
যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনীম বৃহস্পতিবার রয়্যাল লন্ডন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শিশু তাফিদা রাকিবকে দেখতে যান। বাংলাদেশি-ব্রিটিশ বংশোদ্ভূত তাফিদা গত ফেব্রুয়ারি থেকে মস্তিস্কে রক্তক্ষরণের কারণে এ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। হাইকমিশনার শিশুটির মা সেলিনা বেগমের কাছে তার সর্বশেষ অবস্থা ও চিকিৎসার ব্যাপারে খোঁজখবর নেন। তিনি এ ব্যাপারে বাংলাদেশ হাইকমিশনের পক্ষ থেকে সব ধরনের সম্ভাব্য সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
পাঁচ মাস ধরে রয়্যাল লন্ডন হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে আছে পাঁচ বছর বয়সী তাফিদা রাকিব। শত আকুতির পরও ইতালিতে নিয়ে চিকিৎসার সুযোগ না দিয়ে লাইফ সাপোর্ট খুলে ফেলার অনুমতি দিতে তারা বারবার চাপ দিচ্ছে তাফিদার পরিবারকে। পেশায় আইনজীবী তাফিদার মা সেলিনা রাকিব এ জন্য আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। পাশাপাশি লাইফ সাপোর্ট খুলে তাফিদাকে মৃত্যুর হাতে তুলে দেওয়ার অনুমতির জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আদালতে গেছে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের যুক্তি- তাফিদার মস্তিস্ক মরে গেছে। তাই শিশুটির বেঁচে ওঠার কোনোই সম্ভাবনা নেই। কিন্তু তাফিদার মা-বাবা এটি মানতে নারাজ। মা সেলিনা রাকিব বলছেন, তার মেয়ের মস্তিস্ক মরেনি, যা পরীক্ষায়ও প্রমাণ হয়েছে। রেসপন্স আছে। পাঁচ মাস ধরে লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায়ও তাফিদা মাঝে-মধ্যে চোখ খুলছে ও অঙ্গপ্রত্যঙ্গ নাড়াচাড়া করছে। ডাক্তাররা একেক সময় একেক কথা বলেন- এমন অভিযোগ করে তিনি বলেন, যেখানে আমরা মেয়ের বেঁচে থাকার আশা ছাড়ছি না, সেখানে লাইফ সাপোর্ট খুলে তাকে চিরতরে ঘুম পাড়িয়ে দেওয়ার জন্য ডাক্তারদের কেন এত চাপাচাপি আমি বুঝতে পারি না।

তাফিদার মা বলেন, তার চিকিৎসার জন্য বিশ্বের বিভিন্ন হাসপাতালে যোগাযোগ করি আমরা। ইতালির বিখ্যাত একটি হাসপাতাল তাফিদার চিকিৎসায় আগ্রহ প্রকাশ করলে আমরা রয়্যাল লন্ডন হাসপাতাল থেকে মেয়ের ছাড়পত্র চাই। কিন্তু ছাড়পত্র না দিয়ে উল্টো লাইফ সাপোর্ট খুলে দিতে হাসপাতালের পক্ষ থেকে বারবার আমাদের চাপ দেওয়া হচ্ছে। বাধ্য হয়ে ছাড়পত্রের জন্য আমরা আদালতের দ্বারস্থ হই।
সেলিনা জানান, তাফিদার ছাড়পত্রের দাবিতে তারা আদালতে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ উল্টো মেয়ের মৃত্যুর অনুমতির জন্য আদালতের শরণাপন্ন হয়েছে। শুধু তাই নয়, লাইফ সাপোর্টে থাকা তাফিদাকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আর কোনো প্রতিষেধক দেবে না- এমন সিদ্ধান্তের পক্ষেও তারা আদালতের অনুমতি চেয়েছেন।