জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতির অগ্রগতিসহ সার্বিক বিষয়ে আলোচনা সভায় অংশ নিতে ৪৪টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলকে চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। চিঠি দেওয়া হয়েছে বিএনপিকেও, যে দলের শীর্ষ নেতাদের তিনজন কারাগারে, বেশির ভাগ আত্মগোপনে। ৪ নভেম্বর শনিবার এই সভা হবে।
আজ বুধবার এই চিঠি দেওয়া হয় বলে নিশ্চিত করেছে ইসি। কমিশনের জনসংযোগ বিভাগের পরিচালক মো. শরিফুল আলম রাতে বলেন, বিএনপির চিঠি পাঠানো হয়েছে নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ঠিকানায়।
ঢাকায় গত ২৮ অক্টোবর সংঘর্ষে বিএনপির মহাসমাবেশ পণ্ড হয়ে যাওয়ার পর দলের নেতাদের বিরুদ্ধে অন্তত ৪২টি মামলা হয়েছে। দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের এলাকা পুলিশ ‘ক্রাইম সিন’ উল্লেখ করে সোমবার পর্যন্ত ঘেরাও করে রেখেছিল। মঙ্গলবার তা সরিয়ে নেওয়া হয়। যদিও কার্যালয়ের সামনে সার্বক্ষণিক পুলিশ থাকে।
বিএনপির সহ-দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম আজ রাতে বলেন, দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় এখনো তালাবদ্ধ। সেটি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে। এ অবস্থায় কারও কোনো চিঠি গ্রহণ করার অবস্থা নেই। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের চিঠি পাওয়ারও কোনো সুযোগ নেই।
নির্বাচন কমিশন দলগুলোকে যে চিঠি দিয়েছে, তার ভাষা একই।
চিঠিতে ইসি বলেছে, সংসদের মেয়াদ পূর্তির কারণে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ৩১ অক্টোবর থেকে আগামী ২৮ জানুয়ারির মধ্যে অনুষ্ঠান করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। নির্বাচন কমিশন নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংসদ নির্বাচন আয়োজনের পূর্বপ্রস্তুতির অগ্রগতিসহ সার্বিক বিষয়ে এক আলোচনা সভার আয়োজন করেছে।
আলোচনা অনুষ্ঠানটি নির্বাচন ভবনের সম্মেলনকক্ষে সকাল সাড়ে ১০টায় অনুষ্ঠিত হবে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল সভায় সভাপতিত্ব করবেন। নির্বাচন কমিশনাররা সভায় উপস্থিত থাকবেন।
চিঠিতে রাজনৈতিক দলগুলোকে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক অথবা মনোনীত দুজন উপযুক্ত প্রতিনিধিকে আলোচনা অনুষ্ঠানে পাঠানোর জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
২৮ অক্টোবরের ঘটনায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে গ্রেপ্তারের পর কারাগারে পাঠানো হয় রোববার। আজ দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলালকে পাঁচ দিন করে রিমান্ড দেন আদালত।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অজ্ঞাত স্থান থেকে সংবাদ সম্মেলন করে দলের কর্মসূচি ঘোষণা করছেন।
ইসি সচিব জাহাংগীর আলম আজ দুপুরে সাংবাদিকদের বলেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতির লক্ষ্যে ইসি যেসব কার্যক্রম নিয়েছে, তা রাজনৈতিক দলগুলোকে অবহিত করা হবে এবং তাঁদের কোনো পরামর্শ থাকলে সেটা শুনবে নির্বাচন কমিশন।
বিএনপি নেতারা কারাগার ও আত্মগোপনে রয়েছেন। এ অবস্থায় তারা যদি বলে তাদের উপযুক্ত প্রতিনিধি নেই, তাহলে ইসি কী করবে, জানতে চাইল কমিশনের সচিব জাহাংগীর আলম বলেন, ‘নো কমেন্টস (মন্তব্য নেই)।’