের মতো বিশাল মানুষ আলাদা দল করলেন, তিনি কিন্তু কিছু করতে পারেননি। মওদুদ ভাই গিয়ে আবার তাঁকে ফিরে আসতে হয়েছে। ওবায়দুর রহমান গিয়ে আবার তাঁকেও ফিরে আসতে হয়েছে। মূল দল থেকে বাইরে গিয়ে কোনো লাভ হয় না।

মির্জা ফখরুল: শেষ ধাক্কা বলে আমি মনে করি না। এবার ওদের (সরকার) জন্য শেষ ধাক্কা। আমাদের ধাক্কাটা ওদের প্রতি শেষ ধাক্কা, ওরা মনে করে। আওয়ামী লীগ রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে গেছে। আওয়ামী লীগের কোনো সমস্যাই ছিল না, যদি সে রাজনীতি করত। তারা যখনই রাজনীতি ছেড়ে দিয়ে সামরিক- বেসামরিক আমলাদের ওপর নির্ভরশীল হয়ে গেছে এবং যখনই একদলীয় শাসনের দিকে যেতে শুরু করেছে, তখনই তারা দেউলিয়া হয়ে পড়েছে। গণতন্ত্রের প্রতি ন্যূনতম সম্মানবোধ ও শ্রদ্ধাবোধ তারা রাখেনি। তাদের কথা বলার ভাষা যদি দেখেন, সেগুলোই গণতান্ত্রিক নয়। তারা বলে, ছেঁকে ছেঁকে বের করব। এটা কিরে ভাই, এটা কোনো ভাষা! এ ধরনের কথা একজন প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে তো আমরা আশা করতে পারি না।

মির্জা ফখরুল: বিএনপি ক্ষমতায় যাবে কি যাবে না, এটা আমাদের কাছে মুখ্য ব্যাপার নয়। আমাদের কাছে মুখ্য বিষয় জনগণ তার ভোটের অধিকার ফিরে পাবে কি না। আমরা কিন্তু বিএনপির কথা বলিনি। আমরা বলেছি, আন্দোলনের পর আমরা যদি নির্বাচনে যাই এবং সেই নির্বাচনে আমরা জয়যুক্ত হই, তাহলে আমরা জাতীয় সরকার গঠন করব আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী সব দলকে নিয়ে। সেখানে জাতীয়ভাবে একটা ঐকমত্য সৃষ্টি করে আমরা রাষ্ট্র পরিচালনার বিষয় চিন্তা করছি।

মির্জা ফখরুল: আমরা এটা খুব পরিষ্কার জবাব দিয়েছি। আমরা যদি আন্দোলনে জয়ী হই বা না হই, আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়া। আর ওনার অবর্তমানে বা অনুপস্থিতিতে আমাদের নেতা হচ্ছেন তারেক রহমান। এটা তো কোনো পরিবর্তন আমরা করিনি। এরপরে এ নিয়ে প্রশ্ন করার কোনো সুযোগ তো নেই।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.