রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গোলাগুলি, দুই শিশু গুলিবিদ্ধ

0
110
রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবির

কক্সবাজারের উখিয়ায় দুই রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী গ্রুপের মধ্যে গোলাগুলি হয়েছে। এতে দুই রোহিঙ্গা শিশু গুলিবিদ্ধ হয়েছে। বুধবার দুপুরে ১টায় উখিয়ার বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে (ক্যাম্প-৮ ডব্লিউ) এ ঘটনা ঘটে।

গুলিবিদ্ধ শিশুরা হলো- ক্যাম্প এফ ব্লকের ৫৮ নম্বর শেডের বাসিন্দা ওবায়দুল হকের মেয়ে উম্মে হাফসা (১১) ও একই শেডের আবদুল খালেকের ছেলে আবুল ফয়েজ (৮)।

রোহিঙ্গারা জানান, ক্যাম্পের নিয়ন্ত্রণ ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান স্যালভেশন আর্মি (আরসা) ও আরাকান রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশনের (আরএসও) সদস্যদের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও রোহিঙ্গা নেতারা জানান, ক্যাম্পে মাদক চোরাচালান ও অস্ত্র বেচাকেনা নিয়ে আরসার সঙ্গে আরএসওর সদস্যদের মধ্যে বেশ কিছুদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এর জেরে আরসা ও আরএসও সন্ত্রাসীদের মধ্যে থেমে থেমে গোলাগুলি ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় সাধারণ রোহিঙ্গারা আতঙ্কিত হয়ে ছোটাছুটি করতে থাকেন। একপর্যায়ে দুই রোহিঙ্গা শিশু গুলিবিদ্ধ হয়। পরে স্থানীয় রোহিঙ্গারা আহত দুই শিশুকে উদ্ধার করে প্রথমে ক্যাম্প-৮ ডব্লিউয়ের এমএসএফ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে দুই শিশুকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ ঘটনার পর ক্যাম্পে উত্তেজনা বিরাজ করছে। আতঙ্কে সাধারণ রোহিঙ্গারা ঘর থেকে বের হচ্ছেন না।

উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলী বলেন, গুলিবিদ্ধ দুই রোহিঙ্গা শিশুকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। উন্মে হাফসার কোমরের ওপর ও আবুল ফয়েজের ডান পায়ে গুলি লেগেছে।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ১৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) অধিনায়ক ও অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক (অ্যাডিশনাল ডিআইজি) ছৈয়দ হারুনুর রশিদ বলেন, ক্যাম্পে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের সশস্ত্র দুটি গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে দুই রোহিঙ্গা শিশু গুলিবিদ্ধ হয়েছে। সন্ত্রাসীদের ধরতে ক্যাম্পে সাঁড়াশি অভিযান চলছে। ক্যাম্পের সার্বিক পরিস্থিতি বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে আছে।

এর আগে মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে কুতুপালং ক্যাম্প-১ পশ্চিম ই-ব্লক থেকে মো. ইলিয়াছ (২৮) নামে এক রোহিঙ্গা যুবকের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত ইলিয়াছ ই-ব্লকের ৪ নম্বর শেডের বাসিন্দা মামুন রশিদের ছেলে। পুলিশের ধারণা, শ্বাসরোধ করে ইলিয়াছকে হত্যা করা হয়েছে। তার গলায় আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।

গত ১৬ ফেব্রুয়ারি উখিয়ায় বালুখালী ক্যাম্প-৮ পশ্চিম বি-৫৭ ব্লক এলাকায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন নুর কায়াছ (২৬) নামে এক রোহিঙ্গা গৃহবধূ। একই সময় উখিয়ার ময়নারঘোনা ক্যাম্প-১২ তে সন্ত্রাসীদের গুলিতে গুরুতর আহত হন ক্যাম্পের হেড মাঝি রোহিঙ্গা আবদুর রহিম (৩৮)। নিহত নুর কায়াছ বালুখালী ক্যাম্প বি-৫৭ ব্লকের বাসিন্দা নাজিম উদ্দিনের স্ত্রী। আর আবদুর রহিম ময়নারঘোনা ক্যাম্পের এইচ-১ ব্লকের করিম উল্লাহর ছেলে। তিনি ওই ক্যাম্পের জি-১ ব্লকের প্রধান মাঝি।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.