জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক কার্যালয়ের (ওএইচসিএইচআর) প্রতিবেদনে র্যাব বিলুপ্তি, ডিজিএফআইকে সামরিক গোয়েন্দা তৎপরতার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখাসহ যেসব সুপারিশ করা হয়েছে, সেসব বাস্তবায়নের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবাই বসে আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান তিনি। অনুষ্ঠানে এসবি ইমিগ্রেশন কর্তৃক বিদেশি নাগরিকদের জন্য অন অ্যারাইভাল বা ট্রানজিট ভিসা আবেদনে অনলাইন অ্যাপ উদ্বোধন ও পাসপোর্ট আবেদনকারীদের অভিযোগ জানতে জরুরি সেবা কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়।
অনুষ্ঠান শেষে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে প্রশ্ন করা হয়, জাতিসংঘ র্যাব বিলুপ্তির প্রস্তাব দিয়েছে। বিজিবিকে সীমান্ত রক্ষার মধ্যে থাকা, ডিজিএফআইকে কেবল সামরিক গোয়েন্দা তৎপরতার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা ও আনসারের ওপর থেকে সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রণ না রাখার বিষয় প্রস্তাবনাও দিয়েছে সংস্থাটি। এ বিষয়ে আপনাদের অবস্থান কী?
জবাবে মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, একটা প্রস্তাব তারা দিয়েছে, আমরা সবাই বসবো। বসার পর আমাদের যা সিদ্ধান্ত, সেটা আমরা জানাবো। তাদের এই তদন্তের বিষয়ে আমরা তো সবাই স্বাগত জানিয়েছি। তারা একটা ভালো কাজ করেছে। আমরা বসে একটা সিদ্ধান্ত নেবো।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঘিরে গত বছরের ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়ের অনুসন্ধানী দল। বুধবার জেনেভায় এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবেদনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ফলকার টুর্ক ও অন্যরা।
এদিকে পাসপোর্ট পাওয়া যেন সহজ হয়, সেজন্য পুলিশ ভেরিফিকেশন তুলে দেওয়ার চিন্তাভাবনা হচ্ছে বলেও জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
তিনি বলেন, পাসপোর্ট যাতে সহজে পাওয়া যায়, সেজন্য পুলিশ ভেরিফিকেশন তুলে দেওয়ার চিন্তা-ভাবনা হচ্ছে। ভেরিফিকেশন থাকলেও যাতে আরও সহজে পাসপোর্ট পাওয়া যায়, সেই চেষ্টা করছি। তবে, ভেরিফিকেশন বাদ দেওয়ার চেষ্টাই থাকবে।
এ সময় তিনি বিদেশি নাগরিকদের জন্য অন-অ্যারাইভাল ভিসা প্রক্রিয়াও সহজ করার বিষয়ে কথা বলেন তিনি। জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, কিছু কিছু দেশ আছে যারা অন-অ্যারাইভাল ভিসা পায়। কিন্তু এই ভিসা পেতে কারো ৪৫ মিনিট বা ১ ঘণ্টা সময় লেগে যায়। আমরা নতুন যে সিস্টেম করেছি সেটাতে সেবাগ্রহীতা মাত্র ১০ মিনিটের মধ্যে অন-অ্যারাইভাল ভিসাটা পেয়ে যাবেন।
তিনি বলেন, এই ভিসা পেতে তারা নিজেরাই আমাদের অনলাইনে আবেদন করে যাবতীয় তথ্য দিয়ে রাখবেন। পরে একটি কোড পাবেন তারা। এই কোডটি নিয়ে এয়ারপোর্টে দেখালে ডলারে পেমেন্ট করলেই তিনি ৫ থেকে ১০ মিনিটের ভিসা পেয়ে যাবেন। এই সিস্টেমই আজ চালু হলো। এই ভিসার মেয়াদ হবে ১ মাস।
উপদেষ্টা বলেন, সোনালী ব্যাংকে টাকা জমা দিতে যে সময়টুকু লাগবে শুধু সেই সময়টাই ব্যয় হবে। ভিসার যে পেমেন্ট সেটা কার্ড এবং ক্যাশে পেমেন্ট করা যাবে।