
ইসরায়েলের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে দেশে ফিরেছেন আলোকচিত্রী শহিদুল আলম। আজ শনিবার ভোর পৌনে পাঁচটার দিকে শহিদুল আলম রাজধানীর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান।
দেশে ফিরে শহিদুল আলম বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসা আমাকে ফিরে আসার সুযোগ করে দিয়েছে। মনে রাখতে হবে যে গাজার মানুষ এখনো মুক্ত হয়নি। গাজার মানুষ এখনো আক্রান্ত হচ্ছে, তাদের ওপর এখনো নির্যাতন চলছে। আমাদের কাজ কিন্তু শেষ হয়নি।’
দৃকের ফেসবুক পেজে শহিদুল আলমের এই বক্তব্য পোস্ট করা হয়েছে। মুক্ত হয়ে দেশে ফিরে আসতে সহযোগিতার জন্য তিনি বাংলাদেশ ও তুরস্কের সরকারকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, ‘আমাদের মতো আরও হাজার ফ্লোটিলা যাওয়া দরকার, যত দিন না ফিলিস্তিন স্বাধীন হয়।’
ফিলিস্তিন মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত সংগ্রাম চলবে বলে জানান শহিদুল আলম।
শহিদুল আলমকে বরণ করতে বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন তাঁর স্ত্রী ও মানবাধিকারকর্মী রেহনুমা আহমেদ, জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক তানজিম ইবনে ওয়াহাব, আলোকচিত্রী ও গবেষক মুনেম ওয়াসিফসহ অনেকে।
শহিদুল আলমের দেশে ফেরার ছবি আজ শনিবার সকাল সাতটার দিকে স্বাধীন মিডিয়া প্রতিষ্ঠান দৃকের ফেসবুক পেজে পোস্ট করা হয়। দৃকের ইনোভেশন ম্যানেজার রাহাত করিমও শহিদুল আলমের দেশে ফেরার বিষয়টি জানান।
পাঠশালা সাউথ এশিয়ান মিডিয়া ইনস্টিটিউটের ফেসবুক পেজেও শহিদুল আলমের দেশে ফেরার ছবি প্রকাশ করা হয়েছে।

গতকাল শুক্রবার ইসরায়েল থেকে মুক্তির পর টার্কিশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে শহিদুল আলম তুরস্কের ইস্তাম্বুলে পৌঁছান। শহিদুল আলমকে গতকাল ইস্তাম্বুল বিমানবন্দরে স্বাগত জানান বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল মো. মিজানুর রহমান।আলোকচিত্রী শহিদুল আলম স্বাধীন মিডিয়া প্রতিষ্ঠান দৃকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। নাগরিক অধিকার নিয়েও সোচ্চার তিনি। গাজা অভিমুখী একটি নৌবহরে অংশ নিয়ে গত বুধবার ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে আটক হন তিনি।
ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের নৃশংসতা বন্ধ এবং গাজায় ইসরায়েলি নৌ অবরোধ ভাঙার প্রত্যয় নিয়ে ‘ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন’ নামের একটি বৈশ্বিক প্ল্যাটফর্ম গাজা অভিমুখে ওই নৌযাত্রা শুরু করেছিল। ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধের দাবিতে আত্মপ্রকাশ করা আরেক উদ্যোগ ‘থাউজেন্ড ম্যাডলিনস টু গাজা’র আটটি নৌযানও এ যাত্রায় অংশ নিয়েছিল। মোট ৯টি নৌযানের এই বহরে বিভিন্ন দেশের রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক, চিকিৎসক ও অধিকারকর্মীরা যোগ দিয়েছিলেন। সেই দলে ছিলেন শহিদুল আলম।
বুধবার ওই নৌবহরে আক্রমণ করে সব অধিকারকর্মী ও নাবিককে ধরে নিয়ে যায় ইসরায়েলি বাহিনী।
পরে শহিদুল আলমসহ আটক অনেককে ইসরায়েলের কেৎজিয়েত কারাগারে নেওয়া হয়। শহিদুল আলমের মুক্তি নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকার জর্ডান, মিসর ও তুরস্কের মাধ্যমে কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে আসছিল।
শহিদুল আলমের মুক্তি ও ইসরায়েল থেকে তাঁর প্রত্যাবর্তনে সহযোগিতা করার জন্য তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।