তথ্য গোপন রেখে দায়িত্ব পালন করার সুযোগ দেওয়ার অভিযোগে রাজশাহীর বাগমারার হাটগাঙ্গোপাড়া উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রের কেন্দ্রসচিবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে উপজেলা প্রশাসন। প্রাথমিকভাবে তাঁকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার কেন্দ্রসচিবের কাছে চিঠি পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া অনিয়ম করায় পাঁচ শিক্ষককে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
হাটগাঙ্গোপাড়া পরীক্ষাকেন্দ্রের পাঁচ শিক্ষকের সন্তান এবার এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। এটা গোপন রেখে তাঁরা পরীক্ষায় কক্ষ পরিদর্শকের দায়িত্ব পালন করছেন।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ৩০ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া এসএসসি পরীক্ষা উপজেলার পাঁচটি কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। কেন্দ্রগুলো হলো ভবানীগঞ্জ সরকারি উচ্চবিদ্যালয়, মচমইল উচ্চবিদ্যালয়, হাটগাঙ্গোপাড়া উচ্চবিদ্যালয়, সাঁকোয়া উচ্চবিদ্যালয় ও তাহেরপুর উচ্চবিদ্যালয়।
গত ১৮ এপ্রিল পরীক্ষাসংক্রান্ত প্রস্তুতি সভায় কোনো শিক্ষকের সন্তান এবারের এসএসসি পরীক্ষার্থী থাকলে তাঁরা কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ওই সময় প্রতিষ্ঠানপ্রধান, কেন্দ্রসচিব ছাড়াও প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সভায় নেওয়া সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ এফ এম আবু সুফিয়ান নির্দেশনা দেন।
এদিকে তথ্য গোপন রেখে উপজেলার হাটগাঙ্গোপাড়া উচ্চবিদ্যালয় পরীক্ষাকেন্দ্রে পাঁচজন শিক্ষক পরীক্ষায় যথারীতি দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। তাঁরা হলেন শেরকোল শিমলা উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রেজাউল হক, বাইগাছা উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নুরুল ইসলাম ও রেকেবা খাতুন, বানইল উচ্চবিদ্যালয়ের আলতাফ হোসেন ও নরদাশ উচ্চবিদ্যালয়ের আবদুল হাকিম। তাঁদের সন্তানেরা হাটগাঙ্গোপাড়া পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে পরীক্ষা দিচ্ছে। আর তাঁরা কক্ষ পরিদর্শক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। অভিযোগ ছিল, তাঁরা সন্তানদের পরীক্ষাকেন্দ্রে নানাভাবে সহযোগিতা করতেন।
বিষয়টি ইউএনওর নজরে এলে তিনি গতকাল সকালে গণিত বিষয়ে পরীক্ষা চলার সময়ে হাটগাঙ্গোপাড়া পরীক্ষাকেন্দ্র পরিদর্শনে যান। সেখানে গিয়ে তথ্য গোপন রেখে পাঁচ শিক্ষককে কক্ষ পরিদর্শকের দায়িত্ব পালন করতে দেখেন। তিনি ওই পাঁচ শিক্ষককে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেন। এ ছাড়া ওই কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত সচিব হাটগাঙ্গোপাড়া উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলামকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
ইউএনও এ এফ এম আবু সুফিয়ান বলেন, পরীক্ষার্থীদের বাবা-মায়েরা দায়িত্ব পালন করাতে পরীক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বিঘ্নিত হতে পারে, এমন ভাবনা থেকে তাঁদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রসচিবকে অব্যাহতি দিয়ে তাঁর ব্যাপারে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
এ বিষয়ে কেন্দ্রসচিব শহিদুল ইসলাম বলেন, ওই পাঁচ শিক্ষক তথ্য গোপন রেখে পরীক্ষায় কক্ষ পরিদর্শকের দায়িত্ব নিয়েছিলেন। তাদের নামের তালিকা সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয় থেকে দেওয়া হয়েছিল।
পাঁচ শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁরা এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে চাননি।