শিলাস্তি রহমানের গ্রামের বাড়িতে গিয়ে যা দেখা গেল

0
63
টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার ধুবুড়িয়া ইউনিয়নের পাইসানা গ্রামে শিলাস্তিদের গ্রামের বাড়ি।

সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার শিলাস্তি রহমানের গ্রামের বাড়িতে গিয়ে পরিবারের কাউকে পাওয়া যায়নি। এলাকাবাসী জানালেন, শিলাস্তির পরিবার রাজধানীর উত্তরায় থাকেন। বছরে দু-একবার গ্রামের বাড়িতে আসেন।

শিলাস্তি রহমানের গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার ধুবুড়িয়া ইউনিয়নের পাইসানা গ্রামে। ওই গ্রামের আরিফুল ইসলামের বড় মেয়ে শিলাস্তি। পেশায় কাপড় ব্যবসায়ী আরিফুল সপরিবার ঢাকায় থাকেন। বছরে দু-একবার গ্রামে গেলেও বাড়িতে খুব কম সময় থাকতেন বলে এলাকাবাসী জানান।

নাগরপুর উপজেলা সদর থেকে প্রায় ছয় কিলোমিটার দক্ষিণে শিলাস্তিদের গ্রাম পাইসানা। এলাকায় শিলাস্তিদের বাড়িটি ‘মিয়া বাড়ি’ নামেই পরিচিত। মিয়া বাড়ির নাম বলতেই একজন ভ্যানচালক জানালেন, কোন পথে যেতে হবে। তাঁর কথামতো ধুবুড়িযা চৌরাস্তা পর্যন্ত গিয়ে ইট বিছানো পথ ধরে মিয়া বাড়িতে যেতে হয়। বাড়ির কাছে গাছতলায় তিনজন নারীকে দাঁড়িয়ে কথা বলতে দেখা গেল।

শিলাস্তিদের বাড়ি কোনটা জানতে চাইলে দেখিয়ে দেন। শিলাস্তির গ্রেপ্তারের বিষয়টি তাঁরা জানেন, সেটিও জানালেন। বাড়িতে ঢুকে দেখা গেল, শিলাস্তিদের টিনের ঘরে তালা ঝুলছে। পাশেই দোতলা একটি নির্মাণাধীন বাড়ি। দরজা-জানালার কাজ শেষ হলে ভেতরে কোনো আসবাব দেখা যায়নি।

পাশের বাড়িতে বসবাস করেন শিলাস্তির দাদা (বাবার চাচা) সেলিম মিয়া। শিলাস্তির ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দুই বোনের মধ্যে শিলাস্তি বড়। তাঁর জন্ম ঢাকায়। তাঁরা রাজধানীর উত্তরা এলাকায় বসবাস করেন। তবে উত্তরার কোন সেক্টরে থাকেন, জানেন না। বছরে দু-একবার গ্রামের বাড়িতে আসেন। কিন্তু দু-এক দিনের বেশি থাকেন না। তাঁর নাতি শিলাস্তি হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকলে তাঁর সর্বোচ্চ শাস্তি চেয়েছেন তিনি।

ঝিনাইদহ-৪ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য ১২ মে কলকাতায় গিয়ে গোপাল বিশ্বাস নামে তাঁর এক বন্ধুর বাসায় ওঠেন। পরদিন দুপুরে ওই বাসা থেকে বের হওয়ার পর থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন। ঢাকা ও কলকাতার পুলিশ বলছে, ১৩ মে বেলা ৩টা ১০ মিনিটে কলকাতার নিউ টাউনের অভিজাত আবাসিক এলাকার সঞ্জিভা গার্ডেনসের ফ্ল্যাটে প্রবেশের পর সেখান থেকে আর বের হতে দেখা যায়নি আনোয়ারুলকে। সেই রাতেই তাঁকে হত্যা করা হয়।

ফ্ল্যাটটির বাইরে থেকে ধরা পড়া সিসিটিভি ফুটেজে পরদিন সকাল ১০টার দিকে বড় একটি ট্রলি ও প্লাস্টিক ব্যাগ হাতে দুজনকে বের হতে দেখা যায়। তাঁদের একজন পুলিশের কাছে সৈয়দ আমানুল্লাহ পরিচয় দেওয়া চরমপন্থী শিমুল ভূঁইয়া ও অন্যজন শিলাস্তি রহমান। তদন্তসংশ্লিষ্ট পুলিশের ধারণা, এসব ট্রলি ও প্লাস্টিক ব্যাগেই আনোয়ারুল আজীমের খণ্ডিত মরদেহ সরানো হয়ে থাকতে পারে।

এ ঘটনায় পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের তথ্যের ভিত্তিতে শিলাস্তি রহমানসহ তিনজনকে আটক করে পুলিশ। আনোয়ারুলকে অপহরণের অভিযোগে  শেরেবাংলা নগর থানায় তাঁর মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌসের করা মামলায় তাঁদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়। ওই মামলায় তিনজনকে আট দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দিয়েছেন আদালত।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.